‘সিলেটের মরমী গান’

‘গান গাই আর মনরে বুঝাই...’

  • সাহিত্য-সাংস্কৃতি প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০১৭, ০৯:১৮ পিএম

ঢাকা: বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন লোকঐতিহ্যের অনবদ্য ফসল মরমী সংগীত বা মরমীবাদের গান। মারেফতি বা ফকিরালী গানের পোশাকি নাম মরমী সাহিত্য। প্রাচীন লোকসাহিত্য বা লোকঐতিহ্যের একাংশের রূপান্তর মরমী সাহিত্য। লোকসংগীত ও মরমী গানে সিলেট অঞ্চলের সুনাম বহু পুরনো।

শনিবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে ওই মরমীগানগুলো শোনা গেল একটু অন্য রূপে। গানগুলো গাইতে দেশের শিল্পীদের পাশাপাশি ঢাকায় এসেছেন কলকাতার নারীদের লোকগানের দল মাদল।

‘সিলেটের মরমী গান’ শিরোনামের এই আয়োজনটি করে রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র। আয়োজনটি উৎসর্গ করা হয় সদ্য প্রয়াত রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিৎ সেনগুপ্তের প্রতি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ ও গানের দল মাদল’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. তপন রায়। রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের সহ-সভাপতি ডা. হারিসুল হকের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়।

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, কলকাতার গানের দল মাদল একটি অসাধারণ দল। যারা অনন্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করে। তারা বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য নিয়ে কাজ করে। বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক দৃঢ়। এ সম্পর্ক বাড়াতে সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়াতে হবে। দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করে জনগণ। সে জনগণের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করতে সংস্কৃতি অন্যতম বাহন।

আলোচনা শেষে মঞ্চে আসেন রাধারমণ সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্রের শিল্পীরা। প্রথমেই তাদের কণ্ঠে শোনা যায় হাছন রাজার ‘প্রেম বাজারে বিকে মানিক ও সোনারে’। এরপর তাদের কণ্ঠে আরও শোনা যায় রাধারমণ দত্তের ‘সজনী তোরা জল আনিতে যাবেনি’ ও ‘সুরধনীর কিনারায় সোনার নূপুর’, শাহ আবদুল করিমের ‘গান গাই আর মনরে বুঝাই’ এবং শীতালং শাহের ‘সুয়া উড়িল উড়িল জীবের জীবন’। এরপর মঞ্চে আসেন খায়রুল ইসলাম। তার কণ্ঠে শোনা যায় আরকুম শাহের ‘সোনার পিঞ্জিরা আমার’ ও জবান আলীর ‘প্রেমের মানুষ ঘুমাইলে চাইয়া থাকে’। এর পর বিশ্বজিৎ রায়ের কণ্ঠে শোনা যায় দীন ভবানন্দের ‘মথুরার সময় গেল গইয়ারে’, গিয়াসউদ্দিনের ‘মরিলে কান্দিস না আমায় দায়’ ও রাধারমণ দত্তের ‘কেমন আছে কমলিনী রাই’।

এর পর মঞ্চে সন্ধ্যার মূল আর্কষণ মাদল। দলটি একে একে গেয়ে শোনায় ছয়টি গান। তাদের কণ্ঠে শোনা যায় রাধারমণ দত্তের ‘জলের ঘাটে দেইখ্যা আইলাম কি সুন্দর শ্যামরায়’, হেমাঙ্গ বিশ্বাসের ‘আসমানেতে দেয়া ডাকে’, শাহ আবদুল করিমের ‘আমার মন কান্দে প্রাণ কান্দেরে’, শেখ ভানুর ‘নিশীথে যাইও ফুল বনেরে ভ্রমরা’, বৌ নাচের গান ‘সোহাগ চাঁদ বদনী ধনি নাচতো দেখি’ ও দূরবীণ শাহের ‘কাইন্দ না কাইন্দ না গো রাই’।

সবশেষে মঞ্চে আসেন মাদল’র প্রতিষ্ঠাতা তপন রায়। তার কণ্ঠে শোনা যায় হাছন রাজার ‘ছাড়িলাম হাছনের নাওরে’, ইদম শাহের ‘কান্দিয়া আকুল হইলাম’, রাধারমণ দত্তের ‘শ্যামকালিয়া সোনা বন্ধুরে’ ও শাহ আবদুল করিমের ‘আর জানালা সয় না’।

সোনালীনিউজডটকম/এন