চাঁদপুরের জনসভায় শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগে উন্নয়ন বিএনপিতে ধ্বংস

  • চাঁদপুর প্রতিনিধি | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ২, ২০১৮, ০৭:৪৭ পিএম

চাঁদপুর : আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (০১ এপ্রিল) বিকালে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এ কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অনিবার্য ধ্বংস। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আনে উন্নয়ন। আমরা চাই ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত। এ জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা থাকা দরকার।’

বিএনপি-জামায়াত জোটের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, যারা জাতির পিতার খুনিদের পুরস্কৃত করে, বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেয়, ভোট চুরি করে যারা তাদের পার্লামেন্টে বসায়, যারা যুদ্ধাপরাধী, সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের হাতে লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত দেশের পতাকা তুলে দেয়, তারা এ দেশের কোনো উন্নয়নে বিশ্বাস করে না। উন্নয়ন করেওনি কোনোদিন, ভবিষ্যতেও করবে না।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার আহ্বান, নৌকা মার্কা আপনাদের মার্কা। এ নৌকা মার্কা সব সময় মানুষকে উদ্ধার করে। নূহনবীর নৌকা মানবজাতি এবং পশুপাখি সব রক্ষা  করেছিল। এই নৌকায় ভোট দিয়ে আপনারা স্বাধীনতা পেয়েছেন, তাই আগামীতে যে নির্বাচন হবে সে নির্বাচনে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই।’

তিনি বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আইভী আপাসহ আমাদের অনেক নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। এই চাঁদপুরেরও আমাদের একজন কর্মী মারা গেছেন। বার বার এভাবে ওরা আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করেছে, বেঁচে গেছি। আমার লক্ষ্য একটাই, বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ। সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরো বলেন, ওদের লজ্জা শরম একটু কম। লজ্জা শরম কম এ জন্যই বলব যে, তারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। ওরা তো বাংলাদেশের সৃষ্টিতেই বিশ্বাস করে না। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে- এটাই যেন ওরা মেনে নিতে পারে না। আপনারা তুলনা করে দেখেন, ১৯৭৫-এর পর থেকে যারা ক্ষমতায় ছিল, ওই জিয়া বলেন, এরশাদ বলেন, খালেদা জিয়াই বলেন, বাংলাদেশের তো কোনো উন্নতি করতে পারেনি। চাঁদপুরের কী উন্নতিটা করেছে তারা? হ্যাঁ, তাদের একটা উন্নতি হয়েছে, দুর্নীতির উন্নতি। টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশের মাথা হেঁট হয়েছে বিশ্বদরবারে। নিজেরা লুটপাট করেছে, টাকা পাচার করেছে বিদেশে। লুটপাট করেই থেমে থাকেনি, এতিমের টাকা এসেছে বিদেশ থেকে, একটা টাকাও এতিমের হাতে যায়নি। টাকা লুটপাট করে খেয়েছে। সেই এতিমের টাকা চুরির দায়ে মামলায় সাজা ভোগ করছেন খালেদা জিয়া।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, ডা. দীপু মনি, ত্রাণমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীরউত্তম), সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একেএম এনামুল হক শামীম, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।

জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার আগে ইলেকট্রিক সুইচ টিপে জনসভা মঞ্চের পাশে স্থাপিত ২৩ প্রকল্পের উদ্বোধন ও ২৪ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে নতুন সাজে সাজানো হয় গোটা চাঁদপুর শহর ও তার আশপাশের সড়ক ও মহাসড়ক। রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে ছেয়ে ফেলা হয় পুরো শহর। আগামী সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ব্যানার-পোস্টারে ভরে ফেলেন রাস্তার মোড় ও পাড়া-মহল­া।

সোনালীনিউজ/এমটিআই