বিরল আতিথেয়তায় হাসিনা, শঙ্কিত খালেদা

  • হৃদয় আজিজ, রিপোর্টার | সোনালী নিউজ
  • প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০১৭, ০৬:১৪ পিএম

ঢাকা: ভারতে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকছেন নয়া দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে। ভারতের রাষ্ট্রপতির ভবনে কোনো সরকার প্রধানের আতিথ্য পাওয়া বিরল ঘটনা। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে ঘটেছে সেই বিরল আতিথেয়তা।

শুধু কি তাই? রাষ্ট্রপতি ভবনের ফ্যামিলি কিচেনে শুধু রাষ্ট্রপতি ও তার নিকটাত্মীয়দের জন্যই রান্না করা হয়। এই প্রথম সেখানে শেখ হাসিনার খাওয়ার জন্য বেশ কিছুদিন আগে থেকেই চলে তোড়জোড়। প্রণব মুখার্জীর আতিথ্যে ওই ভবনে তিনদিন কাটাবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এজন্য তার আগমনের এক সপ্তাহ আগে থেকেই শুরু হয় তাকে আপ্যায়নের তোড়জোড়।

রাষ্ট্রপতি ভবনের ৩২ জন প্রধান রাঁধুনি (চিফ শেফ) বারবার আলোচনা করছেন নিজেদের মধ্যে কী কী রাখা যায় শেখ হাসিনার পাতে। এর কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে জেনে নেয়া হয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পছন্দ-অপছন্দ কী? পশ্চিমবঙ্গের প্রথম সারির পাচকদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সেরে নেয়া হয়।

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্য টাটকা ইলিশ না পাওয়ায় রাষ্ট্রপতির হেঁশেলের আফসোস যাচ্ছেই না। রকমারি মাছের বিভিন্ন পদের সঙ্গে রাখা হয় বিভিন্ন রকম মিষ্টান্ন। এর মধ্যে রাখা হয়েছে রাজভোগ, মুর্গ দরবারি, গোস্ত ইয়াখনি, রাইজিনা কোফতা, আলু বুখারার মতো উত্তর ভারতের বিশেষ খাবার।

সফরের দ্বিতীয় দিনে দুই দেশের মধ্যে ৩৬টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছেন দুই প্রধানমন্ত্রী। বাকি থেকে গেছে শুধু তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি। তাও হবে মোদী সরকারের আমলেই।

এই বিরল আতিথেয়তা আর তিন ডজন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে সরকার আর ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল যতটা উল্লসিত-উচ্ছ্বসিত ঠিক ততোটাই শঙ্কিত প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল বিএনপি।

শনিবার (৮ এপ্রিল) রাতে গুলশানের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

ভারতের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের বিষয়ে ইঙ্গিত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেছেন, ‘এই সরকার আজীবন ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন পূরণে কাজ করে যাচ্ছে। তারা দেশের কিছুই রাখেনি, সব বিক্রি করে দিয়েছে। যা বাকি ছিল সেটাও বিক্রি করে দিয়েছে।’

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘পৃথিবীতে কেউ দেশের সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে রক্ষা পায়নি।’

রোববার (৯ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ জাতীয় দল আয়োজিত ‘৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা চাই, দেশবিরোধী কোনো চুক্তি মানি না’ শীর্ষক মানববন্ধনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা ভারতের সাথে নতজানু হয়ে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সমঝোতার যে গোলামীর স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশের জনগণ সেটি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।’

প্রতিরক্ষাবিষয়ক চুক্তি প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘এই চুক্তিতে দেশের সম্মতি নেই। জনগণ এই চুক্তি বাস্তবায়ন হতে দেবে না। আমরা আমাদের প্রতিরক্ষা নিজেদের মতো সুন্দর করে সাজাব। ভারত বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভেতরে ঢুকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই এই চু্ক্তিটি করতে বাধ্য করেছে। গতকালের এই দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।’

সোনালীনিউজ/এন