ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট

ঐতিহাসিক ভোটে হার থেরেসা মে’র

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০১৯, ০৯:৩০ এএম

যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ হাউস অব পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোট দিলেন দেশটির এমপিরা। মঙ্গলবারের ওই ভোটে  চুক্তির পক্ষে ভোট পড়েছে ২০২টি এবং চুক্তির বিপেক্ষ ভোট পড়ে ৪৩২টি।

শুধু বিরোধী এমপিরাই নন, থেরেসার প্রস্তাবিত চুক্তির বিরুদ্ধে ভোট দিলেন তার নিজের দলেরই শ’খানেক এমপি। এর মাধ্যমে শোচনীয় ভাবে হারতে হল মে’কে।

এই হারের পর ব্রেক্সিট চুক্তির কী হবে? ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য ব্রিটেনের সামনে এখন কয়েকটি পথ খোলা রয়েছে।

এরমধ্যে রয়েছে-চুক্তিহীন ব্রেক্সিট। অর্থাৎ, ইইউ-এর সঙ্গে কোনও সমঝোতা না করেই ইইউ ছেড়ে যাওয়া।

বিরোধীদের সঙ্গে ফের আলোচনা করে নতুন একটি ব্রেক্সিট চুক্তির প্রস্তাব দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমান চুক্তির যে সব অংশ (যেমন আয়ারল্যান্ড সীমান্ত সমস্যা) নিয়ে বিরোধীদের আপত্তি রয়েছে, সেগুলি পাল্টাতে হবে থেরেসাকে।

এমপিরা যদি তাও থেরেসার প্রস্তাবে সম্মত না হন, তা হলে ব্রেক্সিট চুক্তি কী হবে, তা ভোটাভুটি করে ঠিক করতে হবে পার্লামেন্টকেই। ব্রিটিশ রাজনীতির ইতিহাসে যা প্রথম।

এখন যেহেতু পার্লামেন্টের হাওয়া ‘নরম ব্রেক্সিট’-এর পক্ষে, তাই পার্লামেন্টের প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তি থেরেসা-র চুক্তির মতো ‘কঠোর’ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। আর তা হলে ইইউ-এর সঙ্গে ব্রিটেনের সদ্ভাব বজায় থাকার সম্ভাবনাও বেশি।

হাল ছেড়ে দিয়ে থেরেসা মে ইস্তফা দিতে পারেন। তা হলে কনজারভেটিভ দলকে নতুন নেতা নির্বাচন করতে হবে এবং সেই নেতা তখন ঠিক করবেন, কোন ব্রেক্সিট চুক্তি শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করা হবে।

পার্লামেন্টে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলে আরও প্যাঁচে পড়বেন থেরেসা। ভোটে হারলে ১৪ দিনের মধ্যে নতুন সরকার গঠন করতে হবে কনজারভেটিভ দলকে। না পারলে সাধারণ নির্বাচন হবে দেশে।

মুখে বিশেষ কিছু না বললেও ঠিক এটাই চাইছেন বিরোধী লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। ভোটে হারের পরে সেই হিসেব করেই অনাস্থা চেয়ে সওয়াল করেন তিনি।

আলোচনার জন্য সময় চেয়ে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া তিন মাস পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিতে পারে ব্রিটিশ সরকার। এর আগে ইউরোপীয় আদালত বলেই দিয়েছে, ব্রেক্সিট কবে হবে বা আদৌ হবে কি না, তা সম্পূর্ণ ব্রিটেনের সিদ্ধান্ত। ইইউ-এর এ বিষয়ে কিছু বলার এক্তিয়ার নেই।

সরকার যদি শেষ পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্তে না-ই পৌঁছয়, তা হলে ফের গণভোট হবে ব্রিটেনে। সাধারণ মানুষকে আর এক বার জিজ্ঞাসা করা হবে, তারা কি সত্যিই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে যেতে চান?

২০১৬ সালের ২৩ জুন ব্রিটেনে যে গণভোট হয়েছিল, তাতে ৫১.৯ শতাংশ ব্রিটিশ বলেছিলেন, তারা ইইউ ছাড়ার পক্ষে। গত আড়াই বছরের টালবাহানায় তাদের মনোভাব পাল্টেছে কি না, তা বোঝা যাবে আর একবার গণভোট হলেই।

তথ্যসূত্র: বিবিসি ও রয়টার্স

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন