রাব্বানী পদত্যাগ না করলে ব্যবস্থা, নুরের হুঁশিয়ারি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৪:২৬ পিএম

ঢাকা: ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অপসারিত হওয়া গোলাম রাব্বানীকে স্বেচ্ছায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন ভিপি নুরুল হক নুর। চাঁদাবাজিতে জড়িত থাকা, শৃংখ্লাভঙ্গসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে তিনি বলেছেন, রাব্বানীর উচিত ডাকসুর জিএস পদ থেকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা।

নুরুল হক নুর সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গোলাম রাব্বানী যেহেতু তার নিজ ছাত্র সংগঠন থেকে বাদ পড়েছেন চাঁদাবাজির অভিযোগ মাথায় নিয়ে, সেখানে তিনি কী করে ডাকসুর জিএস পদে থাকেন? যেখানে ছাত্রলীগই তাকে রাখেনি।’

রাব্বানীর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগ তো শুধু একটা ছাত্র সংগঠন। আর ডাকসু তো হলো সব ছাত্র সংগঠনের একটা প্ল্যাটফর্ম। সেখানে এমন বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ তো থাকতে পারেন না। তাহলে তো সারা দেশের সব ছাত্র সংগঠন বিতর্কিত হবে।

ডাকসু ভিপি বলেন, ‘ডাকসুর বর্তমান জিএসের বিরুদ্ধে এত বড় অভিযোগের পর আমরা আশা করেছিলাম, তিনি নিজের সম্মানের দিকে তাকিয়ে পদত্যাগ করবেন। অথচ তিনি এখনো সেটি করেননি। নৈতিক দিক থেকে হলেও তার পদত্যাগ করা দরকার ছিল। যিনি চাঁদাবাজির অভিযোগে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁর কাছ থেকে নৈতিকতা আশা করা যায় না। নৈতিকতা থাকলে তো এত বড় পদে থেকে এসব করতে পারতেন না।’

এদিকে, গোলাম রাব্বানী ডাকসু থেকে পদত্যাগ না করলে তার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে ভিপি নুর বলেন, আমি নিজেই এ বিষয় নিয়ে ডাকসু সভাপতি ও ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, গঠনতন্ত্র দেখে ব্যবস্থা নেবেন। দরকার হলে ডাকসুর সভা ডেকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

যদি ঢাবি ভিসি ব্যবস্থা না নেন তাহলে কী করবেন এমন প্রশ্নে ডাকসুর এই ভিপি বলেন, ‘আমরা চাই, গোলাম রাব্বানী নিজ থেকে ডাকসুর প্রতি সম্মান রেখে পদত্যাগ করুক। না হলে ডাকসুতে বিষয়টি আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তা ছাড়া ডাকসুর গঠনতন্ত্রেও আছে, সভাপতি চাইলে কারো বিরুদ্ধে অনুযোগ থাকলে তাঁকে বহিষ্কার করতে পারেন। তবে বহিষ্কৃত হওয়ার চেয়ে নিজে থেকে সরে গেলে সেটাই হবে সম্মানের।’

চাঁদাবাজির অভিযোগে রাব্বানীর সঙ্গে ছাত্রলীগের সভাপতি পদ থেকে অপসারিত রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট থেকে পদত্যাগ করেছেন। এর পর রাব্বানীর পদত্যাগের দাবি আরও জোরালো হয়।

 শোভনের পদত্যাগের উদাহরণ টেনে নুর বলেন, ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগী সভাপতি নিজের বিবেকের তাড়নায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানের দিকে তাকিয়ে সিনেট থেকে পদত্যাগ করেছেন। অথচ গোলাম রাব্বানী এখনও ডাকসু থেকে পদত্যাগ করেননি।

যদিও ভিপি নুরের দাবির বিষয়ে গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘হু ইজ নুরুল? নুরুল কে?’

তিনি আরো বলেন, পদত্যাগ কেন করব? পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না। ডাকসু বা সিনেট থেকে আমার পদত্যাগের দাবিটি খুবই খোঁড়া (লেইম)। এই দাবির ভিত্তি নেই বলে দাবি করেন রাব্বানী।

অন্যদিকে, শোভনের সিনেট সদস্যপদ থেকে পদত্যাগের বিষয়ে গোলাম রাব্বানী বলেন, শোভন ডাকসুতে নির্বাচিত ছিলেন না, ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে আমরা সম্মিলিতভাবে তাকে সিনেটে নিয়ে এসেছিলাম। নেত্রীর মনে কষ্ট দিয়ে তিনি অনুতপ্ত, তিনি নিজের জায়গা থেকে পদত্যাগ করেছেন। এর অর্থ কিন্তু এই নয় যে তিনি অন্যায় করেছেন। যেসব অভিযোগের কথা বলা হয়েছে, একটিও প্রমাণ হয়নি, হবেও না। কারণ আমরা এ ধরনের কিছু করিনি। পত্রপত্রিকায় যা এসেছে, কোনোটিরই দালিলিক তথ্যপ্রমাণ নেই।

 ‌সোনালীনিউজ/এমএএইচ