অগ্নিঝরা মার্চ

উজ্জীবিত বাঙালি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০১৯, ১২:০৮ পিএম

ঢাকা : মানুষই ইতিহাস সৃষ্টি করে। তবে ইতিহাসও ব্যক্তিত্বের রূপায়ণে ভূমিকা রাখতে পারে। ইতিহাসের কোনো কোনো ক্রান্তিলগ্নে কোনো ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব ইতিহাস সৃষ্টি করেন। আবার কখনো কখনো ঘটনাপ্রবাহ ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের জন্ম দেয়। একাত্তরে বাংলাদেশে কোনটা ঘটেছিল? ব্যক্তি শেখ মুজিব ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন তাঁর ব্যক্তিত্ব দিয়ে, না ইতিহাসের ঘটনাপ্রবাহ শেখ মুজিবের ভাবমূর্তি সৃষ্টি করেছিল?

এ নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ তর্ক হতে পারে। তবে শেখ মুজিব ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হয়েছিলেন ঊনসত্তরের ফেব্রুয়ারি থেকে একাত্তরের মার্চ পর্যন্ত ঘটনাবলির মধ্য দিয়ে। শেখ মুজিবের শত্রুরাও এ সত্যটাকে অস্বীকার করতে পারেন না। শেখ মুজিব পূর্ব বাংলার সমগ্র জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছিলেন ওই দুই বছরে। হয়ে উঠেছিলেন এক অভূতপূর্ব সংগ্রামী প্রেরণার উৎস।

রেসকোর্সে বঙ্গবন্ধুর ওই ভাষণের পর ৭ই মার্চ হয়ে উঠল স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অনন্য অসাধারণ ঐতিহাসিক দিবস, মাইলফলক। যেখান থেকে পিছিয়ে আসা গোটা জাতির পক্ষে আর সম্ভব ছিল না।

সূচিত হলো পাকিস্তান সরকার ও রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি অসহযোগ আন্দোলন, পাকিস্তানকে প্রত্যাখ্যান করার সামগ্রিক মানসিকতা। কার্যত পূর্ব বাংলা তখন বঙ্গবন্ধু তথা জনগণের পছন্দের নেতৃত্বের হাতেই চলে আসে। কিন্তু তার পরও সামরিক শক্তি, রাষ্ট্রযন্ত্র বলে একটি মহাদানবীয় ব্যাপার ছিল। ছিল আন্তর্জাতিক মহাশক্তিধর রাষ্ট্রব্যবস্থার অবস্থান।

৭ই মার্চের ঐতিহাসিক সংগ্রাম ঘোষণার পরদিন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের নামকরণ শুধু ‘ছাত্রলীগ’ ঘোষণা করা হয় এবং স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠনের আহ্বান জানানো হয়। এতে পরে দেশের সব দলের ছাত্রসমাজকে স্বাধীনতা সংগ্রামে একাত্ম করতে সুবিধা হয়।

পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকদের নীলনকশা প্রতিহত করতে সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার দায়িত্ব পায় নতুন এই পরিষদ। সত্যি সত্যিই বাঙালি সেদিন উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিতে আপামর বাঙালি সেদিন যার যার অবস্থান থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই