বাজারে নকল ইলিশের ছড়াছড়ি!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৮, ০২:৩৩ পিএম

ঢাকা : রুপালি ইলিশের ঈর্ষণীয় কদর সর্বত্র; দামও বেশি। আর এই সুযোগে ইলিশের মতো দেখতে কয়েক ধরনের সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হচ্ছে ইলিশ নামেই। তবে দেখতে কাছাকাছি হলেও এসব মাছের স্বাদ বা গন্ধ কোনোটাই ইলিশের মতো নয়। ফলে ইলিশ ভেবে বেশি দামে এসব কিনে ঠকছেন ভোক্তারা। শুধু তাই নয়, শারীরিকভাবেও হচ্ছেন ক্ষতির শিকার। কেননা আমদানি করা এসব ‘নকল ইলিশে’ রয়েছে মানবস্বাস্থ্যের জন্য চরম ক্ষতিকর কিছু উপাদান।

অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, ইলিশের মতো দেখতে এসব মাছ হচ্ছে চাপিলা, সার্ডিন ও চৌক্কা। জেলেদের ভাষায় সার্ডিনকে টাকিয়া এবং চৌক্কাকে চৌক্কা ফ্যাইসা বা চটপটিও বলা হয়। দেশে এখন এসব মাছের ছড়াছড়ি। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায়ও এসব নকল ইলিশের হদিস মিলেছে। গবেষণা বলছে, চাপিলা, সার্ডিন ও চৌক্কা মাছ বিক্রি হয় ইলিশ নামে। সার্ডিন আকারে অনেকটা জাটকার মতো। আর চৌক্কা বেশ বড় হয়; লম্বায় অনেকটা ইলিশের কাছাকাছি।

জানা গেছে, সাগরে সারা বছরই কম-বেশি সার্ডিন ও চৌক্কা ধরা পড়ে। এখন বিদেশ থেকেও আমদানি হয় এসব মাছ। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের কাঁচাবাজার থেকে রাতের আঁধারে চলে যায় খুচরা বিক্রেতাদের কাছে; যারা বড় বড় পাতিলে করে এসব মাছ অলিগলি ঘুরে বিক্রি করে। এ ছাড়া মাওয়া ও দৌলতদিয়া ঘাটের পাশাপাশি ইলিশের জন্য বিখ্যাত চাঁদপুরের মেঘনার মোহনায়ও এসব মাছ যাত্রীদের কাছে কম দামে বিক্রি করা হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাওয়া ঘাটের এক বিক্রেতা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, দেশি ইলিশের তুলনায় এসব মাছের দাম অনেক কম। কিন্তু বিক্রি করি ইলিশের দামে। এখন এসব মাছ আমদানিও হচ্ছে। বাজারেও এসব মাছ ভরপুর। তিনি জানান, ঘাটে মাছ কিনতে আসা ক্রেতারা তাদের প্রধান টার্গেট। তাড়াহুড়া করে ইলিশের নামে এসব মাছ গছিয়ে দেওয়া হয়। ক্রেতারা কিছুটা কম দাম পেলেই বেশি করে কেনেন।

আসল ইলিশ চেনার উপায় জানতে চাইলে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের চাঁদপুরের ঊর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, এসব মাছ ইলিশের মতোই দেখতে। তবে কিছু পার্থক্য রয়েছে। এসব মাছ ইলিশের চেয়ে চওড়ায় কম এবং চোখের আকার বড়। চৌক্কার মাথা লম্বাটে ও সুঁচালো। সার্ডিনের মাথা বড় ও সামনের অংশ ভোঁতা। এসব মাছে ইলিশের গন্ধ নেই। একটু ভালো করে খেয়াল করলেই বোঝা যায়।

আমদানি করা নকল ইলিশে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকে বলে সম্প্রতি ধরা পড়েছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পর্যবেক্ষণে। সংস্থাটি বলছে, এসব মাছে উচ্চমাত্রায় ক্ষতিকর ক্যাডমিয়াম ও সিসা পাওয়া গেছে। গত ১ জানুয়ারি এক চিঠিতে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আসা সব মাছ বাধ্যতামূলকভাবে পরীক্ষা করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই