ভারত-পাকিস্তান মধ্যেকার যুদ্ধ কি অনিবার্য?

  • মোঃ শাহ জালাল | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০১৯, ১০:০৪ পিএম

ঢাকা : বিশ্ব যখন ভেনেজুয়েলা সংকট কিংবা ভিয়েতনামের হ্যানয়ে ট্রাম্প-কিম বৈঠক নিয়ে উদগ্রীব অবস্থায় ঠিক তখনই ভারত ও পাকিস্তান মধ্যেকার উত্তেজনা তুঙ্গে অবস্থান করছে এবং এর শঙ্কা উত্তরোত্তর বৃদ্ধিই পাচ্ছে। উপমহাদেশ পাকিস্তান ও ভারত  বিভক্ত হওয়ার প্রারম্ভিক অবস্থা থেকেই কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে সহিংসতা হয়েছে এবং তা চলমান।

কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দুটি যুদ্ধ ও অসংখ্য সহিংসতা ও খন্ডযুদ্ধ হয়েছে।এর নেপথ্যের কারণ কাশ্মীরকে উভয়ই নিজের বলে দাবি করে আসছে দেশভাগের পর থেকে। কাশ্মীর নিয়ে মোটাদাগে ১৯৪৭, ১৯৬৫, ১৯৭১, ১৯৮৪, ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধ সহ বিভিন্ন সময়ে এরকম আরও অনেক  সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছে দুই দেশ। ফলে এতে বলি হতে হয়েছে হাজার হাজার সেনা ও সাধারণ মানুষদের।
এখন অবধি থমকে নেই এই যুদ্ধ ও সহিংসতার আবাস।

গত ১৪ ই ফেব্রুয়ারী ভারতশাষিত কাশ্মীর পুলওয়ামায় ভারতের নিরপত্তা বাহীনীর ওপর হামলা চালায় কথিত পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মুহাম্মদ। এই হামলায় প্রাণ হারায় প্রায় ৪০ জন আধা সামরিক বাহিনী। পরবর্তীতে ভারত এই ব্যাপারে পাকিস্তানকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহবান জানায় কিন্তু এতে ভারতের  ডাকে পাকিস্তানের তেমন কোন সাড়া মেলেনি এমনকি প্রাথমিক পর্যায়ে তা অস্বীকারও করেন বটে!

এই জের ধরে ২৬ শে ফেব্রুয়ারী পাকিস্তানের সীমা অতিক্রম করে ভারতের বিমান বাহিনী। এই সময় পুলওয়ামা হামলার জন্য পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মুহাম্মদ সংঘঠনের ঘাঁটিতে হামলা চালায় ভারতের বিমান বাহিনীর একাংশ।এতে ৩ শতাধিক সদস্য সহ জইশ-ই-মুহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের শালকের প্রাণনাশ ঘটেছে বলে জানায় ভারতীয় বিমান বাহিনী। তবে তা বরাবরের মতই অস্বীকার করে আসছে পাকিস্থান, যদিও ভারত তৎক্ষনাৎ সেরকম কোন প্রমান দৃশ্যমান করতে পারেনি মিডিয়া তথা বিশ্ববাসীর কাছে।ফলে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে করে ভিন্ন আঙ্গিকে চরম উত্তেজনা শুরু হয়েছে।

এরপর ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই পরস্পরের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে। ভারতীয় ২টি যুদ্ধ বিমান ভূপাতিত এবং একজন পাইলট আটক করেছে বলে জানায় ইসলামাবাদ। অপরদিকে পাকিসস্তান একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত এবং নিজেদের একটি ধ্বংশ হয়েছে বলে নয়াদিল্লী স্বীকার করে যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে সন্দিহান ছিল বিষয়গুলো এবং তা সত্যিকারের রূপ পায় পাকিস্তান সরকার ভারতীয় বিমানের পাইলট আভিনন্দন ভার্থমানকে বন্দি করার নিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে। কাজেই প্রেক্ষাপট যতটা না কাশ্মীরকেন্দ্রিক ছিল তারচেয়ে বেশি এখন উভয় দেশের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে ধাক্কা দিচ্ছে এবং তা বেশ জোরেশোরেই যা কিনা এখন অনেকাংশেই যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে!!

সময়ের পরিক্রমায় ভারত শাষিত কাশ্মীরে প্রায়সই এরকম ঘটনা ঘটে। এর কারন কাশ্মীরের এ অংশের অনেকেই চায় না যে এলাকাটি ভারতের অধ্যোষিত শাসনে থাকুক। তারা চায় - হয় পূর্ণ স্বাধীনতা, অথবা পাকিস্তানের সাথে সংযুক্তি।ভারত-শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনসংখ্যার অনেকাংশেই মুসলিম। এটিই হচ্ছে ভারতের একমাত্র রাজ্য যেখানে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ।ফলে বিভিন্ন সময়ে ভারত ও পাকিস্থানের সহিংসতার মুখোমুখি হতে হয় যার সাথে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী সংঘঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ,লস্কর -ই- তৈয়বার যোগসূত্রতা পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে।

কাজেই বর্তমানের এই উত্তেজনা ভারত-পাকিস্থানকে কি যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিবে নাকি মোদি ও ইমরান নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষার্তে এর ইতি টানবে। এখন অবধি তা স্বচ্ছ নয় বিশ্ব দরবারে। উত্তেজনার শঙ্কা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে এবং পাল্টাপাল্টি হামলা হয়েই যাচ্ছে। কিন্তু ঘটনাচক্রে জইশ-ই-মোহাম্মদের হামলা এবং তার আগে বালোচিস্তানে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর সমর্থনে পাকিস্তানের ওপর হামলা- পরস্পরের বিরুদ্ধে এই যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ চলে এসেছে এবং দুপক্ষের মধ্যে ঐতিহাসিকভাবে যে বৈরি ভাব ও যুদ্ধের ইতিহাস রয়েছে,সেকারণে কোন একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে, বিশেষ করে ভারতীয় নির্বাচনের আগে কোন পক্ষই নিজেকে দুর্বল প্রমাণ করতে চাইবেন না।

প্রথম দিকে যদিও ঘটনা পর্ব কাশ্মীর কেন্দ্রিক ছিল পরে তা দুই দেশেরই অভ্যন্তরীণ রাজনীতি বিশেষ করে ভারতের আগাম নির্বাচনের ওপর বেশ প্রভাব পরবে বলে মনে হচ্ছে।কারন বিষয়টিকে আগামী নির্বাচনে মোদি জি কিছুটা হলেও তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল যদিও ভারত বলে আসছে "ভারত শাসিত কাশ্মীরে ভারতীয় আধা সামরিক বাহিনীর ওপর জইশ-ই-মুহাম্মদের সন্ত্রাসী গ্রুপটি যে হামলা চালিয়েছে ভারত তাঁর জবাব হিসেবে এই আক্রমণ চালিয়েছে। এটা ঠিক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের হামলা নয় বলে ভারত বোঝাতে চাইছে।

কিন্তু ভারতের এই হামলার পর যতোটা না মোদি জি ভারতবাসীর ওপর আশা জাগিয়েছে,হৃদয়ে সুখের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে যেটা কিনা আগামী লোকসভা নির্বাচনে মোদি জির টার্ম কার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পারত তার চেয়ে বরং ধুলিসাৎ হয়েছে তারঁ স্বপ্ন, পাকিস্তানি হামলায় দুটি বিমান ভূপাতিত হওয়ায়। বিশেষ করে আভিনন্দন ভার্থমান পাইলটের ধরা পরার মধ্য দিয়ে। যার কারনে মোদি জি কিছুটা ভাবমূর্তি সংকটে ভোগছে এবং তা ভারতবাসীর জনমনে ভয় ও হতাশার সৃষ্টি করছে।ফলে ইহা যদি মারাত্বক আকার ধারন করে কিম্বা ভারতের জন্য নেতিবাচক কিছু ফল নিয়ে আসে তাহলে মোদি জি কিছুটা হলেও প্রশ্নবিদ্ধ হবে জনগনের কাছে। ইতোমধ্যে নানান বিষয়ে মোদি জি এখন ভারতে প্রশ্নবিদ্ধ। তাঁকে "মোদি হটাও ভারত বাঁচাও" এরকম স্লোগান ও শুনতে হয়েছে বিরোধী শিবির তথা নিজের জোট সঙ্গীদের কাছ থেকে। যদিও মোদি সরকার এই ভোট ও নির্বাচন কেন্দ্রিক রাজনীতি শুরু করতে চেয়েছিল জইশ-ই-মুহাম্মদের হামলার পর থেকেই ফলে এর আগে থেকেই মোদি জির ঘটনাচক্রে কোনরকম যোগসূত্রতা ছিল বলে মনে হয় না।

অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শান্তভাবেই সকল পরিস্থিতি হ্যান্ডেল করছে ও করার চেষ্টা করছে যার ফলে কিছুটা হলেও মোদি জি থেকে ইমরান খান ভূয়সী প্রশংসা কুঁড়িয়ে নিচ্ছে বিশ্ব দরবারের কাছ থেকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে। তাছাড়াও ইমরান খান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হবার পর থেকে এই পর্যন্ত ইতিবাচক ভাবমূর্তি নিয়েই আছেন বিশ্ব রাজনীতিতে, সেরকম কোন নেতিবাচক ঘটনা ঘটেনি ইমরান খানের বিরুদ্ধে যেটা তারঁ কথিত সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা প্রশ্নবিদ্ধ হতো।  

যার ফলশ্রুতিতে ইমরান খান বলছে,"আমার প্রশ্ন হলো, যে অস্ত্র (পারমাণবিক) আমাদের দুই দেশের কাছেই রয়েছে, আমরা কি এমন একটি ভুল হিসাবের দায়দায়িত্ব সামলাতে পারবো? আমরা যদি এটা ঘটতে দেই, তাহলে এটা আমার অথবা নরেন্দ্র মোদি, কারো নিয়ন্ত্রণেই আর থাকবে না। সব বড় বড় যুদ্ধ ভুল হিসাবের কারণে হয়েছে। ফলে আমাদের এই ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকা চাই।কারন বলা যায় না কেউ একজন দাবার গুটির চালে ভুল করলেই যুদ্ধের ধামামা শুরু হয়ে যাবে। ইমরান খান ঘোষণা করেছেন, শান্তি আকাঙ্ক্ষার নিদর্শন হিসেবে তাদের হাতে আটক ভারতীয় পাইলটকে মুক্তি দেয়া হবে।

যুদ্ধ হবে কি হবে না এই সার্বিক পরিস্থিতি বুঝার জন্য, ভারত ও পাকিস্থানের ঘটনার পেছনে আন্তর্জাতিক মহলের অবস্থান কেমন সেটা জানা জরুরী। কিছু দিন আগে সৌদী আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এশিয়া সফর হিসেবে পাকিস্তান, ভারত ও চীনে এসেছিল। সালমান যখন পাকিস্তানে আসে বেশ উষ্ণভাবেই ইমরান খান ও সালমান একে অপরকে গ্রহন করে নেয় এবং সেই সাথে বেশ মোটা অঙ্কের টাকাও বিনোয়োগ করে যায় পাকিস্থানে। একই দৃশ্যপট পরিলক্ষিত হয় ভারত সরকার মোদির ক্ষেত্রেও। ফলে আন্তর্জাতিক মহলে  সৌদীআরবের যেই অবস্থা এবং কূটনীতিক সম্পর্ক দুই দেশের মধ্যে সমুন্নত রাখতে সৌদীআরব চাইবে ভারত- পাকিস্তান যুদ্ধ যাতে না হয়।

