জাতীয় শোক দিবস আজ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০১৮, ০৯:১৯ এএম

ঢাকা: জাতীয় শোক দিবস আজ। পনেরই আগস্ট; বাংলার ইতিহাসে কলঙ্কিত দিন। দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে ঘাতকেরা। মানুষের অধিকারের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করা বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান শেখ মুজিবকে রাতের অন্ধকারে হত্যা করে কুচক্রীরা।

নিরাপত্তার বাড়াবাড়ি ছিল না বাড়িটিতে। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন নিজের দেশের মানুষ কখনো তার ক্ষতি করবে না। রাষ্ট্রপতি হয়েও তাই বঙ্গভবনে না উঠে সাধারণ মধ্যবিত্তের মতো সপরিবারে থাকতেন ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতেই।

তবে উদারতাই কাল হলো। পঁচাত্তরের পঁনেরই আগস্ট ভোররাতে ৩২ নম্বরে আচমকা বৃষ্টির মতো গুলি। ঘুম ভাঙা চোখে নীচে নেমে এলেন বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল। ক্যাপ্টেন বজলুল হুদার স্টেনগানের গুলিতে ঝাঝরা হয়ে যায় তার বুক।

খুনী ল্যান্সার মহিউদ্দিন সঙ্গীদের নিয়ে ঢুকে পড়ে বাড়ির ভেতরে। দোতলায় ওঠার সিঁড়িতে সাহসের প্রতিমূর্তি হয়ে তাদের সামনে দাঁড়িয়ে শেখ মুজিব। অকুতোভয় অবিচল বঙ্গবন্ধুকে দেখে খুনী মহিউদ্দিন ভড়কে যায়। তাকে সরতে বলে স্টেনগানের গুলি চালায় বজলুল হুদা ও নূর চৌধুরী।

তখন ভোর পাঁচটা চল্লিশ সিঁড়িতেই লুটিয়ে পড়েন বঙ্গবন্ধু। বাংলার গৌরব-রবি গেলো অস্তাচলে। ঘাতকদের মিশন তখনো শেষ হয়নি। আজিজ পাশা আর মুসলেহ উদ্দীন শোবার ঘরে গিয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, শেখ জামাল, সদ্য বিবাহিতা রোজী জামাল, সুলতানা কামাল ও বঙ্গবন্ধুর ছোট ভাই শেখ নাসেরকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে।

ঘাতকের দল শিশু রাসেলকে বসিয়ে রেখেছিলো গেটের পাশে পাহারাদারের চৌকিতে। রাসেল তখন মায়ের কাছে যাবার জন্য কাঁদছিলো। তাকে মায়ের কাছে পাঠানোর কথা বলে দোতলায় নিয়ে গুলিতে বিদীর্ণ করা হয় বুক।

হামলার খবর পেয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল ৩২ নম্বরে পৌঁছানোর আগেই রাস্তায় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। একই সময়ে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির ধানমন্ডির বাসায় হামলা চালায়। সেখানে মারা যান মনি ও তার অন্তঃসত্বা স্ত্রী বেগম শামসুন্নেসা মণি। ঘাতকদের একটি গ্রুপ মিন্টোরোডের মন্ত্রী পাড়ায় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি ও তখনকার কৃষিমন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাদের বাসায় হামলা করে হত্যা করে সেরনিয়াবাদ ও তার ছেলে-মেয়েসহ ছয়জনকে।

সেদিন দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা আর তার ছোট বোন শেখ রেহানা।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন