বেঁচে থাকলে ৭০-এ পা দিতেন হুমায়ূন!

  • সাহিত্য-সংস্কৃতি ডেস্ক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ১৩, ২০১৭, ১০:৪৪ এএম

ঢাকা: খ্যাতনামা কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদ-এর ৭০তম জন্মদিন আজ। তিনি গেয়েছিলেন- ‘মরিলে কান্দিস না আমার দায়’- ছিল তার প্রিয় গান। অথচ’ তার তিরোধানের অশ্রু আজও শুকায়নি ভক্তদের চোখ থেকে।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে জন্ম। বাবা ফয়েজুর রহমান ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। শৈশবে বাবার কাজের সূত্রে ঘুরেছেন দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে হারাতে হয় বাবাকে। সেই থেকে মা আয়েশা ফয়েজ ও ছোট পাঁচ ভাইবোনের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নেন তরুণ হুমায়ূন। 

একাত্তরে অনেকের সঙ্গে তিনি বন্দি ছিলেন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর শিবিরে। সেখানে বসেই লিখেছিলেন প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’। দেশ স্বাধীন হলে বই আকারে প্রকাশ পায় এটি। তারপর থেকেই বাঙালি তরুণদের মনে স্থায়ী আসন গেঁড়ে বসেন দুইশ’রও বেশি গ্রন্থের এই জনক। তার দুই সহোদর মুহাম্মদ জাফর ইকবাল এবং আহসান হাবীবও জনপ্রিয় লেখক।

দীর্ঘ প্রায় পাঁচ দশক তিনি লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সমকালীন মধ্যবিত্ত বাঙালি জীবনযাত্রা তার চেয়ে ভালো সেসময় তুলে আনতে পেরেছেন খুব কম সাহিত্যিকই। গল্প বলায় ভাষার ব্যবহারে নিজস্ব একটা কৌশল প্রচলন করেন তিনি। সহজ অথচ’ গভীর সেই লেখনশৈলী পরবর্তী প্রজন্মের অনেক লেখকেরই হয়ে ওঠে আশ্রয়। 

লেখার বিষয়েও বৈচিত্র্য নিয়ে খেলেছেন তিনি। বাংলা সাহিত্যের কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যে তাকে পথিকৃৎ বলেন সাহিত্যবোদ্ধারা। তার লেখায় উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, রহস্য, বিজ্ঞান, পরবাস্তবতা, পারলৌকিকতাসহ কল্পলোকের নানা বিষয়।

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার লেখা বেশ কয়েকটি উপন্যাস, কয়েকটি নাটক, কয়েকটি চলচ্চিত্র কালজয়ী কর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। সৃষ্টি করেছেন ‘হিমু’, ‘মিসির আলি’ ও ‘শুভ্র’র মতো কালজয়ী কিছু চরিত্র।

লেখালেখির পাশাপাশি শিক্ষকতায় ছিলেন দীর্ঘদিন। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। লেখালেখিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করার পর শিক্ষকতা থেকে তিনি অবসর নেন। শিল্প-সংস্কৃতির প্রসারে হুমায়ূন আহমেদ গাজিপুরে প্রতিষ্ঠা করেন নুহাশ পল্লী। এই প্রতিষ্ঠানই ছিল তার সকল কাজের আঙ্গিনা। 

২০১২ সালের ১৯ জুলাই কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে মারা যান হুমায়ূন আহমেদ। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই