দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় ২৪ মুসল্লির মৃত্যু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২০, ১০:৪২ এএম

ঢাকা : আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আজ শেষ হচ্ছে দুই পর্বের তাবলিগ জামাতের ৫৫ তম বিশ্ব ইজতেমা। টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে অনুষ্ঠিত দুই পর্বের এই ইজতেমায় সড়ক দুর্ঘটনা, বার্ধক্য ও অসুস্থতাজনিত কারণে ২৪ জন মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে।

ইজতেমার পুলিশ কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি মারা যান সিরাজগঞ্জের খোকা মিয়া। পরদিন ১০ জানুয়ারি রাত ১টার দিকে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান চট্টগ্রামের মোহাম্মদ আলী, একই দিন রাজশাহীর চারঘাটের তমিজউদ্দিনের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক মারা যান।

১১ জানুয়ারি রাত পৌনে দুইটার দিকে মারা যান কুমিল্লার বিংলাবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুস সোবহানের ছেলে তমিজউদ্দিন, একই দিন ভোর ৪টার দিকে মারা যান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহজাহান। ভোর ৬টার দিকে মারা যান নারায়ণগঞ্জের ইউসুফ মেম্বার, হাতেম আলীর ছেলে মো. আলী আজগর বয়াতী, চট্টগ্রামের ইয়াকুব আলী, নওগার শহীদুল ইসলাম। এছাড়া একই দিন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান নেত্রকোনার মো. মাজহারুল ইসলাম।

১২ জানুয়ারি রাত ৩টার দিকে জয়পুরহাটের হাতখোলা গ্রামের আব্দুল মমিন, সাড়ে ৬টার দিকে কিশোরগঞ্জের ধলিয়া বাজার গ্রামের পীরবক্সের ছেলে নূর ইসলাম, কক্সবাজারের করাচিপাড়া গ্রামের মসন আলীর ছেলে ওলি আহমেদ ও শেরপুরের চরশেরপুর গ্রামের ময়েজ আলীর ছেলে আব্দুল কাইয়ুম মারা যান।

১৫ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাভার্ডভ্যান চাপায় মারা যান নরসিংদীর বিরবাগ মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে সুরুজ মিয়া।

১৬ জানুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে গাইবান্ধার টেংরাকান্দি গ্রামের রমজান আলীর ছেলে গোলজার হোসেন ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যান। একই দিন সুনামগঞ্জের চাঁনপুর গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আলাউদ্দিন বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান। একই দিন মারা যান তুরাগের নলভোগ এলাকার ফজলু মিয়ার ছেলে ইলিয়াস মিয়া।

১৮ জানুয়ারি রাত দেড়টার দিকে শ্বাসকষ্টজনিত রোগে মারা গেছেন রংপুরের ওসমানপুর গ্রামের হাজী জয়নাল আবেদীনের ছেলে হুমায়ুন কবীর, রাত দুইটার দিকে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ঝিনাইদহের কালাহাট গোপালপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে আ ফ ম জহুরুল আলম। 

এছাড়া বার্ধক্যজনিত কারণে ভোর সাড়ে ৬টার দিকে গাইবান্ধার কামালের হাট গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে আব্দুস সোবহান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান নোয়াখালীর আজিমনগর গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে মনির উদ্দিন, রাত ১০টার দিকে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান চুয়াডাঙ্গার খাদিমপুর গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে ফজলুল হক।

১৯ জানুয়ারি মারা হার্ট অ্যাটাকে মারা যান গাইবান্ধার চাঁদপাড়া দুর্গাদাহ গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মো. শাহ আলম। 

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের পর থেকে দিন দিন লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ২০১১ সাল থেকে ইজতেমা হয়ে আসছে দুই পর্বে। তাবলিগ জামাতের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে গত বছর থেকে ইজতেমা বাহ্যত দুই পর্বে হলেও বিবাদমান দুটি অংশ পৃথক পৃথক নেতৃত্ব দিচ্ছে। এবার প্রথম পর্বের তিন দিন ইজতেমা করেন আলমি শুরার অনুসারীরা, যারা মাওলানা সাদের বিরোধী। আর এবারের তিন দিন করছেন মাওলানা সাদের অনুসারীরা।

দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভির কিছু বিতর্কিত বক্তব্য এবং মতাদর্শকে কেন্দ্র করেই মূলত তাবলিগ জামাতে বিভাজন দেখা দিয়েছে। তবে বিরোধীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে ইজতেমায় এসেও ফিরে যেতে হয় মাওলানা সাদকে। এরপর থেকে তিনি আর বাংলাদেশে আসতে পারেননি।   

সোনালীনিউজ/এএস