ইসরায়েলি পার্লামেন্টে পশ্চিম তীর দখলের বিল অনুমোদন

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০২৫, ০৮:১৯ এএম

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার বিতর্কিত একটি বিল প্রথম ধাপে অনুমোদন পেয়েছে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে। বিলটি পূর্ণাঙ্গভাবে পাস হলে ওই অঞ্চলে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব কার্যকর হবে—যা কার্যত ফিলিস্তিনি ভূমি সংযুক্তির সমান বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ভোটে ১২০ সদস্যের নেসেটে ২৫ জন বিলের পক্ষে এবং ২৪ জন বিপক্ষে ভোট দেন। এটি কার্যকর হতে আরও তিন দফা ভোটে অনুমোদন লাগবে।

বিলটির উদ্দেশ্য হিসেবে নেসেটের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “জুদিয়া ও সামারিয়া (অধিকৃত পশ্চিম তীর) অঞ্চলে ইসরায়েল রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা।” এখন এটি সংসদের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা কমিটিতে আলোচনার জন্য পাঠানো হয়েছে।

তবে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু নিজ দল লিকুদ পার্টিসহ বিলটির বিরোধিতা করেছেন। তার দলের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “এই প্রস্তাব আসলে বিরোধীদের রাজনৈতিক উসকানি। এটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।”

লিকুদ আরও জানায়, “বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমেই সার্বভৌমত্ব অর্জন করা যায়, আইন পাস করে নয়।”

বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিম তীর সংযুক্তির এই পদক্ষেপ কার্যকর হলে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনা প্রায় শেষ হয়ে যাবে।

বিল পাসের সময়ই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলকে পশ্চিম তীর সংযুক্ত না করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতি বজায় রাখতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ইসরায়েল সফরে রয়েছেন।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হামাস, কাতার, সৌদি আরব ও জর্ডান এই ভোটের কঠোর নিন্দা জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা একক ভৌগোলিক অঞ্চল। এই অঞ্চলের ওপর ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌম অধিকার নেই।”

হামাস বলেছে, “এই বিল দখলদার ইসরায়েলের উপনিবেশবাদী চেহারা স্পষ্ট করেছে।”
কাতার একে “ফিলিস্তিনিদের ঐতিহাসিক অধিকারের লঙ্ঘন” বলে অভিহিত করেছে।
সৌদি আরব জানিয়েছে, “ইসরায়েলের সব ধরনের বসতি স্থাপন ও সম্প্রসারণমূলক কর্মকাণ্ড রিয়াদ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।”
জর্ডান বলেছে, “এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক আইন ও দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পথে বড় বাধা।”

বর্তমানে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে প্রায় সাত লাখ ইসরায়েলি অবৈধ বসতিতে বসবাস করছে—যা আন্তর্জাতিক আইনে স্পষ্টভাবে অবৈধ ঘোষিত।

এম