পোস্টারিং করে সমগ্র ঢাকার সৌন্দর্য বিনষ্ট

জাপার দুই নেতার বিরুদ্ধে মামলা করবেন মেয়র আনিসুল হক

  • বিশেষ প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ১৩, ২০১৬, ০১:২১ এএম

পোস্টারিং করে সমগ্র ঢাকার সৌন্দর্য বিনষ্ট করার অভিযোগে জাতীয় পার্টির দুই কেন্দ্রীয় নেতার বিরুদ্ধে মামলা করার কথা ভাবছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক। বৃহস্পতিবার (১২ মে) রাত ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ‘আমরা ঢাকা’য় এর ফেসবুক পেজের মাধ্যমে ‘ফেসবুক লাইভ’-এ জামাল উদ্দিন নামে এক নাগরিকের প্রশ্নের জবাবে মেয়র এ অভিযোগ করেন।।

আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা শহরটাকে একটু ভালো ও সুন্দর রাখার চেষ্টা করছি। উত্তর ঢাকায় বড় বড় বিলবোর্ড নেই। যত্রতত্র পোস্টারিং নেই। সব নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে গত এক বছরে। অথচ সম্প্রতি জাতীয় পার্টির দুই কেন্দ্রীয় নেতা নতুন রং করা ফুটওভার ব্রিজ ও রাস্তার আশপাশের দেয়ালে তাদের পোস্টার লাগিয়ে দিয়েছে । যা খুব জঘন্য কাজ। তারা ঢাকাকে নোংরা করেছে।’

জাতীয় পার্টিকে সরকারের সহযোগী ও বন্ধু উল্লেখ করে মেয়র বলেন, আমাদের যেমন দায়িত্ব আছে শহর পরিষ্কার রাখার, জাতীর পার্টির যারা নেতৃত্ব দিতে চায় তাদেরও তেমন দায়িত্ব আছে। আগামী ২/১ দিনে মধ্যে পোস্টার ও অবৈধ বিলবোর্ড সরিয়ে নেয়ারও আহ্বান জানান। যারা রাস্তায় পোস্টার লাগায়, অবৈধ বিলবোর্ড লাগায়, ফুটওভার ব্রিজ কাজে লাগিয়ে নিজেদের প্রচার করে তাদের নিন্দা জানান মেয়র আনিসুল হক। একই সঙ্গে তাদের এসব অবৈধ কাজের জন্য সবাইকে সোচ্চার হতে আহ্বান জানান তিনি।

আগামী ১৪ মে জাতীয় পার্টির (জাপা-এরশাদ) ৮ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে দলের নেতাকর্মীরা তাদের নিজেদের 'রাজনৈতিক শক্তি'র জানান দিতে পোস্টারিং করছেন। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন এবং জাপার ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবু হোসেন বাবলা। জাপার এই দুই নেতার পোস্টারে ছেয়ে গেছে সমগ্র ঢাকা। পরিচ্ছন্ন ও সবুজ ঢাকা প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলা দুই মেয়রের স্বপ্নে অনেকটাই ঘি ঢেলে দিলেন তারা। অনেকটা ঘুছিয়ে নিয়ে আসা ঢাকার সৌন্দর্য বিনষ্ট করলেন মিলন ও বাবলা।

পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী ঢাকা উত্তরের মেয়র ‌আনিসুল হক ফেসবুকের মাধ্যমে জনতার মুখোমুখি হলেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তিনি নগরবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। রাত ৮টায় শুরুর পর থেকেই নগরবাসীর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মেয়র। এ সময় নগরবাসীর বিস্তর অভিযোগ, সমস্যা, গঠনমূলক পরামর্শ ও প্রত্যাশার কথাও শুনেন তিনি। আড়াই ঘণ্টায় কমপক্ষে দুই শতাধিক নাগরিকের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

দেশে এই প্রথমবারের মতো কোনো জনপ্রতিনিধি সরাসরি জবাবদিহিমূলক ওয়েবকাস্টিং-এ অংশ নিলেন। এ ক্ষেত্রে মেয়র আনিসুল হক দৃষ্টান্ত হয়েই থাকবেন। তার এ উদ্যোগে নাগরিকরা যে খুব ভালো ভাবেই নিয়েছেন তা ‘আমরা ঢাকা’র ফেসবুকে পেজে চোখ বুলালেই টের পাওয়া যায়। লাইভে থাকা অবস্থায় প্রায় অর্ধলক্ষাধিক লোক অবিরত তার সঙ্গে মতবিনিময় করছিলেন। প্রায় ৪ লাখ লোকের কাছে তিনি পৌছে যান মুহুর্তেই। সেকেন্ডে ৪/৫ শ' কমেন্টের উত্তর দিতে রীতিমত হিমশিম খেতে হয়েছে আনিসুল হককে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের ইতিবাচক ও সফল প্রয়োগকে নগরবাসীর সামনে তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ নেন মেয়র আনিসুল।

২০১৫ সালের ৬ মে ঢাকা উত্তরের মেয়র হিসেবে শপথ নেন আনিসুল হক। আর আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার বুঝে নেন ১৪ মে। আনিসুল হকের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল ‘সমস্যা চিহ্নিত, সমাধান যাত্রা’। মেয়র হিসেবে দায়িত্বপালনের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে এ আয়োজন করেন তিনি। তার এক বছরের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করছেন নগরবাসীর সঙ্গে। প্রতি তিনমাস অন্তর এভাবেই জনতার মুখোমুখি হতে চাওয়ার অঙ্গিকারও ব্যক্ত করেন মেয়র।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/এমটিআই