ধর্ম ব্যবসায়ীরা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২০, ০৪:০০ পিএম

ঢাকা: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, ধর্মকে ব্যবহার করে যারা দেশকে নিশ্চিত অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে চায়, সেসব ধর্ম ব্যবসায়ীদেরকে কঠোরভাবে দমন করতে হবে। তিনি বলেন, আজকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী বিরূপ মন্তব্য করছে। তারা জানেনা, ভাস্কর্য কি জিনিস; আর মূর্তি কি জিনিস। তারা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। 

শুক্রবার (২০ নভেম্বর) দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এক সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

বোচাগঞ্জ উপজেলার নয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দু’টি রাস্তা এবং ফুটকিবাড়ী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ১০টি বাড়ির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে এ সুধি সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ধর্ম ব্যবসায়ীরা নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের ইতিহাস জানতে দিতে চায়না। জাতির পিতার এসব ভাস্কর্য দেখে প্রজন্মের পর প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুকে জানবে। নতুন প্রজন্ম যখন এসব ভাস্কর্য দেখবে, তখন তারা বঙ্গবন্ধুকে জানবে। কিভাবে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে না জানলে তা জানা যাবেনা। এ ধর্ম ব্যবসায়িরা আমাদেরকে বাংলাদেশ সৃষ্টি সম্পর্কে জানতে দিতে চায়না। সেজন্য তারা ভাস্কর্যকে মূর্তি হিসেবে উপস্থাপন করে দেশে একটা অরাজকতা তৈরি করতে চায়। তারা জানেনা এ ব্যবসা বাংলাদেশে বন্ধ হয়ে গেছে। জঙ্গিবাদের ব্যবসা বাংলাদেশে বন্ধ হয়ে গেছে। 

তিনি বলেন, প্রকৃত ধর্ম অনুসরণ করেই বাংলাদেশ চলবে। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ পবিত্র কোরআন ও হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর নির্দেশনা অনুযায়ি চলবে। হিংসা, বিদ্বেষ ও সন্ত্রাসের জায়গা ইসলামে নেই। ইসলাম শান্তির ধর্ম। তিনি বলেন, অতীতেও ধর্মীয় শিক্ষাটাকে বিকৃত করে, ধর্মকে ব্যবহার করে মানুষকে বিপথে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের করোনার চিকিৎসা ইউরোপ-আমেরিকা থেকে ভালো। শুরুতে বাংলাদেশের করোনা চিকিৎসা নিয়ে শত সমালোচনা ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, ইউরোপ-আমেরিকা থেকে বাংলাদেশের করোনা চিকিৎসা ভালো। বাংলাদেশে করোনা রোগি সনাক্ত হচ্ছে, আক্রান্ত হচ্ছে; কিন্তু মৃত্যুর হার নিয়ন্ত্রণে আছে। এটা কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকার ডাক্তাররা পারছেনা। আজকে আমেরিকার নির্বাচনে বড় অস্ত্র হয়ে গেলো করোনা। আমাদের দেশে করোনা মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এখন এক ধরনের স্বাভাবিক অবস্থা চলে এসেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনার মধ্যেও আমাদের উন্নয়ন কর্মকান্ড থেমে নেই। বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক শক্তিশালি, আমরা আড়াই মাস মানুষের বাড়ি বাড়ি চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিয়েছি। ইউএনও, ডিসিসহ সরকারি কর্মকর্তারা  মানুষের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। যখন পরিবারের লোকজন কোন করোনার রোগীর পাশে যাচ্ছেন না, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। ডাক্তাররা রোগীদের চিকিৎসা করাচ্ছেন। এ চিত্র সমগ্র বাংলাদেশের। তিনি বলেন, করোনার সময়ে একদিনের জন্যও চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ হয়নি। খাদ্য সরবরাহ চালু ছিল। এ সাহস আমরা পেয়েছি প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার কাছ থেকে। তিনি সাহস না দিলে আমরা মুখ থুবড়ে পড়তাম।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তি সময় থেকে দেশে নীতিহীন শিক্ষা শুরু হয়। জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। ইতিহাস বিকৃত করেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাজনীতিকে কলুষিত করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছন্দা পালের সভাপতিত্বে সুধি সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন সেতাবগঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুস সবুর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফছার আলী, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুল মোতালেব ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা।

সোনালীনিউজ/এমএইচ