প্রথমবারের মতো নারী কমিশনার পাচ্ছে ইসি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০১৭, ০৮:০১ পিএম

ঢাকা: এবারই প্রথম নারী কমিশনার নিয়োগ পেতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দেশের নির্বাচন কমিশনে এ পর্যন্ত ১১জন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও ২৩ জন কমিশনার নিয়োগ পেয়েছেন। এর মধ্যে কোনো নারী কমিশনার ছিলেন না।

এবার নতুন ইসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে সার্চ কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতিতে ন্যূনতম একজন নারীসহ প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোও একজন নারী কমিশনার নিয়োগের দাবি জানিয়েছে।

এবারের ইসি গঠনে প্রথমবারের মতো নারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ব্রতীর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন মুরশিদ। তার বাবা ছিলেন আভিজাত্য ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ এবং মা নুরজাহান মুরশিদ ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী।

এ ছাড়া আলোচনায় আছেন সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক অতিরিক্তি সচিব জেসমিন টুলি। জেসমিন টুলি গত ২৫ অক্টোবর অবসরে গেছেন। তিনি শুধু দেশেই নয়, দেশের বাইরে আফগানিস্তানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন নারীর নির্বাচনী দক্ষতা বিষয়ে তাকে নিয়ে ইউএনডিপি একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করেছে।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে নারীদেরও নিয়োগ দেয়া উচিত। পাঁচজনের মধ্যে একজনও হতে পারে, দুজনও হতে পারে। দেশে এখন অনেক নারী আছেন যারা সাবেক সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব ছিলেন। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ও জেলা জজ আছেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে ‘কনফিডেন্ট’ লোক দরকার যিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এখানে পিএইচডির দরকার নেই। দরকার তাকে যিনি নির্বাচনী আইনগুলো বুঝবেন ও কাজ করতে পারবেন। এতে যাদের প্রশাসনিক জ্ঞান ও মাঠে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তাদের নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।

সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন, নারীরা এখন প্রশাসন ও বিচার বিভাগে অনেক অবদান রাখছেন। আগামী পাঁচ সদস্যের ইসি গঠনে কমপক্ষে একজন নারী নিয়োগ দিতেই হবে। এ ছাড়া ২০০৮ সালে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চালুর পর দলগুলোর গঠনতন্ত্রে সংশোধনী এনে নারী সদস্যদের এক-তৃতীয়াংশ পদে রাখার শর্ত ২০২০ সালের মধ্যে পূরণের জন্য বলেছে ইসি। ফলে এবারের নতুন ইসি গঠনে একজন নারী কমিশনার নিয়োগ দেয়া অত্যন্ত জরুরি।

তবে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসি নারী কমিশনার বিষয়ে কোনো প্রস্তাব রাখেনি। এর আগে ড. এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন আগের ইসি নির্বাচনী আইন সংস্কার নিয়ে যে সংলাপের আয়োজন করেছিল, তাতে কমিশনারদের মধ্যে একজন নারী নিয়োগের বিষয়টি অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল। সংলাপে অংশগ্রহণকারী কোনো দলই ইসির ওই প্রস্তাবে আপত্তি জানায়নি। অবশ্য সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীতে সর্বোচ্চ পাঁচজন কমিশনার নিয়ে ইসি গঠনের কথা বলা হলেও নারীদের নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা হয়নি।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য যেসব নাম সুপারিশ করে তার মধ্যে শারমীন মুরশিদও ছিলেন। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আলোচনায় ছিলেন সাবেক তথ্য কমিশনার অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের নিয়োগ দেয়া হয়নি।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন