সরকারি চাকরি প্রার্থী বাড়ার কারণ কী?

  • নিউজ ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০১৭, ০২:৪৩ পিএম

ঢাকা: কেবল আজকার নয়। বহুদিন ধরে চলে আসছে। জীবন মানে লড়াই, যুদ্ধ। কোথাও কোথাও তা আরো তীব্র। উন্নয়নের সড়কে বাংলাদেশ। বাড়ছে শিক্ষা। অর্থনৈতিক উন্নতি। আর এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রতিযোগিতা। সবচেয়ে বেশি প্রতিযোগিতা চাকরির বাজারে। বছরের পর বছর ধরে লড়াই। হতাশ হয়ে পড়েন অনেক তরুণ। দুই হাজার পদের বিপরীতে দুই-তিন লাখ মেধাবীর লড়াই।

বেসরকারি চাকরির তুলনায় সরকারি চাকরির প্রতি যুবসমাজের আগ্রহ এতটা বাড়ার কারণ কী? গত কয়েকটি বিসিএস পরীক্ষাতেই দেখা যাচ্ছে আবেদনকারীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। সরকারি চাকরির প্রতি আগে থেকেই অনেকের আগ্রহ থাকলেও, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আগ্রহ বেড়েছে কয়েক গুণ।

বিবিসি বাংলা চাকরি প্রার্থী ও দেশের অর্থনীতিবিদেদের বরাত দিয়ে বলেছে, পরিবারের চাহিদা, চাকরির নিরাপত্তা ও ভালো বেতন কাঠামোর কারণেই যুব সমাজ এখন সরকারি চাকরির দিকে ঝুঁকছেন।

গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৩৮ তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য আবেদন করেছে প্রায় ৩ লাখ ৯০ হাজার চাকুরিপ্রার্থী। ৩৭তম বিসিএস এর চাইতে চেয়ে প্রায় দেড় লাখ বেশি।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ মনে করেন, সরকারি চাকরিতে বেতন বাড়ানো একটি বড় কারণ। পাশাপাশি বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কম থাকায় চাকরি তৈরি হচ্ছে না এবং উদ্যোক্তা হবার ঝুঁকিও অনেকে নিচ্ছেন না। ফলে সরকারি চাকরির প্রতি ঝোঁক বেশি।

চাকরি প্রার্থীরাও বলেন সেই কথাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ২০১৫ সালে বেতন কাঠামো পুনর্গঠন করায় এখন সরকারি চাকরির বেতন বেসরকারি চাকরির সমান হয়ে গেছে। এজন্য প্রতিযোগিতাও এখন বেশি।

একজন চাকরি প্রার্থী বলেন, পরিবারের মানসিকতা হলো সরকারি চাকরি করতে হবে, ক্ষমতা থাকতে হবে, বিয়ে করার জন্য এই চাকরির গ্রহণযোগ্যতা বেশি।

এছাড়া ক্যারিয়ারের শুরুতে ভালো বেতনে বেসরকারি চাকরির সুযোগ কম, অন্যদিকে চাকরি না করে নিজ থেকে উদ্যোক্তা হবার ঝুঁকি নিতে চান না অনেকে।

এক প্রার্থী বলেন, অনেকেই মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছে। উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য যে ৪ থেকে ৫ বছরের একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে সেসময়ে আমার পরিবার কতটা সাপোর্ট দিতে পারবে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে অনেকে বেসরকারি চাকরি ছেড়েও সরকারি চাকরিতে যোগ দিচ্ছেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলার সহকারী কমিশনার তানিয়া মুন জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা ছেড়ে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়েছেন বছরখানেক আগে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন চাকরির নিরাপত্তা, অবসরের পর পেনশন ও গ্রাচুইটি সুবিধা এবং সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি বিবেচনা করেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অধ্যাপক আকাশ মনে করেন, বেসরকারি বিনিয়োগ না বাড়লে এই ধারা অব্যাহত থাকবে।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন