ভাঙলো জামায়াত-বিএনপির জোট

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২২, ০১:১৬ পিএম

ঢাকা : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট কার্যকর নেই অনেকদিন ধরেই। গুরুত্ব না পেয়ে এরই মধ্যে জোট ছেড়ে চলে গেছেন অনেকে। ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতকে মূল্যায়ন না করার অভিযোগ অনেক পুরোনো।

সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল সভায় ২০ দলীয় জোটে জামায়াত আর নেই বলে জানিয়েছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

রোববার (২৮ আগস্ট) একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের  একটি ভিডিও ক্লিপ তাদের হাতে এসেছে।

ভার্চুয়াল ওই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা এতোদিন একটা জোটের সঙ্গে ছিলাম। ছিলাম বলে আপনারা হয়তো ভাবছেন কিছু হয়ে গেছে নাকি? আমি বলি হয়ে গেছে। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এটি একটি জোট ছিলো। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর জোট তার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে। সেদিন বাংলাদেশ পথ হারিয়ে ছিলো। সেটা আর ফিরে আসেনি।

তিনি বলেন, বছরের পর বছর পর এই ধরনের অকার্যকর জোট চলতে পারে না।

এই জোটের সঙ্গে বিভিন্ন দল যারা আছেন, বিশেষ করে বিএনপি এই জোটকে কার্যকর করার কোন চিন্তা নাই। বিষয়টা আমাদের কাছে স্পষ্ট দিবালোকের মতো এবং তারা আমাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন বাস্তবতা হচ্ছে নিজস্ব অবস্থান থেকে আল্লাহর উপর ভর করে পথ চলা। তবে হ্যাঁ জাতীয় স্বার্থে একই দাবিতে যুগপৎ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ।

বিএনপির সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, আমরা তাদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছি, এর সঙ্গে তারা ঐকমত্য পোষণ করেছে। তারা আর কোন জোট করবে না। এখন যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করবো। যদি আল্লাহ আমাদের তৌফিক দান করেন তাহলে আমাদের আগামী দিনগুলোতে কঠিন প্রস্তুতি নিতে হবে এবং অনেক বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।

দোয়া করেন, এসকল ত্যাগ যেনো আল্লাহর দরবারে মঙ্গলজনক হয়। এ ত্যাগের বিনিময়ে আল্লাহ পাক যেন আমাদের পবিত্র একটি দেশ দান করে। যে দেশটা কোরআনের আইনে পরিচালিত হবে।

২০ বছর আগে ১৯৯৯ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়তে গিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ চারদলীয় জোট গঠন হয়।

একসঙ্গে আন্দোলনের পর এই জোট ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য পায় এবং সরকার গঠন করে। শুরুর দিকে চারদলীয় জোটের শরিক ছিল এইচএম এরশাদের জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট ও জামায়াতে ইসলামী।

একপর্যায়ে এরশাদ চার দল ছেড়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটে গেলে জাতীয় পার্টির নেতা নাজিউর রহমান মঞ্জুর নেতৃত্বে দলটির একটি অংশ (যা পরে বিজেপি হয়) চার দলে থেকে যায়। চারদলীয় জোট পরে ১৮ দলীয় জোট এবং যা আরও পরে ২০-দলীয় জোটে রূপান্তরিত হয়।

অষ্টম জাতীয় সংসদ থেকে একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত প্রায় ২০ বছর একসঙ্গে আন্দোলন ও নির্বাচন করেছে বিএনপি-জামায়াত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা কারণে দল দুটির নীতিনির্ধারকদের মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে যাওয়ার পর এই দূরত্ব আরও বাড়ে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই