দার্জিলিংয়ের গোর্খাদের সহযোগিতা করছে চীন!

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০১৭, ০৬:৫৪ পিএম

ঢাকা: ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত দার্জিলিং পুড়ছে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে। গোর্খা জনমুক্তির মোর্চার ব্যনারে নিজেদের জন্য স্বতন্ত্র রাজ্য ঘোষণার দাবিতে চলছে এ আন্দোলন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত হরতাল চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা। হরতাল দমনে কেন্দ্র থেকে আনা হয়েছে সৈন্য। তারপরেও বন্ধ হয়নি আন্দোলন। এখন গোর্খাদের আন্দোলনের পেছনে চীনের মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ভারতের একটি পক্ষের কাছ থেকে।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জুন থেকে স্বতন্ত্র রাজ্যের দাবিতে হরতাল করছে গোর্খারা। এজন্য পাহাড়ের সকল স্কুল বন্ধ রয়েছে এখনো। বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীরা নিজের দেশে ফিরে গিয়েছে। অপরদিকে ভারতের সিকিমের অপর প্রান্তে ভুটান ও চীনের সীমান্ত পয়েন্ট ডোকালামে সড়ক নির্মাণ শুরু করেছিল চীন। কিন্তু ভারতের সৈন্যরা তা বন্ধ করে দিয়েছে। সৈন্য সরিয়ে নিতে ভারতকে বারবার বলে আসছে চীন। কিন্তু সৈন্য না সরানোতে চীন ও ভারতের সৈন্য মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। গত প্রায় একমাস ধরে এই সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। চলছে উত্তেজনা।

পশ্চিমবঙ্গের দর্জিলিং গত জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে অশান্ত রয়েছে। এর পেছেনে চীনের হাত রয়েছে বলে কয়েকটি দল অভিযোগ উঠিয়েছে সম্প্রতি। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের তৃণমূল কংগ্রেস(টিএমিসি) এর সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জি  চীনের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, পাহাড়ের অশান্তির পেছনে বিদেশি শক্তির ইন্ধন রয়েছে। আমাদের কাছে তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু পার্থের এ বক্তব্যকে অস্বীকার করেছে গোর্খারা।

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতারা বলছেন, আমাদের আন্দোলনের পেছনে বিদেশি কোনো শক্তি নেই। আলাদা রাজ্যের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছি আমরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্রের বরাত দিয়ে লিখেছে, পাহাড় বেষ্টিত দার্জিলিং ভূ-প্রাকৃতিক কৌশলগত কারণে গুরুত্বপূর্ণ। ভুটান, নেপাল, বাংলাদেশ, দার্জিলিং ও সিকিমের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে। দার্জিলিংই ভারতের উত্তর অংশের সঙ্গে বাকি অংশকে সংযুক্ত করে রেখেছে। এজন্য এ অঞ্চলটি ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিদেশি যেকোনো তৎপরতায় কেন্দ্র চুপ থাকবে না।

ভারত, চীন ও ভূটানের সীমান্ত চেক পয়েন্ট হলো ভারতের সিকিমের পাশের একমাত্র স্থল সীমান্ত পথ নাথুলা পাস। হিমালয়ের ১৪ হাজার চারশ ২৫ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এ পথটি। চীনের তিব্বত সীমান্তের সঙ্গে পথটিতে ভারতের সিকিম রাজ্যের সীমান্ত মিলে গেছে। নতুন উত্তেজনার মুখে এই পথ বন্ধ করে দিয়েছে চীন।

চীনের সঙ্গে ভারতের ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সীমান্ত রয়েছে। যার মধ্যে জম্মু ও কাশ্মির রয়েছে। শুধু সিকিম অংশেই রয়েছে ২২০ কিলোমিটার। চীন-ভারত যুদ্ধের সময় ১৯৬২ সালে ভারতের সঙ্গে চীনের এই বাণিজ্যপথটি বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০০৬ সালের ৮ জুলাই দীর্ঘ ৪৪ বছর পর এই সীমান্তপথটি চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে খুলে দেয় ভারত।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা