বিএনপির তৃণমূল বিভক্ত, সুযোগ নিচ্ছে জামায়াতসহ প্রতিদ্বন্দ্বীরা 

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২৫, ০৯:১৩ পিএম
ফাইল ছবি

ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির অধিকাংশ প্রার্থী মাঠে প্রচারণায় থাকলেও প্রাথমিক মনোনয়নকে কেন্দ্র করে দলটির তৃণমূল এখনো বিভক্ত। অনেক আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী ও মনোনয়নবঞ্চিতদের সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এতে বিএনপির রাজনৈতিক অবস্থান দুর্বল হচ্ছে, আর সুযোগ নিচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নির্বাচন যত এগোচ্ছে, বিএনপির বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন–সংক্রান্ত বিরোধও তত তীব্র হচ্ছে। প্রাথমিক মনোনয়ন পাওয়া নেতারা এলাকায় অর্থ ব্যয় করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে মনোনয়নবঞ্চিতরাও সম্ভাব্য পরিবর্তনের আশায় মাঠে সক্রিয়, প্রচুর অর্থ ব্যয় করছেন।

বঞ্চিত নেতাদের সমর্থকরা মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ, সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। একই সঙ্গে ঘোষিত সম্ভাব্য একক প্রার্থীর সমর্থকরাও পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে মাঠ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। সব মিলিয়ে এই বিভক্ত অবস্থান বিএনপির জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিরোধ মেটানোর চেষ্টা করছেন বিএনপি নেতারা। তবে দ্রুত সমাধান না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে তৃণমূলের অনেকেই মনে করছেন। একাধিক আসনে অভিযোগ উঠেছে-সম্ভাব্য প্রার্থীরা হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন না। তারা মনোনয়নবঞ্চিতদের সঙ্গে যোগাযোগ না করায় বিরোধ আরও বাড়ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু যুগান্তরকে বলেন, দল আগেই বলেছে, এটি চূড়ান্ত তালিকা নয়, সম্ভাব্য তালিকা। কোনো এলাকায় পরিবর্তন দরকার মনে হলে তা অবশ্যই করা হবে। সবকিছু বিশ্লেষণ করে তালিকা করা হয়েছে। মনোনয়ন ঘোষণার পর কিছু জায়গায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল, কারণ অনেক জায়গায় মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য দুই–তিনজন নেতা রয়েছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলে ক্ষোভ মিটিয়ে নিচ্ছি।

বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, আসনভিত্তিক কোন্দল, প্রার্থীদের শক্তি–দুর্বলতা ও বঞ্চিত নেতাদের অবস্থান যাচাই করতে একটি টিম কাজ করছে। তাদের রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।

ঘোষিত ২৩৬ আসনের মধ্যে প্রায় ৪০টি আসনে মনোনয়ন নিয়ে বিরোধ চলছে। অনেক বঞ্চিত নেতা দাবি করেছেন, স্থানীয় জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে ভুল করা হয়েছে এবং জরিপে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য ও বঞ্চিত উভয় পক্ষই জানিয়েছেন, তারা প্রতিদিন মাঠে ধানের শীষের প্রচারণায় প্রচুর অর্থ ও শ্রম ব্যয় করছেন। কিন্তু অনিশ্চয়তা দীর্ঘ হলে এই সুযোগটি নেবে প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতসহ অন্যান্য দল।

তৃণমূলের নেতারা বলছেন, দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি করা জরুরি, নয়তো নির্বাচনি মাঠে বিভাজনের সুবিধা তুলবে বিএনপির প্রতিপক্ষরা।

এসএইচ