বিজেপি সভাপতিকে মাফ চাইতে হবে: মমতা

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ১০, ২০১৭, ১০:২৪ পিএম

ঢাকা: মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে বেফাঁস মন্তব্য করে ভারতের রাজনীতিতে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। ফলে শুধু কংগ্রেসই নয়, বিরোধীরাও সমালোচনায় মুখর হয়েছেন তার এই মন্তব্যে। অপরদিকে এমন মন্তব্যর জন্য অমিত শাহকে মাফ চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

কংগ্রেসের সমালোচনা করতে গিয়ে শনিবার (১০ জুন) ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুরে এক অনুষ্ঠানে মাহাত্মা গান্ধীকে ‘চতুর বানিয়া’ বলে অভিহিত করেছেন অমিত শাহ। এই শব্দাটির অর্থ ‘ধূর্ত ব্যাপারী’।

মাহাত্মা গান্ধীকে ঠিক কী কারণে চতুর বানিয়া বলেছেন তার কোনো ব্যাখ্যা অমিত শাহ দেননি। কিন্তু তার এই মন্তব্য ভারতের রাজনৈতিক মহলে তীব্র সমালোচনায় পরিণত হয়েছে। দেশবাসীর সঙ্গে রাজনৈতিক নেতারাও আশা করেছিলেন মাহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে করা এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ আসবে কংগ্রেস ও গান্ধী পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু তা হয়নি।

সবাইকে অবাক করে দিয়ে কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধী মাহাত্মা গান্ধীর ছবি দিয়ে টুইট করেন। মাহাত্মা গান্ধীর ছবিতে তারই লেখা বাণী, ‘যখন হতাশ হই, তখন দেখি, ইতিহাসে সব সময় ভালোবাসা ও সত্যেরই জয় হয়েছে। মনে রেখো, অত্যাচারী ও খুনিরা সব সময়েই থাকে। একটা সময় মনে হয় তারা অজেয়। কিন্তু শেষে তাদের পতন ঘটে’ লিখেদেন।

অবশ্য অমিত শাহ চতুর বলেই ক্ষ্যান্ত হননি। তিনি বলেছেন, স্বাধীনতা লাভের পর কংগ্রেস দল তুলে দেয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা গান্ধীজি বারবার বলতেন। অমিত শাহর কথায়, এখন অবশ্য কংগ্রেসের কেউ কেউ সেই অসমাপ্ত কাজ শেষ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘কংগ্রেসমুক্ত ভারত’ গড়ার কথা বারবার বলে আসছেন। এই কাজে অমিত শাহ তার সঙ্গী। পরবর্তী ভোটের জন্য দলকে তৈরি করতে তিনি গোটা দেশ ঘুরতে শুরু করেছেন। ছত্তিশগড় সফর তারই অঙ্গ। এই রাজ্যে শাসক বিজেপির প্রধান চ্যালেঞ্জার কংগ্রেস। সেখানেই এই বিতর্ক।

দিল্লিতে আজ তড়িঘড়ি সংবাদ সম্মেলন ডেকে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, স্বাধীনতাসংগ্রামে যে দল সাহায্য করেনি, তারা মহান স্বাধীনতাসংগ্রামীদের অপমান করতে নেমেছে। স্বাধীনতার আগে দেশভাগের জন্য হিন্দু মহাসভা ও সংঘ পরিবারকে ব্রিটিশরা ব্যবহার করেছিল। স্বাধীনতার এত বছর পর এখন তারা গুটি কয়েক বড় ব্যবসায়ীর হাতে ব্যবহৃত হচ্ছে। অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে বলেছেন, মহাপুরুষদের সম্পর্কে প্রকাশ্যে জনসভায় কথা বলতে গেলে সবার উচিত ভাষার প্রতি নজর রাখা। শ্রদ্ধাবনত হওয়া। তাদের বিষয়ে কথা বলতে হলে, অবশ্যেই শ্রদ্ধার জায়গাটা ঠিক রাখতে হবে।

এখানেই শেষ করেননি মমতা, বক্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাইতে বলেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে। ক্ষমতায় থাকলেই ইচ্ছে মতো কারো বিরুদ্ধে কথা বিষেদাগার করা যায়না বলেও কঠোর সমালোচনা করেন মমতা। সাম্প্রতি ভারতের কয়েক রাজ্যে কৃষক আন্দোলনের কারণে এমনিতেই বিজেপি সরকার প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে। এবার দেশটির জাতির জনক নিয়ে কথা বলায় অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়েছে ক্ষমতাসীন দলটি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা