বিশেষ শ্রেণির মানুষ সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০১৮, ০৭:৫৫ পিএম

ঢাকা: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন, দেশে বৈষম্য বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ শ্রেণির মানুষ সমাজ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। আদিবাসী, হিজড়া, দলিত শব্দগুলোর অর্থ সরকারের কাছে স্পষ্ট করতে হবে। যুক্তিতর্ক দিয়ে রাষ্ট্রের উপলব্ধিতে পরিবর্তন আনতে হবে। সরকারকে বুঝতে হবে, দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হলে রাষ্ট্রই লাভবান হবে।

রোববার(২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) আয়োজিত জাতীয় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী রিয়াজুল হক এ কথা বলেন।

সভায় মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল বলেন, বেশির ভাগ মানুষকে পরিচয়হীনতার মধ্যে ফেলে দেয়া হচ্ছে। দেশে আছে কারা, সেই প্রশ্নে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে, নাই হয়ে যাচ্ছে। জনগণ ক্রমশ নাই হয়ে যাচ্ছে। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সামাজিকভাবে বিভক্ত হয়ে যাচ্ছি। মনে হচ্ছে, আমরা সামন্ত সমাজে বাস করি। রক্ষাকর্তা যা দেবেন, তাই গ্রহণ করে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এর বাইরে চাইলেই অপরাধ হচ্ছে। এই কালচারকে অ্যাড্রেস করতে হবে।

২০টি মানবাধিকার সংগঠনের মোর্চা এ ফোরাম জাতিসংঘের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদের (ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন ইকোনমিক, সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল রাইটস) শ্যাডো বা ছায়া প্রতিবেদন জমা দেবে। খসড়া প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনার জন্য এ সভার আয়োজন করা হয়। গত বছর জাতিসংঘ কমিটির কাছে সরকার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সরকারের পাশাপাশি ফোরাম ছায়া প্রতিবেদন জমা দেবে। চলতি বছরের মার্চ মাসে কমিটি এসব প্রতিবেদন পর্যালোচনা করবে।

এ সভায় সভাপতিত্ব করেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা। তিনি বলেন, ফোরামের পক্ষ থেকে শুধু প্রতিবেদন দিয়েই দায়িত্ব শেষ না করে এ প্রতিবেদন ধরে একটি সামাজিক আন্দোলন তৈরির উদ্যোগ নেয়া হবে।

সভায় মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন বলেন, সরকার গত ২০ বছর আগে আন্তর্জাতিক সনদটি অনুস্বাক্ষর করে। আর গত বছর সনদ নিয়ে সরকার প্রথম প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে করেই সনদের বাস্তবায়ন অবস্থা বোঝা যাচ্ছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলে সরকারের অঙ্গীকার আছে। কিন্তু এ ধারার অপপ্রয়োগ রোধে সরকার তার পোশাকি পরিবর্তন করছে বলে শোনা যাচ্ছে।

নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক কমিটির কাছে প্রতিবেদন পেশ করলে চ্যালেঞ্জের জায়গায় সরকার সম্পদ স্বল্পতার কথা বলে। অন্যদিকে বলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

স্টেপস টুয়ার্ডস ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জন কর্মকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অন ইকোনমিক, সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল রাইটস নিয়ে সরকারের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে বলেন, প্রতিবেদনটি বিশ্লেষণধর্মী হয়নি। অঙ্গীকার সুনির্দিষ্ট করেনি। এর আগের সিডও, সিআরসিসহ অন্যান্য সনদ নিয়ে সরকার যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তার কপি-পেস্ট মনে হয়েছে।

সোনালীনিউজ/আতা