মরদেহ নিয়ে ঢাকায় নামলো বিমান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক  | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০১৮, ০৪:১৩ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকা: দেশ ছাড়ার সময়ে নিজ পায়ে ভর করে গিয়েছিলেন বিমান বন্দরে। হাসিমাখা মুখে তুলেছিলেন সেলফি। তা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কেউ গিয়েছিলেন হিমালয়ের কোলে বেড়াতে, কেউবা পেশাগত কাজে।

নেপাল থেকে তাদের ফেরারও কথা ছিল। কিন্তু ঠিক এক সপ্তাহ পর তারা নেপাল থেকে দেশের মাটিতে ফিরলেন কফিনের ভিতরে বন্দি হয়ে। অন্যর ঘাড়ে আশ্রয় নিয়েই স্বজনদের কাছে ফিরছেন তারা। নেপালে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ২৩ জনের মরদেহ নিয়ে সোমবার (১৯ মার্চ) বিকেল ৪টায় বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইট রাজধানীর হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দরে পৌঁছে।

সেখানে উপস্থিত আছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার বিবিপি, এনডিসি, এসিএসসি, জিডি(পি)।

এর আগে স্থানীয় সময় দুপুরে কাঠমান্ডু থেকে দেশের পথে উড়াল দিয়েছে বিমানবাহিনীর ওই কার্গো এয়ারক্র্যাফট।

এরপর শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দর থেকে তাদের মরদেহ ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে নেয়া হবে। সেখানেই তাদের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস২১১ গত ১২ মার্চ ঢাকা থেকে রওনা হয়েছিল চার ক্রুসহ ৭১জন আরোহী নিয়ে, সেদিনও ছিল সোমবার। কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হলে ২৬ জন বাংলাদেশিসহ ৪৯ আরোহীর মৃত্যু হয়।

নিহতদের মধ্যে ২৩ জনের মরদেহ শনাক্ত করার পর নেপালি কর্তৃপক্ষ কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃপক্ষের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে। সোমবার সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রবাসী বাংলাদেশি, বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ইউএস-বাংলার উপস্থিত কর্মকর্তারা তাদের জানাজায় অংশ নেন।

জানাজা শেষে ২৩টি কফিন পাঠানো হয় সেই ত্রিভুবন বিমানবন্দরে। সেখান থেকেই ঠিক এক সোমবার পর দেশের পথে তাদের ফিরতি যাত্রা শুরু হয় বেলা আড়াইটায়, বিমানবাহিনীর কার্গো ফ্লাইটে চড়ে। এই ২৩ জনের মধ্যে ইউএস-বাংলার পাইলট আবিদ সুলতান, কো-পাইলট পৃথুলা রশীদ এবং কেবিন ক্রু খাজা হোসেন মো. শফি ও শারমিন আক্তার নাবিলা রয়েছেন।

আর যাত্রীদের মধ্যে আছেন ফয়সাল আহমেদ, বিলকিস আরা, বেগম হুরুন নাহার বিলকিস বানু, আখতারা বেগম, নাজিয়া আফরিন চৌধুরী, রকিবুল হাসান, হাসান ইমাম, আঁখি মনি, মিনহাজ বিন নাসির, ফারুক হোসেন প্রিয়ক, তার মেয়ে প্রিয়ন্ময়ী তামারা, মতিউর রহমান, এস এম মাহমুদুর রহমান, তাহিরা তানভিন শশী রেজা, বেগম উম্মে সালমা, মো. নুরুজ্জামান, রফিক জামান, তার স্ত্রী সানজিদা হক বিপাশা, তাদের ছেলে অনিরুদ্ধ জামান।

সোমবার বেলা ৩টায় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামবে বিমানটি। সেখানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিহতদের মরদেহ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করবেন।

অপরদিকে সামরিক বাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আলমগীর কবির জানান, বিমানবন্দর থেকে কফিন নিয়ে যাওয়া হবে আর্মি স্টেডিয়ামে। সেখানে বিকাল ৪টায় হবে জানাজা। মরদেহ হস্তান্তরের জন্য স্বজনদের ওই সময়ই উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানাজা অনুষ্ঠানের সময়ে উপস্থিত থাকবেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই