যে কারণে হারলো আওয়ামী লীগ

  • এম সুজন আকন, নিউজরুম এডিটর | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০১৭, ১১:২৬ এএম

কুমিল্লা: কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে সরকারবিরোধী দলের নেতা মনিরুল হক সাক্কুকেই রেখে দিয়েছেন কুমিল্লার ভোটাররা। জঙ্গি অভিযানের আতঙ্ক ছাপিয়ে মানুষের ব্যাপক সাড়ার মধ্যে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হয়।

দুটি পৌরসভা নিয়ে ২০১১ সালের জুলাই মাসে কুসিক গঠিত হওয়ার পর এটা ছিল দ্বিতীয় নির্বাচন। ২০১২ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার বাবা আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা আফজল খানকে হারিয়ে কুমিল্লার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি এই নেতা সাক্কু।

ফলে সংসদের বাইরে থাকা প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু কুসিকে প্রথম নগরপিতা হিসেবে বসতে যাচ্ছেন।

কুসিক নির্বাচনে যেসব কেন্দ্রে নৌকার ব্যাজধারীকর্মী বেশি দেখা গেছে সেখানেই ধানের শীষের ভোট বেশি পেয়েছে। এছাড়া চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ‘আফজাল বাহার দ্বন্দ্বের বলি’ হয়েছেন সীমা- এমন মন্তব্যও করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

তাদের মতে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য আ ক ম বাহারউদ্দিন বাহারের সঙ্গে সীমার বাবা অ্যাডভোকেট আফজাল পরিবারের প্রকাশ্য বিরোধ থাকায় তিনি নির্বাচনে সীমার পক্ষে তেমনভাবে কাজ করেননি।

অনেকে অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনের আগে যারা দিনে আফজাল ও সীমার পক্ষে ছিলেন, রাতে তারা সাক্কুর হয়ে কাজ করেছেন। আর ভোটের দিন তারা দিনে সীমার নৌকা প্রতীকের ব্যাজ পরে ধানের শীষে ভোট দিয়ে সাক্কুকে বিজয়ী করেছেন।

এদিকে কুসিক নির্বাচনে ১০৩ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০১টি কেন্দ্রে ৬৮ হাজার ৭৯৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা পেয়েছেন ৫৮ হাজার ২৬১ ভোট।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) রাত আটটার দিকে মনিরুল হক সাক্কুর কন্ট্রোলরুম সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এদিকে ১০৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে দুটি স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় শেষ হয়। ভোটকেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকেই ভোটারদের উপস্থিতি ছিল ভালো।

ফল ঘোষণাস্থল টাউন হলে সাক্কু জয়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের বলেছেন, ভোট পুরোপুরি সুষ্ঠু হলে তিনি আরও বড় ব্যবধানে জিততেন। তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে অনেক বেগ পেতে হয়েছে, অনেক হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়েছে আমাকে ও আমার কর্মী-সমর্থকদের’।

তবে ভোটে বিজয়ী করার জন্য নগরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে সাক্কু বলেন, ‘অতীতের মতো আমি নগরবাসীর পাশে থাকব’।

গত বারের নির্বাচনে মোট ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৭৩ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭২ জন ভোট দিয়েছিলেন। ভোটের হার ছিল ৭৫ দশমিক ০৬ শতাংশ।

এবার ভোটের হার তা ছাড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত সকালে নির্বাচন কর্মকর্তারা দিলেও গণনা শেষে তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভোটের হার ৬৫ শতাংশ ছাড়ায়নি। এবার ভোটার ছিলেন ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন। তার মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ৬৯০ জন। ভোটের হার ৬৩ দশমিক ৯২ শতাংশ।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন