পদ্মা সেতু

পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জুন ২৫, ২০২২, ১১:৩৬ এএম

ঢাকা : মাওয়া ও জাজিরা পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে গড়ে উঠছে শিল্প-কারখানা। একসময় ওইসব এলাকার জমির দাম অনেক কম থাকলেও সেতু হওয়ায় এখন দাম বেড়েছে প্রায় ২০ গুণ। পদ্মা সেতু হয়ে বরিশাল কিংবা কুয়াকাটার পর্যটন খাতেরও রয়েছে অপার সম্ভাবনা। সুন্দরবন ও কুয়াকাটাসহ অন্যান্য পর্যটন এলাকাগুলোর গুরুত্ব বাড়বে বহুগুণ। পর্যটন খাতে তৈরি হবে অপার সম্ভাবনা।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার থেকে কোন অংশে কম নয়। তবে যাতায়াত সমস্যার কারণে পর্যটকরা সমুদ্র সৈকত দেখতে কক্সবাজারকে বেচে নিতো। কিন্তু কুয়াকাটায় বেশ কিছু আকর্ষণ আছে যা কক্সবাজারে নেই, যেমন লাল কাকড়ার চর, ঝাউ বাগান, সুন্দরবনের পূর্বাংশ তিন নদীর মোহনাসহ (ফাতরার চর) বেশ কিছু জায়গা। যা পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। এতো দিনের যাতায়াত সমস্যা দূর করবে পদ্মা সেতু এবং কুয়াকাটা হয়ে উঠবে পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে। 

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পদ্মা সেতুর কারণে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক বড় ভূমিকা রাখবে পর্যটন খাতও। কুয়াকাটা হতে পারে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের থেকে পর্যটক প্রিয় স্থান। এতো দিন অনেক ভোগান্তির কারণে কুয়াকাটা থেকে কক্সবাজারকে সবাই বেঁচে নিতো এখন সেটার উল্টোটা হতে পারে। এই সম্ভাবনাময় খাতে সরকারের সুদৃষ্টি একান্ত প্রয়োজন। 

পদ্মা সেতুর কারণে সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে যথাযথ ব্যবহার করতে পারলে জিডিপিতে অতিরিক্ত ১০ বিলিয়ন ডলার যোগ হবে, যা সেতুটির ব্যয়ের প্রায় তিনগুণ বেশি। এজন্য দীর্ঘ পরিকল্পনা একান্ত প্রয়োজন। 

পদ্মা সেতু নিতান্তই একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু নয়। বিশ্বের সেরা প্রকৌশলবিদ্যা আর প্রযুক্তিতে নির্মিত দ্বিস্তরের এ দৃষ্টিনন্দন সেতুটি একটি দেশের জনগণের আবেগের নাম। স্বপ্ন পূরণে একটি বিশ্বাস ও আস্থার সার্থক রূপায়ণের নাম। এ সেতু এখন উদ্বোধন হয়েছে। ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু পারাপারের জন্য টোলের হার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়ছে। 

যেদিন এ সেতুতে আলো জ্বলে উঠেছে, সঙ্গে সঙ্গে জ্বলে উঠেছে এদেশের কোটি মানুষের হৃদয় থেকে উৎসারিত আলো। চোখে-মুখে ফুটে উঠেছে অপার্থিব আনন্দের বন্যা। এটি সহজেই অনুমেয়। গোটা জাতি একটি নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছে, এক অনন্য গৌরবের অংশীদার হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের আত্মমর্যাদার সাক্ষী হয়ে প্রমত্তা পদ্মার বুকে যুগ থেকে যুগান্তরে দাঁড়িয়ে থাকবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।

কুয়াকাটা হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতালেব বলেন, 'আগে ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় আসতে ১২-১৪ ঘণ্টা সময় লাগতো। ফলে, দীর্ঘ ভ্রমণে পর্যটকরা ক্লান্ত হয়ে পড়তেন। কিন্তু, পদ্মা সেতু চালুর পর মাত্র ৫-৬ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় পৌঁছানো সম্ভব হবে। 'কুয়াকাটায় বর্তমানে ছোট-বড় ১৫০টি আবাসিক হোটেল আছে। এসব হোটেলে ১৫ হাজার পর্যটক স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারেন। পদ্মা সেতু চালুর পর এ সংখ্যা কয়েকগুণ হবে। এজন্য হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের অবকাঠামো উন্নয়ন বাড়ানোর কাজ শুরু করেছে।'

সোনালীনিউজ/এনএন