ঢাকা: আমেরিকায় শুল্ক আলোচনা প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, “আমরা চাইছি যেন কোনো ভূ-রাজনৈতিক ফাঁদে না পড়ি। তাই শুল্ক আলোচনার পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিও রক্ষা করতে আমরা সর্বদা সচেষ্ট।”
শুক্রবার (১ আগস্ট) ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক ভিডিওতে তিনি এসব কথা বলেন।
ভিডিওতে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনার নানা গুরুত্বপূর্ণ ও বিতর্কিত বিষয় নিয়ে কথা বলেন খলিলুর রহমান। তিনি জানান, “সংস্কৃত ভাষায় একটা কথা আছে — ‘ফলেন পরিচয়ে’। কাজের ফলাফল দেখলেই বোঝা যায় কাজটি সফল হয়েছে কি না। আমরা আমাদের লক্ষ্য অনুযায়ী ফল পেয়েছি এবং প্রতিযোগীদের সঙ্গে আমাদের শুল্ক রেট একই রকম হয়েছে।”
ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন করার কারণ আমি বুঝতে পারিনি। কারণ, এটা শুধু শুল্ক চুক্তি নয়, এর বাইরে অনেক বিষয় রয়েছে। আমেরিকার বাণিজ্য ঘাটতি কমানো, আমদানির বিভিন্ন নীতিমালা পরিমার্জন, পারচেস কমিটমেন্ট ইত্যাদি জটিল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ট্যারিফ ইস্যুর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তাও জড়িত। ট্রাম্প প্রশাসনের ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক ইমারজেন্সি পাওয়ারস অ্যাক্ট অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি যদি মনে করেন বাণিজ্যে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে, তিনি বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন। তাই আলোচনা চলাকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টারা উপস্থিত ছিলেন।”
খলিলুর রহমান জানান, তার ২৫ বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থায় কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের লবিস্ট নিয়োগের প্রয়োজন হয়নি। কারণ, আমেরিকা-ইউরোপ ও এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো শক্তিশালী লবিস্ট ছাড়া সহজে এমন আলোচনায় প্রবেশ করা যায় না। আমাদের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো ওয়াশিংটনে সরাসরি কূটনৈতিক পর্যায়ে সমাধান হয়েছে।”
দেশের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় স্বচ্ছতার দাবির প্রসঙ্গেও তিনি মন্তব্য করেন, “১৫ বছর ধরে অনেক চুক্তি হয়েছে যা দেশের স্বার্থে হয়নি। তাই স্বচ্ছতার প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর করার আগে আলোচনার বিষয়গুলো গোপন রাখা হয়, যা কূটনৈতিক প্রথা।”
তিনি আরও জানান, “আমাদের সরকার অন্তর্বর্তীকালীন। আগামী নির্বাচিত সরকার চাইলে এই চুক্তি পরিমার্জন বা বাতিল করতে পারবে। আমরা কোনো ধরনের অতিরিক্ত দায়ভার নিচ্ছি না এবং দেশের স্বার্থ পুরোপুরি রক্ষা করেছি।”
এছাড়া, বাংলাদেশ ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার পরিকল্পনা করছে যা দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের প্রবাসী এক কোটি মানুষ রয়েছে, এটি একটি বড় বাজার। ভবিষ্যতে ফ্লাইট বাড়ানো ও যাত্রী সেবা বাড়াতে বিমান কেনার প্রয়োজন।”
ওএফ