ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক মারা গেছেন

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৫, ০৯:২৫ এএম

ভাষা আন্দোলনের প্রাবন্ধিক ইতিহাসবিদ, গবেষক ও কবি আহমদ রফিক আর নেই। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত ১০টা ১২ মিনিটে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

পারিবারিক সূত্র তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর আগে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বুধবার বিকেলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, মৃত্যুর সাত মিনিট আগে তিনি কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে আক্রান্ত হন।

কিডনির জটিলতা ও একাধিকবার ‘মাইল্ড স্ট্রোক’-এর কারণে দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন আহমদ রফিক। ১১ সেপ্টেম্বর ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর তাঁকে হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে গত রোববার তাঁকে বারডেমে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আইসিইউ প্রধান ডা. কানিজ ফাতেমার তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।

১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন আহমদ রফিক। তিনি নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের একটি ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন। ২০০৬ সালে স্ত্রীকে হারানোর পর থেকে তিনি নিঃসন্তান অবস্থায় একাকী জীবনযাপন করছিলেন।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণায় আজীবন নিবেদিত আহমদ রফিক শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি। রবীন্দ্রচর্চায় তাঁর অবদান বিশেষভাবে স্বীকৃত; কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাঁকে দিয়েছে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি।

বয়সজনিত নানা শারীরিক জটিলতার কারণে ২০১৯ সাল থেকে তাঁর দৃষ্টিশক্তি ক্রমেই ক্ষীণ হতে থাকে। অস্ত্রোপচারেও তেমন সুফল মেলেনি। ২০২১ সালে পা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে তাঁর স্বাস্থ্য দ্রুত অবনতি ঘটে এবং ২০২৩ সাল থেকে তিনি প্রায় দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন।

জাতি একজন ভাষাসংগ্রামী ও গবেষককে হারাল, যিনি আজীবন ভাষা ও সাহিত্যের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন।
এম