সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার স্বপ্নটা এখনও রয়ে গেছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫, ১১:১০ এএম

ঢাকা: তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, স্বাধীনতার পর আশা করি, এই নির্বাচনের মাধ্যমেই একটা ভিত্তি স্থাপন হবে। যা গণতন্ত্রকে যেমন সূদৃঢ় করবে, তেমনি জনগণের কাছে সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করবে। বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার স্বপ্নটা আমাদের এখনও অধরাই রয়ে গেছে, সেটির আমরা পূর্ণতার দিকে যাত্রাটা শুরু করতে পারবো।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসব কথা বলেন  উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

[262473]

তিনি বলেন,  আমরা আজকে এমন একটা সন্ধিক্ষণে আছি, যেখানে আমরা একটা শাসন ব্যবস্থাকে পেছনে ফেলে নতুন করে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করবো। সেখানে ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের নির্বাচন আছে, আমরা আশা করছি, নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের পথে সূদৃঢ় একটা যাত্রা আমরা শুরু করবো। আর এজন্য কেবল মাত্র নির্বাচনই হচ্ছে না, একটা গণভোটও হচ্ছে।

গণভোগে সংস্কার প্রশ্নে বড় কতগুলো বিষয়ে জনগণ তাদের মতামত জানাতে পারবে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এখন তার ওপর নির্ভর করে গণতন্ত্রের যাত্রাটা এবার পরিবর্তিত আকারে শুরু হতেই পারে। এটা তো সত্য কথা যে, ৫৪ বছর পরেও যখন একটা গণঅভ্যুত্থান হতে হয়, তার অর্থ হচ্ছে ৭১ এর যে স্বপ্নটা আমাদের ছিল, যে বিশ্বাসটা আমাদের ছিল, যে প্রত্যাশাটা আমাদের ছিল, রাষ্ট্র সেই প্রত্যাশাটা পূরণ করতে পারেনি। আমরা আশা করি, এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটা ভিত্তি স্থাপন হবে। যেই ভিত্তিটা গণতন্ত্রকে যেমন সূদৃঢ় করবে, তেমনি জনগণের কাছে সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করবে। বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার স্বপ্নটা আমাদের এখনও অধরাই রয়ে গেছে, সেটির আমরা পূর্ণতার দিকে যাত্রাটা শুরু করতে পারবো।

রাজনীতিতে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য অনেক সময় যুক্তি দিয়ে তর্ক দিয়ে না করে হত্যাচেষ্টাটাকে একটা অস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও কাপুরুষোচিত বলে মন্তব্য করেন এ উপদেষ্টা।

উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এটা একটা খুবই দুঃখজনক বিষয় যে আমাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য অনেক সময় দেখা যায়, আমরা যুক্তি দিয়ে তর্ক দিয়ে না করে হত্যা চেষ্টাটাকে একটা অস্ত্র হিসেবে গ্রহণ করি। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও কাপুরুষোচিত, এটার মধ্যে তো কোনো বীরত্ব নেই, আপনার যদি শক্তি থাকে, আপনি জনগণের মুখোমুখি হন, জনগণের মুখোমুখি কিভাবে হতে হয়, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তো সবার কাছে স্পষ্ট। সেটা না করে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার এই যে একটা রাজনৈতিক সংস্কৃতি চলে এসেছে, এটা কোনোভাবেই নতুন বাংলাদেশে গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, নিরাপত্তা দেওয়ার যতটা স্বাভাবিক প্রস্তুতি থাকে, সবটুকু স্বাভাবিক প্রস্তুতি আমাদের আছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, স্বাভাবিক প্রস্তুতির চেয়েও বেশি কিছু আমাদের নিতে হবে। কারণ প্রতিপক্ষ আরও বেশি সংগঠিত এবং সে পিছন দিক থেকে আঘাত করছে।

এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একেবারে ভেঙে পড়া অবস্থা থেকে আমরা কাজ শুরু করেছি। সেই ভেঙে পড়া অবস্থাকে জোড়া লাগিয়ে রাষ্ট্রকে আবার একটা যাত্রার দিকে নিয়ে যাওয়াই ছিল আমাদের কাজ। আমরা সেই কাজটা করেছি। সেখানে আমি এই সরকারকে ব্যর্থ বা সফল কোনোটা বলার সুযোগ দেখতে পাচ্ছি না। এ সরকার তখনই সফল হবে যখন দেখা যাবে যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই সরকারের যাত্রা, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন, বিচার করা এবং সংস্কার করার কাজে আমরা সফল হয়েছি।

আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও স্বতঃস্ফূর্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

এসআই