৭১-এ ‍‍‘ভারতের বিজয়‍‍’ দাবি, ঢাকায় মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৫, ০৫:৫৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের অর্জনকে হেয় করার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করেছে। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টায় মধুর ক্যান্টিনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হবে।

‘আধিপত্যবাদ বিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে কর্মসূচির আহ্বান করা হয়। ফেসবুকে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন ঢাবি শিক্ষার্থী রিয়াদুল ইসলাম জুবাহ। তিনি মোদির বিকৃত ছবি অঙ্কনের আয়োজনের কথাও জানান। কর্মসূচি সম্পর্কে জুবাহ জানান, বাংলাদেশের লাখো শহীদ ও মা-বোনের রক্তে অর্জিত বিজয় দিবসে নগ্ন হস্তক্ষেপ এবং বিজয় দিবসকে কলঙ্কিত করার দায়ে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি করা হচ্ছে।

মূলত মোদি ১২ ডিসেম্বরের টুইট ও ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশের বিজয় দিবসকে ‘ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়’ হিসেবে উল্লেখ করায় এই কর্মসূচি আহ্বান করা হয়েছে। মোদি লিখেছেন, ১৯৭১ সালে ভারতের ঐতিহাসিক বিজয় সেনানীদের সাহস ও আত্মত্যাগের ফলাফল। পোস্টে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

নিরপেক্ষ বিশ্লেষকরা মনে করেন, মোদির বক্তব্য বাংলাদেশিদের অর্জনকে অবমূল্যায়ন করার একটি উদ্যোগ। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ভারতের অবদান স্বীকৃত হলেও, স্বাধীনতার মূল মর্যাদা বাংলাদেশের অর্জন। বাংলাদেশি নাগরিকরা এ ধরনের বক্তব্যকে দেশের গৌরব হরণের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেফায়েত শাকিল লিখেছেন, মোদি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরকে ভারতের বিজয় হিসেবে তুলে ধরেছেন, যেখানে বাংলাদেশের নাম নেই। জাহাঙ্গীর আলম উল্লেখ করেছেন, ভারতের সরকারি ন্যারেটিভে বাংলাদেশের বিজয়কে কখনো স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। এ আর এম শাহিদুল ইসলাম স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তান বাহিনীকে পরাজিত করতে বাঙালি সেনাদের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মামুন আলম মন্তব্য করেছেন, মোদি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ভারতের বিজয় হিসেবে উপস্থাপন করে ইতিহাস বিকৃত করেছেন। মেহদী হাসান প্রশ্ন তুলেছেন, ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগকে কিভাবে এভাবে হেয় করা যায়। তারিফ হক লিখেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্বঘোষিত বিজয় দিবসের ন্যারেটিভ বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিতর্কের সূচনা করেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে এই ধরনের দাবি শুধু প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না, বরং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ইতিহাসের স্বতন্ত্র মর্যাদা সম্পর্কে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে। শিক্ষার্থীদের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি দেশের গৌরব রক্ষায় নাগরিক অংশগ্রহণের একটি উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের উচিত এই ধরণের আন্তর্জাতিক বক্তব্যকে দেশের অর্জনের আলোকে বিচার করা এবং ঐক্যবদ্ধ প্রতিক্রিয়া প্রদানের মাধ্যমে ইতিহাস রক্ষা করা।

এসএইচ