চলছে দেড় হাজার শ্রমিকের কর্মযজ্ঞ

বিশ্বের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন হবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০, ০২:০৫ পিএম

ঢাকা : হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক রাতদিন কর্মযজ্ঞে লিপ্ত। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে যেভাবে কাজ এগিয়ে চলেছে, তাতে সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। নির্মাণকাজে অর্থায়ন করেছে জাইকা।

আর জাপানের সিমুজি ও কোরিয়ার স্যামসাং যৌথভাবে অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি) নামে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। দুই দেশের চার শতাধিক দক্ষ জনবল কাজ করছেন। প্রখ্যাত স্থপতি রোহানি বাহারিনের নকশায় টার্মিনালে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার আয়তনের একটি ভবন তৈরি হবে।

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, ‘করোনা মহামারীতে বিশ্বে সবকিছু থমকে থাকলেও আমাদের প্রকল্প চলছে। শুরুর দিকে হোঁচট খেলেও বেবিচক শ্রমিক থেকে কর্মকর্তা সবার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রেখে বিকল্প পন্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।’

জানা যায়, কাজ শুরুর নয় মাসে সার্বিক অগ্রগতি ৮ শতাংশ। করোনায় প্রথম দিকে কাজ কিছুটা থমকে না গেলে সার্বিক অগ্রগতি আরও বেশি হতো বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রায় তিন হাজার পাইলিংয়ের মধ্যে ৭০০ পাইলিংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। পাইলিং, মাটি-বালু ভরাটসহ টার্মিনালের ৮ শতাংশ কাজ শেষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেঘনা নদীর দাউদকান্দি এলাকা থেকে বালু এনে ভরাট করা হচ্ছে। মাটি ও বালু ভরাটে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। পাঁচ কোটি ঘনফুটের মধ্যে দুই কোটি ঘনফুট বালু ও মাটি ভরাট করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে ৭০০ পাইলিং শেষ হয়েছে। বাকি পাইলিংয়ের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। বিদেশি প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে কাজে ব্যস্ত নির্মাণশ্রমিকরা। সরকারের অগ্রাধিকার এই মেগা প্রকল্পে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেড় হাজার শ্রমিক দিনরাত কাজ করছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটারে ৩৭টি উড়োজাহাজ রাখার অ্যাপ্রোন ও ১ হাজার ২৩০টি গাড়ি রাখার সুবিধা, ৬৩ হাজার বর্গফুট জায়গায় আমদানি-রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স, ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার থাকবে। বহির্গমনে ৬৪ ও আগমনী যাত্রীদের জন্য থাকবে ৬৪টি ইমিগ্রেশন কাউন্টার। এ ছাড়া ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ১১টি বডি স্ক্যানার, ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ ও ১৬টি লাগেজ বেল্ট থাকবে।

এ ছাড়াও রেসকিউ ও ফায়ার ফাইটিং স্টেশন, ইক্যুইপমেন্ট ৪ হাজার বর্গমিটার, ভূমি উন্নয়ন, কানেক্টিং ট্যাক্সিওয়ে (উত্তর) ২৪ হাজার বর্গামিটার, কানেক্টিং ট্যাক্সিওয়ে (অন্যান্য) ৪২ হাজার ৫০০ বর্গমিটার, র্যাপিড এক্সিট ট্যাক্সিওয়ে (উত্তর) ২২ হাজার বর্গামিটার, র্যাপিড এক্সিট ট্যাক্সিওয়ে (দক্ষিণ) ১৯ হাজার ৫০০ বর্গমিটার, শোল্ডার ৯৬ হাজার ৫০০ বর্গমিটার, জিএসই রোড ৮৩ হাজার ৮০০ বর্গমিটার, সার্ভিস রোড ৩৩ হাজার বর্গমিটার, ড্রেনেজ ওয়ার্কস (বক্স কালভার্ট ও প্রোটেক্টিভ ওয়ার্কস), বাউন্ডারি ওয়াল, সিকিউরিটি গেট, গার্ডরুম ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ, ল্যান্ড সাইড, সার্ভিস রোডসহ এলিভেটেড রোড ও ফানেল টানেল রাখা হবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালে অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এটি চালু হলে বিশ্বের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন বিমানবন্দরের জায়গায় স্থান করে নেবে বলে আশা করি।’

সোনালীনিউজ/এমটিআই