প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে কোটা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

  • নিজস্ব প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৯, ২০২২, ০৮:২০ পিএম
অধিকার বঞ্চিত বেকার সমাজ’ র মানববন্ধন

ঢাকা : প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে কোটা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ‘অধিকার বঞ্চিত বেকার সমাজ’ নামে একটি সংগঠন। সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বেলা ১১ টার দিকে অধিকার বঞ্চিত বেকার সমাজ এর ব্যানারে ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগে কোটা বাতিলের দাবিতে’ এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন  ‘অধিকার বঞ্চিত বেকার সমাজ’ সংগঠনের আহ্বায়ক তারেক রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বৈষম্য বিধায় ১ম ও ২য় শ্রেনীর সকল নিয়োগে কোটা বাতিল হওয়া শর্তেও, সরকারি নিয়োগ বিধি এবং সংবিধানে বর্নিত নিয়োগের নীতিমালাকে লঙ্ঘন করে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অধিদপ্তর, তাদের অভ্যন্তরীণ নিয়োগ বিধি ২০১৯ এ বিশেষ বিধান নামে একটি বিধান যুক্ত করে সমাজের অনগ্রসর শ্রেনী নয় এমন গোষ্ঠীকে সিংহভাগ কোটা প্রদান করে নিয়োগের নিমিত্তে একটি তালিকা প্রদান করে। যেখানে ৬০ শতাংশ নারী কোটা, ২০ শতাংশ পৌষ্য বা শিক্ষকের পারিবারিক কোটা, ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা প্রয়োগ করে, যেখানে এই সকল কোটার উপর ২০ শতাংশ বিজ্ঞান কোটা প্রয়োগ হবে। এমন সিদ্ধান্তে ৩৭৫৭৪ টি পদের নিয়োগে খুব অল্প সংখ্যক পুরুষ নিয়োগ পায়। এমনকি আমরা জানতে পেরেছি মাঠ পর্যায়ে তথ্য বিশ্লেষণ করে যে, বৈষম্যমূলক কোটায় নিয়োগ বাস্তবায়ন করতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, ভিন্ন ভিন্ন কাট মার্কে কোটায় পরীক্ষার্থীদের পাশ দেখিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। বিষয়টা এমন জানতে পেরেছি যে, নাম্বার পত্র লুকিয়ে তারা কাউকে ৪০ মার্কে নিয়োগ দিয়েছে আবার কেউ ৫৫ মার্ক পেয়েও নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছে। বাংলাদেশের সরকারি নিয়োগের সবচেয়ে বড় সেক্টর সহকারী শিক্ষক নিয়োগে এমন বৈষম্যের কারনে বেকার যুবকদের সাথে বড় ধরনের প্রতারণা সংগঠিত হয়েছে। রুল জারির পর থেকেই গত এক বছরে বিভিন্ন সময় শুনানির আবেদন করলে আদালত গরিমসী করে শুনানি বিলম্বিত করে। এমন অবস্থায় গত ১৪ ডিসেম্বর ফলাফল প্রকাশ হলে, ক্ষতিগ্রস্ত বেকার যুবকরা হতাশ হয়ে পড়ে। কারন এমন একটি যৌক্তিক বিষয়ে আদালত ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করে তাদের ন্যায় বিচার বঞ্চিত করেছে।’

অধিকার বঞ্চিত বেকার সমাজ’ র মানববন্ধন

অধিকার বঞ্চিত বেকার সমাজের আহবায়ক আরও বলেন, আজকের এই কর্মসূচিতে আমরা একত্রিত হয়েছি, আদালতের বিচার প্রদানের অনীহার বিষয়টি সামনে এনে ন্যায় বিচার প্রাপ্তির লক্ষে। আমরা যুবকরা, না সরকার, না জনপ্রশাসন, না প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর; কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছি না। এত বড় একটা বৈষম্যের বিষয়ে আমাদের ন্যায় বিচার দিল না আদালত, ন্যায় বিচার বঞ্চিত করল রাষ্ট্র। 

দাবি সমূহ: 

১. বৈষম্যমূলক এই ফলাফল বাতিল করে এক ও অভিন্ন কাট মার্কে পুনরায় ফলাফল ঘোষনা করা হোক।

২. কোটা বাতিলের সরকারি পরিপত্র মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হোক।

৩. শিক্ষক নিয়োগে বিদ্যমান নিয়োগ মেধার ভিত্তিতে দ্রুত সম্পন্ন করে  নতুন কোটামুক্ত পরবর্তী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হোক।

তারেক আরও জানান, এই সমাজ যেহেতু সকল শ্রেনীর মানুষের দেয়া ভ্যাট টাক্সে চলে তাই কোন শ্রেনীকে ঠকিয়ে অন্য শ্রেনীকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার এখতিয়ার সংবিধান আমাদের দেয় নাই। যেহেতু রাষ্ট্র বেকার ভাতার মত কোন কর্মসূচি হাতে নিতে পারছে না, তাই প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক, রেলওয়েসহ অন্যান্য সেক্টরে যতটুকু নিয়োগের সুযোগ আছে, তাতে প্রতিবন্ধীদের মত অনগ্রসর শ্রেনীর কোটা রেখে বাকি সকল অনৈতিক কোটা বাতিল করে  মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। 

কর্মসূচি থেকে আগামী ২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার, ২০২২ইং তারিখে শিক্ষক নিয়োগে কোটা বাতিল এর দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে বেলা ১১টায়, ছাত্র সমাবেশ এর ডাক দেয় অধিকার বঞ্চিত বেকার সমাজ।

চাকুরী প্রত্যাশী, মোঃ ইমরান ও সুমন কবির এর সঞ্চালনায়, অধিকার বঞ্চিত বেকার সমাজ এর পক্ষ থেকে উক্ত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আহবায়ক, মোঃ তারেক রহমান।

উল্লেখ্য, অধিকার বঞ্চিত বেকারসমাজের পক্ষ থেকে চাকরি প্রত্যাশী মোঃ তারেক রহমান এর পক্ষে আইনজীবী একলাস উদ্দিন ভুইয়া আদালতে একটি রিট পিটিশন করলে, আদালত রুল জারি করেন কোটা বাতিলের পক্ষে। ২০২১, সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। রুল জারি করা হলেও গত এক বছরে কোন শুনানি অনুষ্টিত হয় নাই উক্ত রুলের প্রেক্ষিতে। 

সোনালীনিউজ/এমএএইচ