বিয়ের পরে পরেই যৌনতার অভাবের কারণে অনেক দম্পতির মধ্যেই দেখা দেয় নানাবিধ সমস্যা। আসলে প্রেম করে বিয়ে হোক অথবা দেখা-শোনা করে, বিয়ের পর যৌন জীবন অন্য মাত্রা পায়। বিবাহিত জীবনে যে নিয়মিত যৌনতা আসে তা প্রাক-বিবাহ জীবনে সম্ভব নয়।
সমস্যা সমাধানের উপায়
দম্পতিদের মধ্যে বিয়ের পরে-পরেই ডিভোর্স হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দিনে দিনে বাড়ছে। এই বিবাহবিচ্ছেদের কারণগুলি অনুসন্ধান করতে গেলে কয়েকটি বিশেষ সমস্যাকে চিহ্নিত করা যায়, যেগুলি বিব্রত করে নবদম্পতিদের। এখানে রইল তেমনই ৫টি সমস্যা ও সেগুলি সমাধানের উপায়—
১. যৌনতার অভাব :
বিয়ের পরে পরেই যৌনতার অভাবের কারণে অনেক দম্পতির মধ্যেই দেখা দেয় নানাবিধ সমস্যা। আসলে প্রেম করে বিয়ে হোক অথবা দেখা-শোনা করে, বিয়ের পর যৌন জীবন অন্য মাত্রা পায়। বিবাহিত জীবনে যে নিয়মিত যৌনতা আসে তা প্রাক-বিবাহ জীবনে সম্ভব নয়। ফলে যৌন বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়। অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের ক্ষেত্রে অন্য একটা সমস্যাও থাকে। একেবারে অপরিচিত একটি মানুষের সঙ্গে যৌনতায় কিছু প্রাথমিক অস্বস্তি থাকা একেবারে স্বাভাবিক। কিন্তু এই বিষয়টিই অনেক সময়ে দম্পতিদের মধ্যে ব্যবধান তৈরি করে।
প্রতিকারের উপায়:
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বামী বা স্ত্রীর পারস্পরিক বোঝাপড়া যত ভাল হয়, দম্পতির যৌন জীবনও তত আনন্দমণ্ডিত হয়ে ওঠে। বিয়ের পর প্রথম দিন থেকেই যৌন জীবন ভীষণ রোমাঞ্চকর হয়ে উঠবে, এমন ভাবাটা ঠিক নয়। কাজেই বিয়ের পর যৌনতা সম্পর্কে একটু ধৈর্যশীল হতে হবে আপনাকে।
২. প্রত্যাশাপূরণের অভাব:
প্রত্যেকটি ছেলে বা মেয়ের মনেই আদর্শ স্ত্রী বা স্বামী সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি থাকে বিয়ের আগে থেকেই। বিয়ের পর সেই ধারণার সঙ্গে বাস্তবের স্ত্রী বা স্বামীটির মিল পাওয়া যায় না অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। সেখান থেকেই তৈরি হয় প্রত্যাশা অপূর্ণ থাকার একটি হতাশা।
প্রতিকারের উপায়:
আলোচনা করাই যে কোনও দাম্পত্য সংকট কাটিয়ে ওঠার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। পরস্পরের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা কী, সেটা স্পষ্ট করে বলে দিন। তাহলে দু’জনের পক্ষেই বোঝা সুবিধা হয় ঠিক কখন কী করা উচিৎ।
৩. পরিবারের সদস্যদের অনধিকারচর্চা:
স্বামী এবং স্ত্রী— দু’জনেরই পরিবারের সদস্যদের নাক গলানো যে কোনও নবদম্পতির কাছে একটা বড় সমস্যা। বাড়ির বড়রা যদি কথায় কথায় পরামর্শ, উপদেশ বা আদেশ দিয়ে নববিবাহিত স্বামী-স্ত্রীকে নিজেদের ইচ্ছেমতো চালনা করতে চান তাহলে খুব মুশকিল। তাঁদের এই অবাঞ্ছিত নাক গলানো স্বভাবের ফলে সমস্যা তৈরি হয় স্বামী স্ত্রীর মধ্যেও।
প্রতিকারের উপায়:
এক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী— দু’জনকেই নিজেদের পরিবারের সদস্যদের এই কথা স্পষ্ট করে বোঝানো দরকার যে, নিজেদের সংসার নিজেদের মতো করে চালানোর ক্ষমতা তাঁদের রয়েছে। এবং এই ব্যাপারে অন্যদের হস্তক্ষেপ তাঁরা পছন্দ করছেন না। দরকার হলে একটু কড়া অবস্থান নিতে হবে দু’জনকেই।
৪. ধৈর্যের অভাব:
বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বিয়ের পর স্বামীর অথবা স্ত্রীর কোনও একটি বিশেষ অভ্যাস বা জীবনযাপনের কোনও একটি দিক অন্যজনের বিরক্তির কারণ হচ্ছে। স্বামী হয়তো অফিস বেরনোর আগে ভিজে তোয়ালেটা রেখে যাচ্ছেন বিছানার উপর, সেটা স্ত্রীর পছন্দ নয়। আবার স্ত্রী হয়তো রোজ বাথরুমে গিজারের সুইচটা অফ করতে ভুলে যাচ্ছেন, সেটা পছন্দ নয় স্বামীর। সেই নিয়েই বেঁধে যাচ্ছে ঝগড়া।
প্রতিকারের উপায়:
স্বামী বা স্ত্রীর যে জিনিসটা পছন্দ হচ্ছে না সেটা স্পষ্ট করে জানান তাঁকে। আপনিও প্রস্তুত থাকুন নিজেকে কিছুটা পাল্টে নেওয়ার জন্য। মনে রাখবেন, বিয়ের পর প্রত্যেকটি মানুষকেই নিজেকে বদলে নিতে হয় কিছুটা।
৫. কেরিয়ার নিয়ে সমস্যা:
বিয়ের পর কেরিয়ার আর পারিবারিক দায়িত্বের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই দ্বন্দ্ব বেঁধে যায়। বিয়ের পর স্বামী আশা করেন, স্ত্রী চাকরি ছেড়ে পরিবারকে সময় দেবেন। স্ত্রী-ও আশা করেন স্বামীর কাছে তাঁর অফিসের থেকে বেশি প্রাধান্য পাবেন তিনি নিজে। সেই আশা পূরণ না হলেই দেখা দেয় সমস্যা।
প্রতিকারের উপায়:
কেরিয়ার সম্পর্কে আপনার পরিকল্পনা সম্পর্কে বিয়ের আগে আলোচনা করে নেওয়াই সবচেয়ে ভাল। আপনার পেশাগত জীবনে আপনি কী করতে চান সেটা স্পষ্ট করে বলে দিন আপনার হবু স্বামী বা স্ত্রীকে। কতটা আপোস আপনি করতে পারবেন সেটাও ভেবে দেখবেন। যদি দেখেন মতের মিল কোনওভাবেই হবে না, তাহলে বিয়ে না করাই ভাল।
সোনালীনিউজ/ঢাকা/এএম