হিজাবী তরুণীকে নিয়ে কেন এত শোরগোল?

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৬, ২০১৭, ০১:৫২ পিএম

ঢাকা: ছবিতে দেখা যাচ্ছে হিজাব পরা একজন তরুণী ফোনে কথা বলতে বলতে হেঁটে যাচ্ছেন। চোখে-মুখে তার আতঙ্কের ছাপ। পাশে কয়েকজন লোক একজন অহত ব্যক্তিকে ধরা-ধরি করে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করছেন। এই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে পুরো মুসলিম গোষ্টিকেই উদ্ধার করলো ইউরোপের খ্রিষ্টানরা।

হিজাব পরা এই মুসলিম তরুণীর ছবিকে ইসলাম বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়ার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে বলে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

একজনতো সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবিটি এবং ব্রিটেনের একজন এমপি টোবিয়াস এলউড ছুরিকাঘাতে আহত পুলিশ অফিসারকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন সেই ছবি পাশাপাশি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘মুসলিম এবং খৃষ্টানদের মধ্যে মূল পার্থক্য।’

ছবিটি তুলেছিলেন ফ্রী ল্যান্স ফটোগ্রাফার জেমি লরিম্যান। হামলাকারি খালিদ মাসুদ ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজের ওপর দিয়ে পথচারীদের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দিয়ে যাদের আহত করেছেন, সেরকম একজন ফুটপাতেপড়ে আছেন। আহত মানুষটিকে ঘিরে ধরে তার সেবা করছেন অন্য পথচারীরা।

গত কযেকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবিটিকে ব্যবহার করে তীব্র ইসলাম বিদ্বেষী প্রচারণা চালানো হয়েছে।

একটি টুইটার একাউন্ট থেকে ছবিটি পোষ্ট করে বলা হয়েছে, ‘দেখুন, হিজাব পরা মেয়েটি ছাড়া আর সবাই কিভাবে সাহায্য করছে। পশ্চিমা জীবন ধারার সঙ্গে শরিয়া সংস্কৃতি যায় না।’

কিন্তু আসলেই কি তাই? ছবির এই তরুণীটি সত্যি সত্যি তাঁর চারপাশে যা ঘটছিল সে সম্পর্কে একেবারেই ভাবলেশহীন?

জেমি লরিম্যান লন্ডনের গার্ডিয়ান পত্রিকা সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, আর সবার মতো এই তরুণীও ছিল লন্ডন হামলার পর খুবই বিচলিত এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। একই সময়ে তার ক্লিক করা আরও কিছু ছবিতে সেটা বেশ স্পষ্ট।

‘আমার মনে হয়েছে ঘটনার আঘাতে মেয়েটি খুবই বিচলিত এবং কিভাবে সেখান থেকে দ্রুত বের হয়ে আসা যায় সেটাই ভাবছিল সে। সেসময় পুলিশও আমাদেরকে সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য বলছিল বার বার।’

এরপর মুখ খুলেছেন ওই তরুণী, মুসলিম বিদ্বেষী প্রচারণার বিরুদ্ধে কাজ করে এমন একটি সংগঠন ‘টেল মামা’র মাধ্যমে তিনি একটি বিবৃতি দিয়েছেন।

এই তরুণী বলেছেন, একটি ছবিকে ব্যবহার করে যেভাবে তার সম্পর্কে নানা মন্তব্য করা হয়েছে, তাতে তিনি খুবই আঘাত পেয়েছেন।

তিনি জানিয়েছেন, ঐ হামলার পর তিনি নিজেও ছিলেন বিচলিত। তিনি অন্যান্য প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি ঘটনা বোঝার চেষ্টা করেছেন তখন। জানার চেষ্টা করেছেন তিনি কিভাবে অন্যদের সাহায্য করতে পারেন। এরপর তার পরিবারকে ফোন করে কথা বলেছেন। এমনকি একজন মহিলাকে ওয়াটারলু স্টেশনে যেতে সাহায্য করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার এই ছবি নিয়ে আজে বাজে মন্তব্য করেছেন, তারা আসলে আমার পোশাকটাই শুধু দেখেছেন। তারা ঘৃণা আর বিদেশীভীতির ওপর নির্ভর করে তাদের উপসংহার টেনেছেন।’ সূত্র: বিবিসি ও ডেইলি মেইল।

সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই