ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চায় না ভারত। তবে একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূসের উচিত নিজের বক্তব্য ও শব্দচয়ন নিয়ে ‘সতর্ক থাকা’।
শুক্রবার ভারতের বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন রাজনাথ সিং। সাক্ষাৎকারে ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েন প্রসঙ্গ বিশেষভাবে উঠে আসে।
রাজনাথ বলেন, “আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তেজনা চাই না। তবে অধ্যাপক ইউনূসের উচিত হবে নিজের মন্তব্যের শব্দচয়ন নিয়ে সাবধান থাকা।”
তিনি আরও বলেন, “ভারত যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য সব সময় প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা।”
২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের পর গঠিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে শুরু থেকেই সম্পর্ক কিছুটা শীতল। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা সেই দূরত্ব আরও বাড়িয়েছে বলে কূটনৈতিক মহলে ধারণা।
সম্প্রতি ঢাকায় পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফস অব স্টাফস কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা এবং তুরস্কের পার্লামেন্টের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. ইউনূস। উভয় দেশ–ই ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কূটনৈতিকভাবে তিক্ত সম্পর্কে রয়েছে।
তুর্কি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন এমপি মেহমেত আকিফ ইলমাজ। বৈঠক শেষে ড. ইউনূস অতিথিদের উপহার দেন ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি বই, যা জুলাই–আগস্ট আন্দোলনের সময়কার নানা ছবি ও গ্রাফিতির সংকলন।
তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ–১৮ অভিযোগ করেছে, ওই সংকলনে ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ নামে একটি মানচিত্র প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এছাড়া, বইটিতে আসাম দখলের পর সম্ভাব্য প্রশাসনিক পরিকল্পনা সম্পর্কেও উল্লেখ রয়েছে বলে দাবি করেছে নিউজ–১৮।
রাজনাথ সিংয়ের মন্তব্যকে ভারতীয় পর্যবেক্ষকরা দেখছেন— দিল্লির তরফ থেকে ঢাকাকে সতর্কবার্তা হিসেবেই।
সূত্র: ফার্স্টপোস্ট, নিউজ–১৮
এম