পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন ভিত্তিহীন

  • নিজস্ব প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৪, ০৫:২৪ পিএম

ঢাকা: বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিতে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বেলা ৩টায় মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সোহেলী সাবরীন।

তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।

[222068]

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি পারফেক্ট নয়। বাংলাদেশ সরকার মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নতি করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় যে, ২০২৩ সালে দেশটির মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য কোনও পরিবর্তন হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শ্রম ব্যুরো গত মঙ্গলবার ‘কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাক্টিসেস ফর ২০২৩’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন।

[222064]

এতে বলা হয় — ২০২২ সালের মতো গত বছরও বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, নির্যাতনসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানান ঘটনা ঘটেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর আরও বলেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ওইসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা বা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত ও শাস্তি দিতে সরকার বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় লিখিত বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সোহেলী সাবরীন বলেন, ‘২০২৩ সালের যুক্তরাষ্ট্রের মানবিধকার নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নোট করেছে বাংলাদেশ। আমরা যতই আকাঙ্ক্ষা করি না কেন বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিখুঁত নয়। কারণ একটি দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকে।’

[222051]

বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।’

সোহেলী সাবরীন বলেন, ‘যে ক্ষেত্রগুলিতে আরও উন্নতি প্রয়োজন সেগুলি সম্পর্কে সচেতন। বর্তমান সরকার ২০০৯ সাল থেকে টানা মেয়াদে, মানবাধিকার পরিস্থিতির অর্থপূর্ণ অগ্রগতি উপলব্ধি করার জন্য বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে।’
 
‘যেকোনো বিচক্ষণ পর্যবেক্ষক লক্ষ্য করবেন যে, এই ধরনের প্রচেষ্টার ফলে নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা, শিশুদের অধিকার, বয়স্ক ব্যক্তিদের অধিকার, শ্রমিকদের অধিকার, অভিযোগ নিষ্পত্তি, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, সমিতির স্বাধীনতা, স্বাধীনতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।’

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনটিতে অনেক বিচ্ছিন্ন এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ আনা হয়েছে, এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘পরিতাপের বিষয়, প্রতিবেদনে সরকারের অনেক উন্নয়ন ও অর্জনের কথা স্বীকার করা হয়নি। অন্যদিকে, বিচ্ছিন্ন এবং ভিত্তিহীন অভিযোগগুলি একটি নিয়মতান্ত্রিক প্রবণতার অংশ হিসাবে পতাকাঙ্কিত করা অব্যাহত রয়েছে। প্রতিবেদনটির একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ পাঠ এটি স্পষ্ট করে দেবে যে, এটি পৃথক রিপোর্ট করা বা অভিযুক্ত ঘটনার রেফারেন্স দিয়ে পরিপূর্ণ যা বিস্তৃত, সাধারণ অনুমানগুলি আঁকতে ব্যবহৃত হয়েছিল।’

‘এটাও স্পষ্ট যে, রিপোর্টটি বেশিরভাগ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা (বেনামী উৎসসহ) থেকে নেওয়া অনুমান এবং অপ্রমাণিত অভিযোগের উপর নির্ভর করে, যার মধ্যে অনেকগুলি মার্কিন সরকার বা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি দ্বারা সমর্থিত। যেমন, রিপোর্টিং প্যাটার্নে কিছু সহজাত এবং স্পষ্ট পক্ষপাতগুলি বেশ স্পষ্ট,’ যোগ করেন তিনি এই মুখপাত্র।

আইএ