চার মাসে ঢাকায় ৩৫১টি বিষধর সাপ উদ্ধার, এলো কোথা থেকে?  

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ০২:৫৭ পিএম
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন জনবহুল এলাকা থেকে গত চার মাসে তিনশর বেশি বিষধর সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। মানুষের বাসার ভেতর, গ্যারেজে, এমনকি বহুতল ভবনের নয়তলাতেও সাপ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে পদ্মগোখরা, রাসেল ভাইপার, খৈয়া গোখরা ও রাজ কেউটের মতো প্রাণঘাতী প্রজাতিও রয়েছে।

বাংলাদেশে বর্ষাকালে সাধারণত সাপ বেশি দেখা যায়। কারণ, সাপের গর্তে বৃষ্টির পানি ঢুকে পড়লে তারা আশ্রয়ের জন্য শুকনো জায়গা খোঁজে। সেই সময় অনেক সাপ মানুষের ঘরবাড়ি বা উঁচু স্থানে ঢুকে পড়ে। তবে ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এভাবে বিষধর সাপের দেখা মেলায় কেউ কেউ বিস্ময় প্রকাশ করেছেন, কেউবা বিষয়টিকে স্বাভাবিক বলছেন।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের গবেষক মো. মিজানুর রহমান মনে করেন, জলাশয় ও খালবিল ভরাট করে মানুষ বসতি গড়ে তোলায় সাপের প্রাকৃতিক আবাসস্থল নষ্ট হচ্ছে। ফলে তারা মানুষের বাড়িতে ঢুকে পড়ছে।

ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে এসব সাপ উদ্ধার করছে বাংলাদেশ অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন নামের একটি সংস্থা। সংস্থাটির আহ্বায়ক আদনান আজাদ জানিয়েছেন, গত চার মাসে ৩৫১টি সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র তিনটি নির্বিষ, বাকিগুলো সব বিষধর।

উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরের রাজউক ফ্ল্যাট এলাকায় সবচেয়ে বেশি সাপ ধরা পড়েছে। এরপর বনশ্রী, খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর, বসিলা, মিরপুর, নিকেতন ও দক্ষিণখান এলাকায়ও সাপের দেখা মিলেছে।

আদনান আজাদ জানান, উত্তরার রাজউকের ফ্ল্যাট এলাকার সাততলা ও নয়তলা পর্যন্ত সাপ উঠেছে। প্রতিটি ভবনের ফটকের পাশে লতানো গাছ বা বাগানের গাছ বেয়ে সাপগুলো উপরে উঠেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উদ্ধার হওয়া সাপগুলোর মধ্যে পদ্মগোখরা সবচেয়ে বেশি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহসান বলেন, পদ্মগোখরা পানিপ্রেমী প্রজাতির সাপ। নদী, খাল-বিল বা ঝোপঝাড়ে এদের দেখা মেলে। তাই ঢাকা শহরের জলাশয়সংলগ্ন এলাকায় এদের উপস্থিতি অস্বাভাবিক নয়।

ঢাকায় হঠাৎ সাড়ে তিনশ সাপ উদ্ধার হলেও কামড়ের ঘটনা তেমন ঘটেনি। গবেষকদের মতে, মানুষের অসতর্ক উন্নয়ন আর সাপের আবাসস্থল ধ্বংসের কারণেই এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। উদ্ধারকৃত সাপগুলোকে পরবর্তীতে লোকালয় থেকে দূরে বনাঞ্চল বা প্রাকৃতিক এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা নিজেদের পরিবেশে ফিরে যেতে পারে।

এসএইচ