১৫ তে মা, ১৮ তে বিয়ে!

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০১৭, ০৩:৪৩ পিএম

ঢাকা: ভারতের রাজস্থানের আনু বাঘেল যখন মা হয়েছিলেন, তখন তার বয়স মোটে ১৫ বছর। সন্তানের বয়স যখন দুই, তখন তিনি অবশেষে বিয়ের অনুমতি পেলেন সন্তানের বাবা ও তার প্রেমিক শচীন কুমারকে!

আনু আর শচীনের গল্পটা হতে পারতো আরও করুণ। কিশোর বয়সে নিচুজাতের শচীনের প্রেমে পড়া আনুর পরিবার উচ্চ বর্ণের। একবিংশ শতাব্দীতেও বর্ণপ্রথায় বিশ্বাসী ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মতো রাজস্থানেও প্রচলিত আছে অনার কিলিং-এর প্রথা। অর্থাৎ, নীচু বর্ণের ছেলের সঙ্গে বিয়ে করে মেয়ে বংশের সম্মানহানী করার আগে তাকে মেরে ফেলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করবে না তার পরিবার! এই অনার কিলিং-এর বলি হতে পারতো আনু-শচীনের প্রেমও।

কিন্তু তার আগেই ২১ বছর বয়সী প্রেমিকের হাত ধরে পারিয়ে যান আনু। বেশ কিছুদিন একসঙ্গে থাকেনও তারা। কিন্তু বিয়ে করতে পারেননি আনুর বয়স ১৫ হওয়ায়।

আনুর পরিবারের করা মামলায় ২০১৫ সালের মে মাসে ধরাও পড়ে এই জুটি। ধর্ষণের মিথ্যা মামলায় শচীনকে যেতে হয় জেলে।

মেয়েকে ফিরে পেলেও যখন সে অন্তঃসত্ত্বা বলে বুঝতে পারে তার পরিবার, তখন তাকে বের করে দেওয়া ঘর থেকে। আনুর জায়গা হয় সরকারি এক শিশু আশ্রয়কেন্দ্রে।

সেখানেই এক কন্যা সন্তানের মা হন আনু। সেই মেয়ের বয়স এখন দুই হলেও, বাবাকে সে দেখেছে কমই। কারণ, এরইমধ্যে কারাগারে ১৮ মাস কাটাতে হয়েছে শচীনকে।

চলতি বছরে ধর্ষণের মিথ্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাস পান শচীন। ওদিকে ১৬ অক্টোবর ১৮ তে পা দেন আনু। ১৮ বছর বয়স হওয়ায় এখন কী করবেন- এই কথা জানতে চাইলে শিশু আশ্রয়কেন্দ্রের পরিবারকে আনু জানান, তিনি তার প্রেমিককে বিয়ে করতে চান।

শচীন ও তার পরিবারও সানন্দে রাজি হয় এই প্রস্তাবে। সেই সুবাদেই শিশু আশ্রয়কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে বুধবার সুন্দরভাবেই সম্পন্ন হয়েছে এই জুটির বিয়ে।

প্রতিবছর ভারত ও পাকিস্তানে অনার কিলিং-এর শিকার হয় শত শত প্রেমিক জুটি। বিশেষ করে মেয়েরা এই ধরণের হত্যাকাণ্ডের শিকার হন বেশি। ২০১৫ তেই এভাবে নিহত হয়েছেন ২৫১ জন। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন