বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার সদস্য বিভিন্ন দেশে নিয়োজিত

বিশ্বশান্তিতে দেশের সশস্ত্র বাহিনী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০১৯, ০৬:৪৭ পিএম

ঢাকা : জাতিসংঘের উদ্যোগে বিশ্বের শান্তিরক্ষায় গত প্রায় তিন দশকে বাংলাদেশের অবদান অনন্য হয়ে উঠেছে। শান্তিরক্ষায় জাতিসংঘে বাংলাদেশকে শক্তিশালী দেশ হিসেবে সম্মানের চোখে দেখা হয়। বাংলাদেশ এখন জাতিসংঘে শান্তিরক্ষী জোগানে তৃতীয় বৃহত্তম দেশ।

সূত্রগুলো বলছে, এ যাবতকালে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৮৮৭ জন অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্য ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৩৭ জন। নৌবাহিনী থেকে এ যাবতকালে ৫ হাজার ৪২৮ জন বিভিন্ন দেশে মিশনে অংশ নেন। আর বিমানবাহিনী থেকে ৬ হাজার ৬০৮ জন।

বর্তমানে ১০টি মিশনে দেশের ৬ হাজার ৫৮২ জন। এর মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্য ৫ হাজার ৭৮ জন, নৌবাহিনীর ৩৪৭ এবং বিমানবাহিনীর ৫০৩ জন। রয়েছেন নারী সদস্যরাও।

হিসাব বলছে, এ যাবতকালে এক হাজার ৬০৯ জন নারী সদস্য শান্তি মিশনে অংশ নিয়েছেন। বর্তমানে তিন বাহিনীর ২১৪ জন কাজ করছেন।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী নানা জাতিগোষ্ঠী থেকে আসা। ভিন্ন সংস্কৃতি আর ভাষার এই শান্তিরক্ষীদের একমাত্র লক্ষ্য থাকে ঝুঁকিপূর্ণ মানবগোষ্ঠীকে রক্ষা করা। সহিংসতা থেকে শান্তির পথে আসা দেশগুলোকে সহযোগিতা করা। জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশ অন্যতম বৃহৎ শান্তিরক্ষী জোগানদাতা দেশ।

১৯৮৮ সালে ইরাক-ইরানের মধ্যে সশস্ত্র সহিংসতা বন্ধে নিয়োজিত হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশ রক্ষীবাহিনীর কার্যক্রম শুরু হয়। গত তিন দশকে যেসব দেশে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা কাজ করেছে, কর্ম আর দক্ষতায় তা অনন্য হয়ে উঠেছে।

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বিশ্বশান্তি রক্ষায় গত প্রায় তিন দশক ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী।

দেশে দেশে জাতিতে জাতিতে সংঘাত, হানাহানি রোধে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নেতৃত্বের দক্ষতায়, পেশাগত নৈপুণ্যে আরো চৌকস হয়ে উঠছেন তিন বাহিনীর সদস্যরা। দেশের জন্য বয়ে আনছেন বিরল সম্মান ও মর্যাদা। উপরি পাওনা হিসেবে নিয়ে আসছেন বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।

বাংলাদেশের একেকজন শান্তিরক্ষী দেশের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করছেন বিশ্বের অচেনা জনপদে। সিয়েরা লিয়নে শান্তি প্রতিষ্ঠা শেষে ২০০২ সালে বাংলা ভাষা পেয়েছে তাদের অন্যতম প্রধান সরকারি ভাষার স্বীকৃতি।

বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নামে গ্রাম হয়েছে, সড়ক হয়েছে, হয়েছে বন্ধু কেন্দ্র, কালচারাল সেন্টারসহ নানা কেন্দ্র। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা মিশন এলাকায় বিভিন্ন সেবামূলক কাজেরও উদ্যোগ নেন। বিভিন্ন দেশে তারা স্কুল ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছেন।

১৯৮৮ সালের ১৪ আগস্ট প্রথম শান্তিরক্ষা মিশনে যোগ দেন সেনাবাহিনীর ১৫ কর্মকর্তা। ইরান-ইরাক মিলিটারি অবজারভার গ্রুপ নামে জাতিসংঘের একটি শান্তিরক্ষা মিশনের হয়ে কাজ করতে যান এই কর্মকর্তারা। বিশ্বশান্তি রক্ষা কার্যক্রমে নতুন অধ্যায়ের তারাই পথিকৃৎ।

১৯৯৩ সাল থেকে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিয়ে আসছে। এ ছাড়াও কুয়েত পুনর্গঠনে ২৬ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

সোনালীনিউজ/এমটিআই