অন্যদিকে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও পাকিস্তানের উত্তেজনার এই মূহুর্তে শঙ্কট নিরসনে মধ্যস্ততা করবে বলে জানিয়েছে। আগে থেকেই আমেরিকার সাথে ভারতের সম্পর্ক মোটামুটি বেশ সহনশীল এবং তা ভালও বটে। অপরদিকে পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের টানাপোড়ন চললেও বর্তমানে পাকিস্তানের সাথে যুক্তরাষ্ট্র ভাল সম্পর্ক বজায় রাখতে চাচ্ছে এর কারন হলো এই যে আফগানিস্তানের তালেবানদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের যে নতুন সংহতি ঘটছে তা অনেকটা  পাকিস্তানের হাত ধরেই।ফলে যুক্তরাষ্ট্র একটা নিরপেক্ষ জায়গা থেকে তাদের মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার প্রচেষ্টা চালাবে বলে মনে হচ্ছে। জাতিসংঘ ও পরিস্থিতি  সামাল দেয়ার জন্য উভয় দেশকে সংযত থাকার জন্য তাগিদ দিয়ে যাচ্ছে যদি তা না হয় তাহলে ভেনেজুয়েলা সংকটের পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি উত্থাপিত হতে পারে।

অপরদিকে আরও এক পরাশক্তি চীন পাকিস্তানের সমর্থনে থাকলেও চীন চায় না কোন দেশে জঙ্গীদের উৎপরতা কিংবা উত্থাণ ঘটুক। তাছাড়া ভারত ও পাকিস্তান দুটিই পরমানু শক্তিধর রাষ্ট্র।গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামরিক শক্তির দিক থেকে বিশ্বের ১৩৬টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান চতুর্থ, অন্যদিকে পাকিস্তানের অবস্থান সতেরোতম।ফলে উভয়ের মধ্যে যুদ্ধ বেজে গেলে কার্যত কারও কোন লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে না, বরং এতে হাজার হাজার সেনা ও সাধারণ মানুষের মৃত্যু যেমন সদ্য ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ইমরানখানের  ভাবমূর্তি নষ্ট করবে তদ্রুপ নির্বাচনের আগে মোদির ততটাই ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। ফলে যেহেতু আন্তর্জাতিক অবস্থানের দিক থেকে ভারত-পাকিস্তান উভয়কে উসকে দেওয়ার মতো অবস্থান কারওরই নেই তাই ঘটনাচক্র যুদ্ধের দিকে ধাবিত হবে কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট আপত্তি আছে।

"ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দুজনই বারবার বলেছেন যে তাদের দেশের জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চেষ্টাই হল তাদের মূল উদ্দেশ্য। তাই  ইমরান খান ভারতের পাইলটকে মনে হয় না বেশি দিন আটকে রাখবে কিম্বা এটাকে কেন্দ্র করে রাজনীতির গুটি চালবে। কারন তাঁদের দু'জনের জন্যই তা নেতিবাচক ফল বয়ে নিয়ে আসবে।তাছাড়া দক্ষিন এশিয়াতেও তথা বিশ্বে ভয়াবহ একটা অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে এই পাক-ভারত যুদ্ধ।

কাজেই আপাতত দৃষ্টিতে ইঙ্গিত করা যাচ্ছে ভারত সরকার ও পাকিস্থান সরকার তাদের নিজেদের প্রয়োজনে ও তাদের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে যুদ্ধের দিকে অগ্রসর হবে না তবে এর উত্তেজনা ও ভয়াবহতা বেশ কিছুদিন বিদ্যমান থাকতে পারে। তাতেই মঙ্গল সবার! তা না হলে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকির মত ভয়াবহতা পোহাতে হবে ভারত ও পাকিস্থান দুই শিবিরকে। তারপরও যুদ্ধ অনাকাঙ্ক্ষিত কারনেই হয়ে যায়, যার মাশুল গুনতে হয় দেশকে বছরের পর বছর।

তাই যুদ্ধ নয় শান্তির বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক ভারত- পাকিস্থানের প্রতিটি পরতে পরতে!!

লেখক : শিক্ষার্থী,৩য় বর্ষ ২য় সেমিস্টার
ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়