সরকারকে বিদায় করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই: ফখরুল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ২১, ২০২২, ০৭:০০ পিএম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ঢাকা : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের রাষ্ট্রকে রক্ষা করতে হলে, আমাদের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে আমাদের এই নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে বেরিয়ে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি এবং গণতন্ত্র যদি আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হয় তাহলে এই সরকারকে বিদায় করা ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই। আজকে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।

সোমবার (২১ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক কর্মী রাজনৈতিক নেতা কারো নিরাপত্তা নেই। তাই আসুন আমাদের দেশকে রক্ষা করার জন্য, মানুষকে রক্ষা করার জন্য, স্বাধীনতার যে আকাঙ্ক্ষা তা পূরণ করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হই। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আরেকটি যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে দিয়ে, পত্র-পত্রিকাগুলোকে নিষিদ্ধ করে দিয়ে, মানুষের কথা বলার ক্ষমতাকে রুদ্ধ করে দিয়ে তিনি একটি একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ওখানে আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা সমস্ত প্রত্যাশা ভূলুণ্ঠিত হয়ে গেছে। সেখান থেকে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা দিয়ে মুক্ত সমাজ নির্মাণের আশা-আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তুলেছিলেন। 

তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় নিয়ে আসলো অবৈধ কেয়ারটেকার নাম করে মইনুদ্দিন ও ফখরুদ্দিনের সরকার। তাদেরও লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ করা এবং গণতন্ত্রহীন একটি রাষ্ট্র তৈরি কর। তাই তারা করেছে। ২০০৮ সাল থেকে তাদের সাথে তাদের সাথে যোগসাজশ করে চক্রান্ত করে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রহীন করে ফেলেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের সমস্ত মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়ে একটি ছদ্দবেশী গণতন্ত্রের নাম করে তারা আবারও বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। এখন দেশে কোনো জবাবদিহিতা নেই। আর জবাবদিহিতা নেই বলেই যথেষ্ট দুর্নীতি করছে, চুরি করছে, ডাকাতি করছে, মানুষের অধিকার গুলোকে কেড়ে নিচ্ছে। সম্পদ বিদেশে পাচার করছে এবং গণ-মানুষের উপর অত্যাচার করছে। এভাবে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।

তিনি বলেন, মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কোন উন্নয়ন হচ্ছে না। আজকে যারা টিসিবির ট্রাকের পেছনে দাঁড়ায় ন্যায্য মূল্যে পণ্য ক্রয় করার জন্য তাদের কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। কৃষকের পণ্যের মূল্য বাড়েনি। তার কোন উন্নতি হয়নি। শ্রমিক ভাইয়ের মজুরি বাড়েনি। তার কোনো উন্নতি হয়নি। আজকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হকার তাদের কোনো উন্নতি হয়নি। আজকে উন্নয়ন হয়েছে যারা আওয়ামী লীগের সাথে ক্ষমতার ভাগাভাগি করে লুটপাট করছে। বাংলাদেশে এখন পুরোপুরিভাবে একটি লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। সুযোগ পেলেই লুটপাট করে। এই অবস্থার পরিবর্তন আমাদের করতে হবে।

বিএনপি বিদেশিদের কাছে ধরনা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি বিদেশিদের কাছে ধরনা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। পরবর্তীকালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রত্যেকবার এই দল ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভালোবাসা নিয়ে।

তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন আটক করে রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমাদের ছয়শর উপরে নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে। 

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান,  শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল সালাম, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই