নৌকা আকৃতির মঞ্চ

আ.লীগের কাউন্সিল ঘিরে উৎসবের ঢেউ

  • মেহেদী হাসান, নিউজরুম এডিটর | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০১৬, ১০:৩২ পিএম

ঢাকা: এর আগে এতোটা উৎসবমুখরতা দেখা যায়নি। প্রস্তুতি নিয়ে এতোটা আয়োজনও চোখে পড়েনি। এবারের সবকিছুতেই কেমন উৎসবের আমেজ। কারো কোনো টেনশন নেই। সম্ভাব্য আশা ভঙ্গের আতঙ্কও নেই। সবারই ফুরফুরে মেজাজ।

আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিল ঘিরে এমনটিই দেখা যাচ্ছে। সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উৎসবমুখর সময় কাটাচ্ছেন। আর দলের শীর্ষ নেতারা এ সম্মেলনকে স্মরণকালের সবচেয়ে সুশৃঙ্খল ও বর্ণাঢ্য হিসেবে তুলে ধরার ঘোষণা দিয়েছেন।

দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য প্রভাবশালী রাজনীতিক ও সেতুমন্ত্রী নেতাকর্মীদের সম্মেলনের প্রস্তুতি বিষয়ে নির্দেশনা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগের ইতিহাস সংগ্রাম ও ঐতিহ্যের ইতিহাস। এর সঙ্গে প্রযুক্তির সমন্বয়ে ২০২১ সালকে টার্গেট করে আমরা এগিয়ে এসেছি। সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা আরো এগিয়ে যাব।’

দুদিনব্যাপী এ সম্মেলন আগামী ২২ থেকে ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ কাউন্সিলের আর মাত্র ১২ দিন বাকি। এবারের স্লোগান- ‘উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছি দুর্বার, এখন সময় বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার’। একে ধারণ করে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের ঐহিত্যবাহী রাজনৈতিক দলের এবারের কাউন্সিল। এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে পুরোদমে। 

রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব দিকে তৈরি করা হচ্ছে নৌকা আকৃতির বিশাল মঞ্চ। মঞ্চের দুই পাশে স্থান পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। অর্থাৎ মঞ্চ নির্মাণের সাজ-সজ্জায়ও রয়েছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। এ উপলক্ষ্যে সর্বত্রই বিরাজ করছে উৎসব, উল্লাস ও উচ্ছ্বাসের এক আনন্দঘন পরিবেশ। দলটির রাজনীতির স্মৃতিময় স্থান ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়াও উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীর ধানমণ্ডি ৩/এ অবস্থিত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়েও। আর এ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কাউন্সিলের সঙ্গে জড়িতরা। 

রোববার (৯ অক্টোবর) সকালে সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব দিকে ও পূর্ব-পশ্চিমমুখী প্যান্ডেল তৈরির কাজ চলছে। মাঠে হাজার হাজার বাঁশ এবং দড়ি ও কাপড়ের স্তূপ করা রয়েছে। ঝোপঝাড় কেটে পরিষ্কার করা হয়েছে। ভিআইপিদের গাড়ি চলাচলের সুবিধার্থে বাংলা একাডেমির বিপরীত দিকে উদ্যানের ভেতর নতুন করে একাধিক রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। 

দলীয় সূত্রমতে, প্যান্ডেলের নিচে ৪০ হাজার মানুষের ধারণক্ষমতার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে প্রতিটি জেলার জন্য পৃথক পৃথক বসার স্থান বরাদ্দ থাকবে। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা সম্মেলন প্রস্তুতির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা পালাক্রমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসছেন।
অন্যদিকে প্রতিদিন সকালে দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিভিন্ন উপকমিটির ধারাবাহিক বৈঠক চলছে। বৈঠক শেষে সংশ্লিষ্ট নেতারা নিজ নিজ উপকমিটির সর্বশেষ প্রস্তুতির কথা জানাচ্ছেন।

শুধু সকাল নয়, দুপুর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় প্রতিদিনই বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর আনাগোনায় সরগরম হয়ে থাকছে। ইতোমধ্যে কার্যালয়টির ভেতরে বাইরে সুসজ্জিত লাইটিং করা হয়েছে। যে কারণে নেতাকর্মীদের অনেকেই আড্ডাচ্ছলে সেলফিটাও সেরে নিচ্ছেন সম্মেলন স্মৃতির অংশ হিসেবে।

এর আগে শনিবার (৯ অক্টোবর) আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়সহ এর সামনে অবস্থিত প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টারে সম্মেলন প্রস্তুতির লক্ষ্যে গঠিত চারটি উপকমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উপকমিটিগুলো হলো- ঘোষণাপত্র উপকমিটি, মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপকমিটি, খাদ্য উপকমিটি এবং প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটি।

এ ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং দপ্তর উপকমিটির আহ্বায়ক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবার স্মরণকালের সবচেয়ে সুশৃঙ্খল ও বর্ণাঢ্য সম্মেলন হবে। এটা একটা টিম ওয়ার্ক। আমরা কেউ কারো প্রতিদ্বন্দ্বী নই। নেত্রীর ওপর আমাদের শতভাগ আস্থা রয়েছে। যা করার উনিই করবেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যেমন ঐক্যবদ্ধ, তেমনই প্রতিটি স্থানে আমাদের চেইন অব কমান্ড মেনে চলতে হবে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে কেউ অতি উৎসাহী হয়ে অফিসে এসে বিরক্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি করবেন না।’ তিনি বলেন, ‘অতি বাড়াবাড়ি ভালো নয়। সীমা লঙ্ঘন করবেন না।’ এই বলে অনাহূতদের সতর্ক করে দিয়েছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম