ক্রাইস্টচার্চে হামলায় নিহতদের জাতীয়ভাবে স্মরণ করবে নিউজিল্যান্ড

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০১৯, ১২:৩৯ পিএম

ঢাকা : ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের জাতীয়ভাবে স্মরণ করবে নিউজিল্যান্ড।

রোববার (২৪ মার্চ) দেশটির প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আহডার্ন এ কথা জানিয়েছেন।

জানা যায়, নিউজিল্যান্ডে দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৫০ মুসল্লির মৃত্যুর ঘটনায় শুরু থেকেই মুসলিমদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে দেশটির মানুষ।

প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আহডার্ন এক বিবৃতিতে বলেছেন, সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ক্রাইস্টচার্চের অধিবাসীরা নিউজিল্যান্ডের ও সারা বিশ্বের সব মানুষকে একত্রিত হওয়ার জন্য একটি সুযোগ এই জাতীয় স্মরণসভা।

ব্রেনটনের হামলার বিসয়ে জাসিন্দা বলেছেন, অপ্রত্যাশিত সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পুরো দেশ বেদনা ও ভালোবাসায় ভরে গেছে। এ অবস্থায় স্মরণসভা আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নিউজিল্যান্ডের অধিবাসীরা আরেকবার দেখাতে চান, তারা সহানুভূতিশীল, সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে চান, এখানকার সমাজ বৈচিত্র্যময়। আর আমরা সেই মূল্যবোধকে সুরক্ষিত রাখব। এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে ক্রাইস্টচার্চের সামনে হ্যাগলি পার্কে।

এদিকে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রবিবার বিকালেও সমাবেশ ও পদযাত্রা করেছে নিউজিল্যান্ডের অধিবাসীরা। ক্রাইস্টচার্চ ও অকল্যান্ডের রাস্তায় সন্ত্রাসবাদ ও বর্ণবাদবিরোধী পদযাত্রায় শামিল হন হাজার হাজার মানুষ। অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, ক্রাইস্টচার্চ হামলাকারীর উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়েছে- এমন বার্তা দিতেই তাদের এ পদযাত্রা।

এ সময় তারা মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। তুলে ধরেন সাম্য, মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্বের কথা কৃষ্ণাঙ্গ অধিকার আন্দোলন ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে অবিসংবাদিত দুই নেতা মার্টিন লুথার কিং ও ম্যালকম এক্সের কথাও উল্লেখ করেন বক্তরা।

এদিন যৌথভাবে এ পদযাত্রার আয়োজন করে লাভ অটিয়ারোয়া এবং হেট রেসিজম নামের দুটি সংগঠন। অকল্যান্ডের অটিয়া স্কয়ার থেকে শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে ভিক্টোরিয়া পার্কে এসে জড়ো হন পদযাত্রায় অংশ নেয়া ব্যক্তিরা।পরে তারা দুই মিনিট নীরবতা পালন করেন। নীরবতা পালনের আগে তার নিহত ৫০ জনের সবার নাম উচ্চারণ করেন।

অকল্যান্ড সমাবেশ ও পদযাত্রার প্রধান আয়োজক দানি উইলকিনসন বলেন,ঘৃণা-বিদ্বেষে ক্ষমতার প্রকাশ দেখা যায়। আমরা ঘৃণার শক্তিকে সৎ ও ন্যায়ের পথে ব্যবহার করতে চাই। শান্তি, ভালোবাসা ও পরমত সহিষ্ণুতা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। সেই সঙ্গে বর্ণবাদ ও ভণ্ডামির মতো সব অন্যায় কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে চাই।

উল্লেখ্য,গত ১৫ মার্চ ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ৫ বাংলাদেশিসহ ৫০ জন মুসল্লিকে হত্যা করে শ্বেতাঙ্গ সন্ত্রাসী ব্রেনটন টেরেন্ট। তার এ হামলা ছিল উদ্দেশ্যমূলক। সে মনে করত, মুসলিমরা পশ্চিমা দেশগুলোতে আগ্রাসন চালাচ্ছে। হামলার আগে অনলাইনে ১৬ হাজার ৫০০ শব্দের একটি ইশতেহারে নৃশংস এ হামলার পেছনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন ব্রেনটন টেরেন্ট। সেখানে উঠে আসে মুসলিম বিদ্বেষ, অভিবাসী বিদ্বেষ ও শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার মতো বিষয়গুলো।

সোনালীনিউজ/এমটিআই