সাংবাদিক ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের জিডি!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ১২, ২০১৮, ০৬:০১ পিএম
মা-ছেলে

ঢাকা: বাবার পেনশনের জরুরি কাগজপত্র নিজের কাছে আটকে রেখে হয়রানি করার অভিযোগে ছেলে ডেইলি স্টারের সাংবাদিক বিশ্বজিৎ কুমার রায়ের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেছেন মা মুকুল রানী রায়।

গুলশান থানায় গত ১৩ আগস্ট মুকুল রানী বাদী হয়ে ছেলে বিশ্বজিতের বিরুদ্ধে জিডি করেন। জিডি-নং ৮৭৭। বিশ্বজিৎ কুমার ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের স্পোর্টস বিভাগের সাব-এডিটর পদে নিযুক্ত রয়েছেন।

জিডিতে মুকুল রানী রায়ের অভিযোগ, আমি মুকুল রানী রায় (৭৩) থানায় হাজির হয়ে এই মর্মে অভিযোগ করছি যে, আমার স্বামী সমরেন্দ্র কুমার রায় একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সরকারি কর্মকর্তা। চলতি বছরের ১৩ মার্চ তিনি আমার মেঝ ছেলে বিশ্বজিতের শান্তিনগরের বাসায় মারা যান। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, পেনশন বই, ব্যাংকের চেক, আইডি কার্ড, মুক্তিযোদ্ধার কাগজপত্র ও বাড়ির দলিলাদিসহ আমার ছেলে (বিশ্বজিৎ কমার) নিজের কাছে আটকে রেখেছেন। বারবার চাওয়া সত্ত্বেও দিচ্ছে না। এর ফলে সরকারি অফিসের কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া কাগজ চাইলে আমার ছেলে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে।

মুকুল রানী বলেন, আমি এখন বড় ছেলের অশীত কুমার রায়ের বাসায় আছি। বড় ছেলে আমাকে দেখভাল করে ও যাবতীয় খরচ বহন করে। এছাড়া আমার ছোট ছেলে অমিতাভ রায় একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। তার জন্য আমি কিছু করে যেতে চাই। এছাড়া স্বামীর মৃত্যুর আগে মেঝ ছেলে বিশ্বজিৎ কুমারের কাছে ছিল। তার পেনশন ও মুক্তিযোদ্ধার যাবতীয় কাগজপত্র বিশ্বজিতের কাছে রয়েছে। কাগজ চাইলে ছেলে আমার সঙ্গে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেয়। কোনো উপায় না দেখে পুলিশের দারস্থ হতে বাধ্য হয়েছি।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মুকুল রানী বলেন, ভগবানের কাছে আমার একটাই চাওয়া আর কোনো মা যেন আমার মতো বিপদগ্রস্ত না হয়। কোনো সন্তান যেন মাকে মানসিকভাবে হয়রানি না করে। এমন সন্তান থাকার চেয়ে নিঃসন্তান থাকা ভালো। আপনারা আমাকে একটু সহযোগিতা করেন। আমি বড় বিপদে আছি বলেই আঁচল দিয়ে চোখ মোছেন মুকুল রানী।

এ বিষয়ে কথা হয় সাংবাদিক বিশ্বজিৎ কুমারের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা তিন ভাই। আমার ছোট ভাই অমিতাভ রায় প্রতিবন্ধী। সে আমার কাছেই থাকে। তার খরচ আমাকে বহন করতে হয়। এছাড়া বাবা মারা গেলেও অমিতাভ প্রতিবন্ধী হওয়ায় পেনশনের টাকা তার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই আমি যদি কাগজপত্র আমার কাছে রেখেও থাকি। তা আমার কাছে অপরাধ নয়।

আপনি মায়ের সঙ্গে এমন আচরণ করছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বজিৎ কুমার বলেন, তার স্বামীর পেনশনের কাগজ আমার কাছে কেন? তিনি নিজের কাছে কেন রাখেনি। আপনি প্রশ্ন করেন, জানতে পারবেন।

আবু বকর সিদ্দিক বলেন, যেহেতু এটি পারিবারিক ব্যাপার তাই আমরা প্রথমে চেষ্টা করি দুপক্ষকে ডেকে সমাধান করার। যদি কোনোভাবে সমাধান করা না যায় তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেই।

তিনি বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।

মুকুল রানী রায়ের বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নবীনগর থানার মাঝিয়ারা গ্রামে। তিনি ৫ সন্তানের জননী। তার তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম