অনিশ্চয়তা কাটছে না বিএনপি কাউন্সিলের

  • সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ১১, ২০১৬, ০৪:২৫ পিএম

সোনালীনিউজ ডেস্ক
অনিশ্চয়তা কাটছে না বিএনপি’র দলীয় কাউন্সিলের। সর্বশেষ কাউন্সিলের ৬ বছর ১ মাস পার হলেও জাতীয় এ নিয়ে বিএনপিতে কোনো আলোচনা নেই এই মুহূর্তে। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর পর কাউন্সিল করে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি গঠনের কথা রয়েছে। কিন্তু ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলের পর আরো দু’টি কাউন্সিলের মেয়াদও পার হয়েছে ২০১৫ সালের ৮ ডিসেম্বর।
সূতমতে, গত নভেম্বরের ২৫ তারিখ থেকে চলতি জানুয়ারির ৪ তারিখ পর্যন্ত দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে চারটি বৈঠকে পৌরসভা নির্বাচন, তৃণমূল পুনর্গঠন, সংগঠন শক্তিশালীকরণ ও ৫ জানুয়ারির কর্মসূচির ব্যাপারে আলোচনা করলেও জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে কোনো কথা বলেননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বিএনপির স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান ও যুগ্ম মহাসচিব পর্যায়ের অন্তত ৬ জন নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আবার কোনো কোনো নেতা এ ব্যাপারে কথা বলতেও রাজি হননি।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় জাতীয় কাউন্সিলের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, এ বিষয়ে আমি একটি কথাও বলব না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, কাউন্সিল তো আমাদের করতেই হবে। এ বছরের মধ্যেই কাউন্সিল করার চেষ্টা আমাদের থাকবে। তবে কাউন্সিল নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সর্বশেষ বৈঠকগুলোতেও জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে কোনো আলোচনা করেননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
তৃণমূল পুনর্গঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহম্মদ শাহজাহান বলেন, লন্ডন থেকে ফেরার পর ম্যাডামের সব বৈঠকেই আমি উপস্থিত ছিলাম। বৈঠকে জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তৃণমূল পুনর্গঠন, পৌর নির্বাচন ও ৫ জানুয়ারির সমাবেশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় কাউন্সিলের চিন্তা-ভাবনা হয়ত ম্যাডাম করছেন। কিন্তু এ বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে কোনো  আলোচনা হয়নি। আরো উপরের লেভেলে হয়েছে কি না, তা জানি না।
সূত্রমতে, পৌরসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে নয়াপল্টনে ‘শান্তিপূর্ণ’ জনসভার পর মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মী এবং জাতীয় কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তরুণ নেতারা মনে করছেন, রাজনীতিতে স্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করায় বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল সেরে ফেলার উৎকৃষ্ট সময় এখনই।
আগামী দুই মাসের মধ্যে তৃণমূলের কাউন্সিলগুলো শেষে করে চলতি শুষ্ক মৌসুমেই বৃহৎ পরিসরে জাতীয় কাউন্সিল করে ফেলতে পারত বিএনপি। পরিস্থিতি শান্ত থাকায় সরকারের কাছ থেকে ইতিবাচক সহযোগিতাও পেতে পারত রাজনীতিতে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়া দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি।
কিন্তু দলের কোনো পর্যায়ে এই মুহূর্তে জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা না থাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতৃত্বে আসার অপেক্ষায় থাকা তরুণ নেতারা কিছুটা হলেও হতাশ। তারা বলছেন, স্বস্তিদায়ক পরিবেশের মধ্যে কাউন্সিল সেরে ফেলতে পারলে সাংগঠনিকভাবে বিএনপি লাভবান হত।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, পৌরনির্বাচন ও ৫ জানুয়ারি সমাবেশের পর নেতা-কর্মীদের মধ্যে যে আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে, সেটিকে কাজে লাগিয়ে বিএনপির উচিত জাতীয় কাউন্সিল সেরে ফেলা। এতে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে লাভবান হবে।
খালেদা জিয়ার সর্বশেষ চারটি বৈঠকে উপস্থিত থাকা তরুণ এই নেতা জানান, ওই বৈঠক গুলোতে জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ইনহাউস আলোচনা হলে হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আমরা জাতীয় কাউন্সিল করে ফেলতে চাই। তবে কবে করব, সে ব্যাপারে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা