হাসপাতাল থেকে কারাগারে খালেদা জিয়া

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০১৮, ০১:৫২ পিএম

ঢাকা: রক্ত পরীক্ষা ও এক্স-রে শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে পুরনো ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 

শনিবার (৭ এপ্রিল) দুপুর প্রায় ২টার দিকে নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যাক্ত কারাগারটিতে নেয়া হয়। এর আগে মেডিকেল টিমের পরামর্শ অনুযায়ী বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারাগার থেকে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেয়া হয়। 

সেখানে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জে. আব্দুল্লাহ আল হারুনসহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসক তাকে রিসিভ করেন। সেখানে গাড়ি থেকে নেমে তিনি হেঁটেই হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে এক্সরে কক্ষ নং ১/এ-এর দিকে যান।

এদিকে, খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়িবহর শাহবাগ এলাকায় পৌঁছলে প্রায় কয়েক শতাধিক বিএনপি কর্মী স্লোগান দিতে থাকে। তাদেরকে ছত্রভঙ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পল্টা-ধাওয়া হয়। সেখান থেকে তিন থেকে চার জনকে পুলিশ আটক করে শাহবাগ থানায় নেয়।

এদিকে, মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল হাসান হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, সকাল পরীক্ষা শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিএসএমএমইউ-তে দুপুর ১টার দিকে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত দুই চিকিৎসক- নিউরো মেডিসিনের ওয়াহিদুজ্জামান ও মেডিসিনের এফ এম সিদ্দীকী তাকে দেখেছেন।

এর আগে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছেন তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের স্ত্রী ও দুই মেয়ে।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাঁচ বছরের সাজা হওয়ার পর থেকেই ৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়াকে পুরনো ঢাকার নাজিম উদ্দিন সড়কের পরিত্যাক্ত কারাগারে একমাত্র বন্দি হিসেবে রাখা হয়।

বিএসএমএমইউ-তে খালেদার সঙ্গে দেখা করতে অপেক্ষা করতে দেখা যায় তার ছেলের বউ ও দুই নাতনিকে

সেখানে থাকা অবস্থায় তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে। চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ না করায় তার পুরনো রোগগুলো বাড়তে থাকে। 

এ জন্য তার চিকিৎসায় একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, যার নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামান। বোর্ডে সদস্য রয়েছেন ডা. মনসুর হাবীব (নিউরোলজি), টিটু মিয়া (মেডিসিন) ও সোহেলী রহমান (ফিজিক্যাল মেডিসিন)।

এই মেডিকেল বোর্ড গত সপ্তাহে কারাগারে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে এসে জানিয়েছিল, তার অসুস্থতা গুরুতর নয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা আগে জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্র, চোখ ও হাঁটুর সমস্যা রয়েছে। সেজন্য তাকে নিয়মিত নানা রকম ওষুধ খেতে হয়।

শুক্রবার বিকালে দলীয় নেত্রীকে দেখে এসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডামের স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো নয়। তার আর্থরাইটিসের সমস্যা বেশ বেড়ে গেছে। তার হাঁটতেও কষ্ট হয়। যেটাকে কিছুটা স্নায়ুবিক সমস্যা বলা হয়, সেটাও দেখা দিয়েছে। সত্যিকার অর্থেই তিনি কিছুটা স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়েছেন।

এদিকে, খালেদা জিয়া রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে ইচ্ছুক বলে বৃহস্পতিবারই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেছিলেন, কারাগার থেকে বেরিয়ে আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই