বিদায় বসন্ত, চৈত্র-সংক্রান্তি আজ

  • সাহিত্য সংস্কৃতি প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ১৩, ২০১৭, ০১:৫০ এএম

ঢাকা: আজ ৩০ চৈত্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ; চৈত্র-সংক্রান্তি। চৈত্রের শেষ দিন, ঋতুরাজ বসন্তেরও। বাংলা ১৪২৩ সাল তার শেষ গান গেয়ে বিদায় নেবে। ঋতুরাজকে বিদায় জানিয়ে আসবে পহেলা বৈশাখ নববর্ষ। আগামীকাল শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) বাঙালিরা মেতে উঠবে বর্ষবরণ উৎসবে। বৈশাখ আসবে নতুন দিনের বারতা নিয়ে। দেবে ডাক-

‘ওই বুঝি কালবৈশাখী
সন্ধ্যা-আকাশ দেয় ঢাকি
ভয় কী রে তোর ভয় কারে,
দ্বার খুলে দিস চার ধারে’।

উপমহাদেশের সনাতন প্রথা অনুসারী মানুষ চৈত্র-সংক্রান্তির এই দিনটিকে খুবই পুণ্যের দিন বলে মনে করে। সনাতন পঞ্জিকা মতে দিনটিকে গণ্য করা হয় মহাবিষুবসংক্রান্তি।

এ ছাড়া বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী এই দিনটিকে নানা উৎসবের মাধ্যমে পালন করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিজু ও বৈসাবি উৎসব। পার্বত্য তিন জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পাহাড়ি জনগোষ্ঠী আবহমানকাল থেকে এ উৎসব পালন করে আসছে। দিন দিন এর আবেদন সমতলবাসীর মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি-বাঙালির সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির বন্ধন আরো দৃঢ় হচ্ছে।

সাধারণত চৈত্র-সংক্রান্তিতে মেলা, গাজন ও পূজার আয়োজন করা হয়। কিন্তু এর বাইরে আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সঙ্গে জড়িত আছে চৈত্র-সংক্রান্তি, যা শুধু উৎসব নয়, এক ধরনের লোকাচার। নিজের ও প্রকৃতির খোঁজ নেয়া। এই খোঁজ নেয়ার দায়িত্ব পড়ে নারীর ওপর। যেটা কৃষিজীবী মানুষের প্রজ্ঞার দারুণ প্রকাশ।

অতীতে চৈত্র-সংক্রান্তি মেলা উপলক্ষে গ্রামাঞ্চলের গৃহস্থরা নাতি-নাতনিসহ মেয়ে-জামাইকে সমাদর করে বাড়ি নিয়ে আসতেন। গৃহস্থরা সবাইকে নতুন জামা-কাপড় দিতেন এবং উন্নত খাওয়া-দাওয়ারও আয়োজন করতেন। মেলার কয়েকদিন এভাবে সবাই মিলে আনন্দ উপভোগ করতেন তারা।

সভ্যতার সর্বগ্রাসী ছোঁয়ায় আবহমান গ্রামবাংলার সেই আনন্দমুখর পরিবেশ এখন আর আগের মতো নেই। তবে শহরাঞ্চলের নগর সংস্কৃতির আমেজে চৈত্র-সংক্রান্তির উৎস এখন সর্বজনীন মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এন