‘শেখের বেটি হাসিনা মানবতার মা’

  • এম এস রুকন, গাজীপুর  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৩, ০৪:১০ পিএম

গাজীপুর: একজন সাধারণ সুস্থসবল মানুষের যার যে ধর্মের রীতি অনুযায়ী ঘর সংসার করা সামাজিক এবং মানবিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। তবে সংসার সাঁঝাতে হলে আগে তাকে ঘরের ব্যবস্থা করতে হবে। আর সেই ঘরই যদি না থাকে। তাহলে মিছামিছি সংসার বাঁধা মানুষের জীবন বিথা। 

এবার এই নিরন্তর মহাকাব্য বাণী উল্টে যাচ্ছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আওতাধীন নয়াপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে ভূমি ও গৃহ পেয়ে আবেগাপ্লুত অসংখ্য সুবিধাভোগীরা। এখানে আবেগাপ্লুত হয়ে অনেকেই বলছেন, শেখের বেটি হাসিনা মানবতার ‘মা’ শেখ হাসিনা ঘর উপহার না দিলে সংসার জীবনের স্বাদ বুঝতাম না। 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া পল্লী গাঁয়ে ৮ একর জমির উপরে আকর্ষণীয় ডিজাইনে ১৪২টি দৃষ্টিনন্দন ঘর তৈরি করা হয়েছে। এখানে প্রতিটি সাজানো-গোছানো ঘরগুলো দেখলেই অনেকেই চোখ আঁচড়ে উঠবে।

আর চোখ আঁচড়ে উঠার বিশেষ কারণ স্বরূপ দেখা গেছে, এই আশ্রয় প্রকল্প দেখে চেনার উপায় নেই যে, এটা একটা আশ্রয় পল্লী নিবাস। মনোমুগ্ধকর পরিবেশে গড়ে উঠা এ আশ্রয়ণ দেখে মনে হবে। এ যেনো এক নয়া এক মড়েল শহর। 

দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন, সুপরিসর রাস্তাঘাট ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এ প্রকল্পটি দেখে যে কারোই মনে হবে। পল্লী গ্রামে নতুন এক শহর। 

এছাড়াও আরও একটু বৈচিত্র্যময় স্বাদ বয়ে আনবে দর্শনার্থীদের নয়াপাড়া গ্রামের চারপাশে গড়ে উঠছে বিভিন্ন প্রকার শিল্প-কলকারখানা। যে কারণে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসকারী নারী-পুরুষসহ সকল বয়সীদের জন্য থাকছে আত্মকর্মসংস্থানমূলক বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। আশ্রয়ের প্রতিটি পরিবার যে কর্মমুখী হয়ে উঠে এবং নিজেদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলেন এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে সব রকম সুযোগ-সুবিধা ও সহযোগিতা  প্রদানের ব্যবস্থা। এছাড়াও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় এখানে শিশু কিশোরদের পড়া লেখা করার জন্য রয়েছে আলাদা স্কুল ব্যবস্থা। 

এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, গাজীপুর জেলা শ্রীপুর উপজেলার আওতাধীন নয়াপাড়ায় গাজীপুর মৌজার সরকারি ১নম্বর খতিয়ানভুক্ত ৮ একর ১১ শতাংশ জমিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাস্তবায়নাধীন আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর অধীনে ১৪২টি ঘর নির্মিত হয়েছে। প্রতিদিন ঘর যেনো একটা রিসোর্স আকৃতির নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের প্রতীক।  

শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয় এখানে যে সব সুবিধাভোগী ঘর উপহার পেয়েছেন। তাদেরকে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী ও দারিদ্র বিমোচনেও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শতাধিক পরিবারের বসবাসের বিশেষ এ গ্রামে অভ্যন্তরীণ প্রশস্ত রাস্তাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থায় রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। 

আশ্রয়ণে ঘোরতে-ঘোরতেই কথা হয় সোনালীনিউজ এর সঙ্গে বিভিন্ন সুবিধাভোগীর। তেমনি এক সুবিধাভোগী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম (৪৫)। 

তিনি জীবনের ৪৫ বছরে এসে নিজের ঘরে থাকার সুবিধা পাওয়ায় অনেক আনন্দে আত্মহারা। তার সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তিনি যেনো মাথা গোজার ‘ঠাই’ পেয়ে আনন্দে বাকরুদ্ধ। বার বার জাহাঙ্গীর আলম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মমতাময়ী মা হিসেবে উল্লেখ করেন।

এ সময়ে আলম আরও জানান,ভিটে ছিল না বলে অনেকেই তাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করতো,ছোট চোখে দেখতো। এখন তিনি বলতে পারবেন তার  একটু জায়গা আছে,আমিও আধাপাকা ঘরের মালিক। 

তিনি বলেন, এখন তার জীবন থেকে পরবাস এবং অন্যের মুখাপেক্ষীর ইতি ঘটলো। তিনি আরও বলেন,ইতি মধ্যে তিনি অতি দ্রুত এই ঘর পাওয়ার পর থেকেই নিজের মতো করে পরিপাটি করে সাজানো শুরু করেছেন।

জানা যায়,জাহাঙ্গীর গাজীপুরের শৈলাট এলাকার আব্দুল জব্বারের সন্তান। পিতা ছিলেন দিনমজুর। জাহাঙ্গীরের ঘরে রয়েছে স্ত্রী, ২ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে অন্যের জমিতে ঘর উঠিয়ে থাকতেন এবং কাঠমিস্ত্রির কাজ করে সংসার পরিচালনা করতেন। 

নয়াপাড়ার এই আশ্রয় প্রকল্প থেকে ঘর পাওয়া আরেক সুবিধাভোগী মোছাঃ হাসনা। সোনালী নিউজ সঙ্গে কথা হয় তার। এ সময়ে হাসনা বলেন,তার স্বামীর কোনো জায়গা জমি নেই। অন্যের বাড়িতে থাকতেন দীর্ঘ বছর যাবত। শেখ হাসিনার দয়া আমাদের কপালে ঘরটি জুটেছে। ছেলেরা নিজেদের সংসার চলার পর কিছু থাকলে পাঠায়। না থাকলে না পাঠায়। দুই ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে সবাইকে বিয়ে দিয়ে বর্তমানে তারা আলাদা থাকছেন।তিনি বলেন,দুঃখ কষ্টে ভরা জর্জরিত জীবনে সুখ এনে দিয়েছে শেখের মাইয়া হাসিনা। আল্লাই যেনো তাকে জান্নাত দেয়। 

নয়া পড়ার এই আশ্রয়ণ প্রকল্প নিয়ে কথা হয় স্থানীয় সংসদ সদস্য গাজীপুর- ৩ আসনের এমপি ও গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ এর সঙ্গে। এ সময়ে সাংসদ সবুজ সোনালী নিউজকে জানান, জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন, মানবতার মা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীনদের জমি এবং ঘর উপহার প্রদান 
করে সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এ জন্য শ্রীপুরবাসী প্রধানমন্ত্রীর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। তিনি আরও বলেন, যারা ঘর পেয়েছেন তাদের প্রত্যেককে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলা হবে।এজন্য প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

সোনালীনিউজ/এম