২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রায় পাঁচ লাখ সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে মস্কো। এই বিপুল ক্ষতি নিকট ভবিষ্যতে পূরণ করা কিয়েভের পক্ষে প্রায় অসম্ভব বলেও মন্তব্য করেছে রাশিয়া।
রাশিয়ার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলৌসোভ বুধবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপর্যায়ের বোর্ড সভায় এসব তথ্য তুলে ধরেন। রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম রাশিয়ান টেলিভিশন (আরটি) জানায়, ওই বৈঠকে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও উপস্থিত ছিলেন।
বেলৌসোভ বলেন, “২০২৫ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রুশ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় পাঁচ লাখ ইউক্রেনীয় সেনা প্রাণ হারিয়েছে। এত বড় ক্ষতির কারণে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী পুনর্গঠন করা কিয়েভের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি আরও দাবি করেন, ব্যাপক প্রাণহানির ফলে ইউক্রেনের বেসামরিক জনগণের মধ্যে বাধ্যতামূলক সামরিক যোগদানে অনীহা বাড়ছে।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, চলতি বছর ইউক্রেন এক লাখ তিন হাজারের বেশি সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র হারিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫ হাজার ৫০০টি ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান রয়েছে, যেগুলোর বড় অংশ পশ্চিমা দেশগুলোর সহায়তায় ইউক্রেন পেয়েছিল।
উল্লেখ্য, ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং ন্যাটোতে যোগদানের প্রচেষ্টাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিনের উত্তেজনার পর ২০২২ সালে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরুর পরপরই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একটি ডিক্রি জারি করেন, যার মাধ্যমে ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী পুরুষদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
যুদ্ধের শুরুতে ইউক্রেনে সেনাবাহিনীতে যোগদানের ন্যূনতম বয়স ছিল ২৭ বছর। পরে তা কমিয়ে ২৫ বছরে নামানো হয়। তবে গত এক বছরে সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অঞ্চলে সাধারণ জনগণ ও সেনা সমাবেশ কর্মকর্তাদের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই দাবির বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: আরটি