দেশের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, নির্বাচন ও বিচার ব্যবস্থার বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনতে গঠিত কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশের মধ্যে ইতোমধ্যে ১৬টি বাস্তবায়ন করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই দেশে সুশাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় নানা খাতে সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবেই বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত সুপারিশ বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে, যার মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন এবং বিচার বিভাগ সংশ্লিষ্ট মোট ১৬টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য গঠিত কমিশনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে।
সেগুলো হলো— আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন – যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া আরও কার্যকর ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে উপযুক্ত করার জন্য আইনটি সংশোধন করা হয়েছে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়ন – নির্বাচনের সময় পর্যবেক্ষক ও গণমাধ্যমের কার্যক্রমকে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার আওতায় আনা হয়েছে, যাতে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় থাকে।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ কার্যকর করা হয়েছে, যা সরাসরি নাগরিক সেবার মান উন্নয়নে অবদান রাখবে। গেগুলো হলো- পাসপোর্ট প্রাপ্তি মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি – প্রতিটি নাগরিকের জন্য পাসপোর্ট পাওয়া একটি মৌলিক অধিকার বলে বিবেচিত হচ্ছে। গণশুনানি চালু – সরকারি সেবা ও নীতি নিয়ে জনগণের মতামত ও অভিযোগ সরাসরি শোনার জন্য গণশুনানি প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে।
[254210]
দুদকের কার্যক্রমকে আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করার জন্য চারটি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বাস্তবায়ন করা চারটি হলো—তদন্ত-পূর্ব আবশ্যিক অনুসন্ধান-ব্যবস্থা বিলোপ, দুদক আইনের ধারা ৩২ক বিলোপ, উচ্চমাত্রার দুর্নীতি তদন্তে বিভিন্ন এজেন্সির সমন্বয়ে আলাদা টাস্কফোর্স গঠন এবং সিএজি ও আএমইডির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর মধ্যে আটটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সেগুলো হলো—সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ কমিশন, ইনফরমেশন ডেস্ক স্থাপন, নারী ও শিশুদের জন্য স্বতন্ত্র স্থান, আইনজীবীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় অপর পক্ষে অন্য আইনজীবীর নিয়োগে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের বিষয়ে সার্কুলার জারি, আইনগত সহায়তা কার্যক্রমের সঙ্গে মধ্যস্থতা কার্যক্রমকে সংযুক্তকরণ, দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তি ত্বরান্বিত করা এবং ফৌজদারি মামলার নিষ্পত্তি ত্বরান্বিত করা।
এই ১৬টি সুপারিশের বাস্তবায়ন সরকারের সংস্কারমূলক প্রতিশ্রুতির বাস্তব প্রতিফলন। পর্যায়ক্রমে আরও সুপারিশ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলছে বলে প্রেস উইং সূত্রে জানা গেছে।
ওএফ