পদ্মা সেতুর অসম্পূর্ণ সেই ১৪ পিলারের নকশা চূড়ান্ত

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৮, ০৫:৫০ পিএম

ঢাকা: পদ্মা নদীর তলদেশের ব্যতিক্রম কাঠামোর কারণে সেতুর ১৪টি পিলারের নকশা করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছিল নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশকে। শুরু হয়েছিল অনেক সমালোচনার। অনিশ্চয়তার কথাও বলেছিলেন কেউ কেই। অবশেষে সেই ১৪টি পিলারের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে।

ইতিমধ্যে চায়নার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজকে তা হস্তান্তরও করা হয়েছে। আগামী মার্চ মাসের পরই এসব পিলারের পাইল বসানোর কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পসংশ্লিষ্ট একাধিক বিশেষজ্ঞ। তিনটি পিলারের (খুঁটি) ওপর দুটি স্প্যান বসানোর পর পদ্মা সেতুর ৩০০ মিটার এখন দৃশ্যমান। কিন্তু নদীর মাটির স্তরের ভিন্নতার কারণে সেতুর ১৪টি পিলারের নকশা চূড়ান্ত করা যাচ্ছিল না।

দুর্নীতির অভিযোগ, অর্থসংকট ও রাজনৈতিক গরম বক্তৃতার মধ্যে দেশে কয়েক বছর ধরেই আলোচনায় রয়েছে পদ্মা সেতু প্রকল্প। এ প্রকল্পে সিংহ ভাগ অর্থ দেয়ার কথা ছিল বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (আইডিবি)। দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ এনে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন থেকে সরে পড়ে। একে একে সরে যায় এডিবি ও আইডিবি। এরপর রাষ্ট্রের নিজস্ব অর্থেই এ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়।

দ্বিতলবিশিষ্ট পদ্মা সেতু হচ্ছে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরার মধ্যে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য (পানির অংশের) ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। ডাঙার অংশ ধরলে সেতুটি প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ হবে। পিলারের ওপর ইস্পাতের যে স্প্যান বসানো হবে, এর ভেতর দিয়ে চলবে ট্রেন। আর ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। পুরো সেতুতে মোট পিলার হবে ৪২টি। এক পিলার থেকে আরেক পিলারের দূরত্ব ১৫০ মিটার।

এই দূরত্বের লম্বা ইস্পাতের কাঠামো বা স্প্যান জোড়া দিয়েই সেতু নির্মিত হবে। ৪২টি পিলারের ওপর এ রকম ৪১টি স্প্যান বসানো হবে। এর মধ্যে দুটি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। স্প্যানের অংশগুলো চীন থেকে তৈরি করে সমুদ্রপথে জাহাজে করে আনা হয় বাংলাদেশে। ফিটিং করা হয় মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে।

৪২টি পিলারের মধ্যে ২৮টি পিলারের পাইল বসানোর কাজ প্রায় শেষের পথে। প্রতিটি পিলারে পাইলের সংখ্যা ছয়। সব মিলিয়ে ২৪০টি পাইল বসানোর কথা ছিল। ইস্পাতের এসব পাইল মাটির নিচে ৯৬ থেকে ১২৮ মিটার পর্যন্ত গভীরে বসানো হচ্ছে। তবে ১৪টি পিলারের পাইল বসানোর সময় মাটির স্তরে কাদামাটি পাওয়া যায়।

এই পিলারগুলোর নম্বর হলো ৬, ৭, ৮, ৯, ১০, ১১, ১২, ২৬, ২৭, ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ও ৩৫। আগের নকশা অনুযায়ী এই ১৪টি পিলারের পাইলের সংখ্যা ছিল ৮৪। সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু করে ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাউই (COWI) ইউকে লিমিটেড।

প্রতিষ্ঠানটির বিশেষজ্ঞরা মাটি পরীক্ষার প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন তথ্য যাচাই করেন। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, কাদামাটির পরই শক্ত মাটি না পাওয়ায় এখন পদ্মা সেতুর ১৪টি পিলারের মধ্যে পাইলের সংখ্যা একটি করে বাড়ানো হবে।

সোনালীনিউজ/আতা