ভেজা বাতাস থেকে বিদ্যুৎ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৩, ১২:১৬ পিএম

ঢাকা : জলবায়ু পরিবর্তন গোটা বিশ্বকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যেতে তাড়া দিয়ে যাচ্ছে। নানা উপায়ও খোঁজা হচ্ছে। কিন্তু এমন কিছু যদি পাওয়া যেত, একদম হাতের নাগালে পাওয়া বিপুল শক্তির উৎস। হয়তো এবার এমন এক উৎসের সম্ভাবনা তৈরি হতে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে হয়তো মনে হবে যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ভেসে বেড়াচ্ছে, দিন-রাত ২৪ ঘণ্টায়ই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ঝড়ো আকাশে ভেজা বাতাসই এমন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী নিকোলা টেসলা চেয়েছিলেন, ঝড়ো বাতাসের সময় আকাশে মেঘের মধ্যে যেভাবে বিদ্যুৎ জমা হয়, সেই প্রক্রিয়াকে ব্যবহার করে তিনি বাতাসের আর্দ্রতা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবেন। তার জীবদ্দশায় তা হয়নি ঠিকই। কিন্তু টেসলার মৃত্যুর কয়েক দশক পর হয়তো এখন তার চিন্তা বাস্তবে রূপ পেতে যাচ্ছে।

[214177]

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ভেজা বাতাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের গবেষণায় ল্যাবরেটরিতে যারা ব্যাপারটা দেখছিলেন, তারা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না, ঘটনাটা আসলেই ঘটছে। একটি পরীক্ষামূলক যন্ত্র, যা বাতাসের আর্দ্রতা অনুভব করতে পারে, তা বৈদ্যুতিক তরঙ্গ উৎপাদন করছে।

ম্যাসাচুসেটস অ্যামহার্স্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক জুন ইয়াও বলেন, ‘যেকোনো কারণেই হোক যে ছাত্রটি এ ধরনের যন্ত্র নিয়ে কাজ করছিল, সে ওটাকে বিদ্যুতের প্লাগে লাগাতে ভুলে গিয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য, সেখান থেকেই এই গল্পের শুরু।’ পাঁচ বছর আগের ওই দিন থেকে ইয়াও এবং তার সহকর্মীরা এমন একটা প্রযুক্তি তৈরির জন্য কাজ করছেন, যা আর্দ্র বাতাসে ভাসমান জলের কণা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে। একে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ‘হাইগ্রোইলেকট্রিসিটি’। এটা এমন এক ধারণা যা নিয়ে বহু বছর ধরেই বিজ্ঞানীদের মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছে।

নিকোলা টেসলা শুধু নন, পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে এমন আরও অনেকেই ছিলেন যারা এ নিয়ে ভেবেছিলেন। অতীতে এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করেছেন অনেকেই। কিন্তু খুব ইতিবাচক এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পৃথিবীতে অনেক গবেষক দল এখন বাতাসে ভাসমান পানির অণু থেকে বৈদু্যুতিক চার্জ বের করে নেওয়ার নতুন পথ আবিষ্কার করছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন সম্ভব। কারণ পানির অণুগুলো নিজেদের মধ্যে অতিক্ষুদ্র পরিমাণে চার্জ বিনিময় করে। এবার বিজ্ঞানীরা ঠিক সেটাকেই নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পুরো প্রক্রিয়ায় চ্যালেঞ্জটা হচ্ছেযথেষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎ এক জায়গায় জড়ো করতে পারা। এর ফলে নানা কাজে তা ব্যবহার করা যাবে। এখন বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, হয়তো একটি ছোট কম্পিউটার বা সেন্সরকে শক্তি জোগানোর মতো যথেষ্ট বিদ্যুৎ এভাবে তৈরি করা যাবে।

এমটিআই