রিমালের প্রভাবে বিদ্যুতহীন ২ কোটি ৩৫ লাখ গ্রাহক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মে ২৭, ২০২৪, ০৪:০৪ পিএম

ঢাকা : ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ২ কোটি ৩৫ লাখের বেশি গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পাশাপাশি ওজোপাডিকোর প্রায় ২ থেকে আড়াই লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় অনেক জায়গায় মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য (পরিচালন ও বিতরণ) দেবাশীষ চক্রবর্তী দুপুর সোয়া ১টায় বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে প্রায় ২ কোটি ৩৫ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের টিম প্রস্তুত রয়েছে। এরইমধ্যে অনেক এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি রাতের মধ্যেই বিদ্যুৎ সরবারহ স্বাভাবিক হবে। এদিকে ওজোপাডিকোর গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতেও কাল চলছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।

[224285]

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি) জানায়, ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় উপকূলে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য মোবাইল কোম্পানিগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, উপকূলে ঝড় শুরুর আগে সন্ধ্যা বেলাতেই অনেক এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। টাওয়ারগুলোতে চার ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাটারির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। ব্যাটারির চার্জ শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেক এলাকা মোবাইল নেটওয়ার্কের বাইরে চলে গেছে। ঝড় থেমে যাওয়ার পর বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হলে আবার নেটওয়ার্ক সচল হবে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মোবাইল কোম্পানিগুলো বিকল্প উপায়ে নেটওয়ার্ক চালু রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

[224287]

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ে গাছ পড়ে, লাইন ছিঁড়ে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনা এড়াতে কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্ন হয়েছে সেগুলো হলো— পটুয়াখালী, বাগেরহাট, ভোলা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও ঝালকাঠি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুৎ ও ফোন জরুরি সেবার অন্তর্গত। দুর্যোগের সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখতে বিশেষ উদ্যোগ প্রয়োজন।

বিদ্যুৎ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যথাসময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি প্রয়োজনে বাতিল এবং অতিরিক্ত জনবল প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ-সংক্রান্ত যেকোনো প্রয়োজনে ১৬৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে গভীর সমুদ্রে তেল খালাস কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে বলে বিপিসি সূত্রে জানা গেছে। নিরাপত্তার কারণে জ্বালানি তেলবাহী দুটি জাহাজকে গভীর সমুদ্রে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নৌরুটে তেল পরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে রিমালের কারণে এলএনজি সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না বলে পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা জানান।

সূত্রমতে সাগরের পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় শুক্রবার এলএনজি সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে শনিবার সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। কারণ এফএসআরইউ যেদিকে, রিমাল সেদিক দিয়ে যাচ্ছে না। তাই ক্ষতির আশঙ্কা কম।

এমটিআই